ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

সংসদ নির্বাচনের আগেই প্রবাসীরা পাচ্ছেন এনআইডি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২২ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৮
সংসদ নির্বাচনের আগেই প্রবাসীরা পাচ্ছেন এনআইডি ইসি ভবন

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই দূতাবাসের মাধ্যমে প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই কার্যক্রম শুরু করার কথা ভাবছে সংস্থাটি।

নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দিকে যাওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে গঠিত কমিটি কিছুদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।

তার ভিত্তিতেই পরবর্তী কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে।  
সম্প্রতি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করার বিষয়ে বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। বৈঠকে অনেক রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেই কাজটি সম্পন্ন করার পরামর্শ দেন। কিন্তু আইনি বাধ্যবাধকতা ও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ থাকার কারণে নির্বাচন কমিশন নিজেদের কর্মকর্তাদের ছাড়া অন্য কাউকে দিয়ে এ কাজ না করানোর পক্ষেই অবস্থান নেয়।
 
নির্বাচন কমিশনের এনআইডি শাখার তথ্য মতে, প্রায় দুই কোটি বাংলাদেশি বিদেশে বসবাস করছেন। তাই যেসব দেশে বেশি নাগরিক রয়েছেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদেরই প্রথমে এনআইডি দেওয়া হবে।
 
সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা মধ্যপ্রাচ্যে রয়েছেন, তারাই আগে এ সুযোগটি পাচ্ছেন। তবে সবার আগে ভোটার হতে পারবেন সৌদি আরব প্রবাসীরা।
 
পুরো কর্মপন্থাটি বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের একটি করে লোকাল সার্ভার স্থাপন করা হবে। সেই সার্ভারের অধীনে কয়েকটি অস্থায়ী (টেম্পোরারি) সার্ভার স্থাপন করা হবে। লোকাল সার্ভারের সঙ্গে টেম্পোরারি সার্ভারের সংযোগ থাকবে। আর টেম্পোরারি সার্ভারের মাধ্যমেই নাগরিকদের তথ্য ইনপুট দেওয়া হবে।
 
বিদেশ থেকে সেই তথ্য দেশে এনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলায় পাঠানো হবে। সেই উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তদন্ত শেষে প্রতিবেদন পাঠাবেন। প্রতিবেদনে সত্যতা মিললেই কেবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হবেন।
 
বিদেশে দূতাবাসের মাধ্যমে নাগরিকদের ভোটার করার বিষয়ে কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। কার্যক্রম শুরু করার আগে এ বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
 
এক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের কীভাবে দূতাবাসে পাঠিয়ে কোন প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে, তা নিয়েই ভাবা হচ্ছে। প্রবাসীরা একেকজন একেক এলাকায় বসবাস করেন। সবারই কাজ রয়েছে। সেখান থেকে ছুটি নিয়ে তবেই না নির্দিষ্ট কেন্দ্রে এসে ভোটার হতে হবে। তাই তাদের কীভাবে ডেকে আনা যাবে, সেটিও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
 
এ বিষয়ে ইসির এনআইডি শাখার মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আশা করি, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই কাজ শুরু করতে পারবো। এজন্য আমরা প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিচ্ছি। বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি থাকায় সৌদি এবং মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীরাই এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
 
এটি করতে পারলে একটি ভালো কাজ হবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এনআইডি নিয়ে প্রবাসীদের ভোগান্তির শেষ নেই। কারণ তারা যে কম সময় নিয়ে দেশে আসেন, সেই সময়টা বিভিন্ন অফিসে দৌড়াতে দৌড়াতেই শেষ হয়ে যায়। ফলে এনআইডি’র জন্য সময় দেওয়াটা তাদের জন্য কঠিন। অন্যদিকে, দেশে প্রয়োজনীয় কাজটিও এনআইডি ছাড়া করতে পারেন না।
 
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমান বাংলানিউজক বলেন, প্রবাসীদের আগ্রহ এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে একটি চিঠি আসার কারণেই আমরা এই উদ্যোগটি নিয়েছি। কিন্তু এটি একটি টেকনিক্যাল বিষয়। প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র দূতাবাসের মাধ্যমে দেওয়া গেলেও বিদেশে তাদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থাটি করা প্রায় অসম্ভব। এছাড়া প্রবাসে বসেই ভোট দেওয়ার একটি ব্যবস্থা তো রয়েছেই। এক্ষেত্রে তারা চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমেই ডাকযোগে ভোট দিতে পারেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫১৯ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৮
ইইউডি/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।