ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

১৬১ ভোটেই ‘শঙ্কা’ আরিফের

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৮
১৬১ ভোটেই ‘শঙ্কা’ আরিফের বদর উদ্দিন কামরান ও আরিফুল হক চৌধুরী

সিলেট: সিলেট সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে প্রধান দুই প্রার্থীর চূড়ান্ত ভোট যুদ্ধ শনিবার (১১ আগস্ট)। মেয়রের চেয়ারে বসতে ধানের শীষের প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর প্রয়োজন ১৬১ ভোট। পক্ষান্তরে নৌকার বদর উদ্দিন কামরানকে পেতে হবে স্থগিত হওয়া ‍দুই কেন্দ্রের  ৪ হাজার ৭৮৭ ভোট। 

এরপরও হেরে যাওয়ার ভয়ে মাঠ ছাড়েননি কামরান। তার আত্মবিশ্বাসী মনোবলে অজানা ‘শঙ্কা’য় ভুগছেন আরিফুল হক চৌধুরী।



আরিফের নোঙর প্রায় জয়ের বন্দরে ফেলার পরও বিজয় সহজ করতে স্থগিত দুই কেন্দ্রের ভোটের কঠিন সমীকরণ খুঁজেছেন। করেছেন নানা হিসাব-নিকাশ। আরিফ নির্ভার না থেকে ওই দু’টি কেন্দ্রে মোট ভোটারের যারা মারা গেছেন, প্রবাসে থাকেন ও স্থানান্তরিত ভোটার আছেন তাদের তালিকা করে জমা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনে। মৃত ব্যক্তিরা ভোট না দিলে বিজয় সুনিশ্চিত বলেই মনে করেন আরিফুল হক চৌধুরী।

মেয়র পদে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের চেয়ে ভোটে এগিয়ে থাকা আরিফুল হক চৌধুরীর ফলাফলে স্থগিত কেন্দ্রের ভোট প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা।  
 
দু’টি কেন্দ্রের ভোটের হিসাব-নিকাশ একটু আগেভাগেই কষে নিয়েছেন আরিফ। ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অনিয়মের কারণে দু’টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে দেয় নির্বাচন কমিশন।

স্থগিত হওয়া এ দু’টি কেন্দ্রগুলো হলো- নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে গাজী বুরহান উদ্দিন ও গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র। গাজি বুরহান উদ্দিন কেন্দ্রে ২ হাজার ২২১ ভোট এবং হবিনন্দী কেন্দ্রে ২ হাজার ৫৬৬ ভোট।

নির্বাচনের ১৩৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টি কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফলে মেয়র পদে আরিফুল হক চৌধুরী ৯০ হাজার ৪৯৬ ভোট পেয়েছেন। আর বদর উদ্দিন আহমদ কামরান পেয়েছেন ৮৫ হজার ৮৭০ ভোট। বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান ৪ হাজার ৬২৬।
 
আর স্থগিত দু’টি কেন্দ্রে ভোটার ৪৭৮৭। সে অনুপাতে আরিফুর হক চৌধুরীর জয় নিশ্চিত করতে প্রয়োজন ১৬১ ভোট।

বিজয়ের অনেকটা কাছাকাছি থাকা সত্ত্বেও আরিফুল হক চৌধুরী এই নির্বাচনকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছেন। তার পক্ষে নেতাকর্মীরা গণসংযোগও করেছেন এই দু’টি কেন্দ্রে। খুঁটে খুঁটে জয়-পরাজয়ের হিসাব কষছেন তিনি। এছাড়া প্রকৃত ভোটারদের একটা তালিকা তৈরি করে রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিয়েছেন আরিফ।
 
রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া তালিকা অনুযায়ী স্থগিত হওয়া কেন্দ্র দু’টিতে মারা গেছেন, প্রবাসে আছেন এবং পেশাগত কারণে অন্যত্র আছেন এমন ভোটার ৩০১ জন দেখিয়ে নিজের বিজয় নিশ্চিত করতে দৌড়ঝাঁপ করেছেন নির্বাচন কমিশনেও।  
 
কমিশনে দেওয়া আরিফুল হক চৌধুরীর হিসাব অনুযায়ী, হবিনন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় টুলটিকর কেন্দ্রের ২ হাজার ৫৬৬ ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ হাজার ৩২৫ ও নারী ভোটার ১২৪১ জন। এরমধ্যে মারা গেছেন ৮০ জন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আছেন ৮০ জন। ওয়ার্ড ছেড়ে চলে গেছেন এমন ভোটার আরও ২৫ থেকে ৩০ জন। চাকরি থেকে বদলি হয়েছেন আরও ৩ জন। এসব ভোটারদের নাম ও নাম্বার উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনে তালিকা জমা দেন আরিফুল হক চৌধুরী।
 
একইভাবে হাজী বুরহান উদ্দিন ও গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ২২১। মারা যাওয়া, প্রবাসে অবস্থান মিলিয়ে প্রায় ২শ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগে বিরত থাকবেন বলে তালিকায় উল্লেখ করা হয়। বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, একমাত্র মৃত ব্যক্তিরা ভোট না দিলে তার বিজয় নিশ্চিত।
 
এদিকে স্থগিত কেন্দ্র দু’টির নির্বাচন ঘিরে বিএনপির তৎপরতা দেখা গেলেও নীরব ছিল আওয়ামী লীগ। অবশ্য কিছু কর্মী-সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে এ দুই কেন্দ্র এলাকায় প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। তার মতে, ভোটাররা চাইলে আমাকে বিজয়ী করতে পারেন।
 
নির্বাচন কমিশন গত ১ অক্টোবর স্থগিত হওয়া দু’টি কেন্দ্রের মেয়র পদ ছাড়াও ওই দু’টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড-৭ (১৯,২০ ও ২১) ওয়ার্ডে সম ভোট পাওয়া দুই নারী নারগিস সুলতানা (চশমা) ও নাজনীন আকতার কণার (জিপ গাড়ি) মধ্যে ১৪ কেন্দ্রে ১১ আগস্ট পুনঃভোটগ্রহণের দিন ধার্য করে। শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ১৬টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৮
এনইউ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।