ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

নির্বাচনের সুবাতাস, অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে: সিইসি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৮
নির্বাচনের সুবাতাস, অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে: সিইসি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বক্তব্য দেন সিইসি কে এম নূরুল হুদা। ছবি: মুজিবুর/বাংলানিউজ

ঢাকা: সমগ্র দেশে নির্বাচনের একটি সুবাতাস ও অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা। 

আগারগাঁওয়ের নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইএমএস), ক্যান্ডিডেট ইনফরমেশান ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিআইএমএস)এবং রেজাল্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্পেসিফিক  (আরএমএস) প্রশিক্ষণে বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) তিনি এ কথা জানান।

কেএম নূরুল হুদা বলেন, আমরা প্রত্যক্ষ করেছি যে- সমগ্র দেশে নির্বাচনের একটি সুবাতাস, আবহ ও একটি অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে।

মানুষের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত নির্বাচনমুখী আচরণ লক্ষ্য করা গেছে। নির্বাচনের সাথে সম্পৃক্ত প্রার্থীদের মধ্যে উৎসাহ দেখা যাচ্ছে এবং তাদের কর্মকাণ্ডের মধ্যে তা প্রতিফলিত হচ্ছে। তারা অনবরত সভা-মিছিল করে যাচ্ছেন ও প্রার্থীরা তাদের ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন।  

কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশব্যাপী নির্বাচনী পরিবেশ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এর মাধ্যমে একটা নতুন সরকার গঠন হবে ৩০ তারিখের পরে সেটার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেটার নিয়ামক হিসেবে আপনারা যে যার অবস্থান থেকে সঠিকভাবে দায়িত্বপালন করবেন।  

‘যেসব কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে- তাদের ওপর আমাদের আস্থা বেড়েছে। নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে এটি তাদের অবশ্যই সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আমরা প্রশিক্ষণের এমন কোনো স্তর বাদ রাখিনি যে, মাঠপর্যায়ে গিয়ে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের কোনো ঘাটতি থাকে। ’ 

সিইসি নূরুল হুদা বলেন, নতুন কতগুলো দিক নিয়ে এ বছর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ইভিএমের কথা বলা হয়েছে। অন্যান্য সহায়ক প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। আরেকটি নতুন যোগ হয়েছে- সেটি হলো, প্রার্থীদের যে এজেন্ট কেন্দ্রে থাকবেন সেই পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়া।  

‘আমরা তাদের প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেবো। তারা তাদের এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দেবে। এর উদ্দেশ্য ছিলো- এর মাধ্যমে নির্বাচন কার্যক্রমের যে নীতি, আচরণবিধি, নির্বাচন পরিচালনা বিধি, পোলিং বুথের ব্যবস্থাপনা, প্রশাসনিক অবস্থা এসব ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে পোলিং এজেন্টদের ধারণা দেওয়া। যাতে পোলিং এজেন্ট বুঝতে পারে তার দায়িত্ব কী!’ 

সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে সিইসি নূরুল হুদা বলেন, প্রায় একবছর ধরে প্রস্তুতি নিয়ে ধীরে ধীরে আমরা নির্বাচনের দিকে এগিয়েছি। ৩০ তারিখে সেটার শেষ দিন। সেদিন প্রার্থী, সমর্থক এবং ভোটাররা ভোট দেবেন।  

‘ভোট নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি আমানত। সেই আমানত, সেই ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ এবং বিতরণ করার জন্য আপনাদের হাতে চলে যাবে। সুতরাং এই বছরব্যাপী পরিশ্রম ও বছরব্যাপী প্রস্তুতির ফসল আপনাদের হাতে চলে যাবে। এই ফসল যাতে কোনো রকমের ভুল ত্রুটির মাধ্যমে প্রার্থীদের অবস্থান নির্ধারণে ব্যাঘাত না ঘটে- সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ’ 

তিনি বলেন, আপনাদের একটু ভুলের কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। সঠিকভাবে ফলাফল বিতরণ ও বিশ্লেষণ করা অত্যন্ত কঠিন। অত্যন্ত সতর্কার সঙ্গে সঠিকভাবে আপনাদের এই দায়িত্বপালন করতে হবে।  

‘কেন্দ্র থেকে প্রিজাইডিং অফিসারের মাধ্যমে আমরা নির্বাচনের ফলাফল পাবো। সুতরাং কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তাদের কাছ থেকে আপনারা ফলাফল নেবেন,’ যোগ করেন সিইসি।  

নির্বাচনের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে কে এম নূরুল হুদা বলেন, নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ হয়ে রিটার্নিং, সহকারী রিটার্নং, প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে চলে গেছে। এসব দেখভাল করার জন্য কতগুলো কমিটিও গঠন করা হয়েছে।  

‘এসর কমিটির একটি হচ্ছে- ইলেকটোরাল ইনকুয়ারি কমিটি। সারাদেশে ১২২টি ইনকুয়ারি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সারাদেশে নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে, আচরণবিধি ভঙ্গ হলে অথবা নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো আইন বিচ্যুতি কর্মকাণ্ড ঘটলে সেগুলো সংশোধন করবেন। তারা অনুসন্ধান করবেন ও ব্যবস্থা নেবেন।  জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন চার দিন। তারা মূলত কোনোটা আচরণবিধি ভঙ্গের কারণ তা প্রার্থী ও সমর্থকদের ধরিয়ে দিয়ে তা শুধরে দেবেন। যদি সেগুলো না শুনেন তাহলে বিচার করার তাদের সুযোগ থাকবে। অপরাধ আমলে নেওয়ার ক্ষমতা আছে তাদের হাতে। দায়িত্ব পালন করবেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরাও। ’ 

মাঠপর্যায়ে অভিযোগ জমা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে সিইসি বলেন, আমাদের যেটা অসুবিধা হয়, সেটি হলো অভিযোগগুলো নির্বাচন কমিশনের কাছে কেন্দ্র থেকে চলে আসে।  এই অভিযোগগুলো আমাদের কাছে না এসে, যদি তাৎক্ষণিকভাবে রিটার্নিং অফিসার এবং ইলেকটোরাল ইনকুয়ারি কমিটির কাছে গেলে তড়িৎগতিতে সমাধান পাবেন। আমাদের কাছে পাঠালে তাদের জন্য একটা বাড়তি অসুবিধা হয়। সেখানে এসব পাঠানোর জন্য অনুরোধ থাকবে সবার কাছে।

প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে ইটিআই মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুকসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৮
ইইউডি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।