ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

যশোর পৌরসভা নির্বাচনে ২৬ প্রার্থীর জামানত বাতিল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২১
যশোর পৌরসভা নির্বাচনে ২৬ প্রার্থীর জামানত বাতিল

যশোর: যশোর পৌরসভা নির্বাচনে জামানত বাতিল হয়েছে ২৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর। এদের মধ্যে সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন পাঁচজন।

বাকি ২১ জন সাধারণ ওয়ার্ডের প্রার্থী।

নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, যারা নির্বাচনে অংশ নেবেন, তাদের জামানত রক্ষা করতে কাস্টিং ভোটের আট ভাগের এক ভাগ পেতে হবে। যারা এ পরিমাণ ভোট না পাবেন, তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত যশোর পৌরসভা নির্বাচনে মোট ৬৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এদের মধ্যে মেয়র প্রার্থী তিনজন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর ১৩ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন ৪৭ জন। যদিও একজন মেয়র প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেন। একইসঙ্গে দু’জন কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে ৫৩ হাজার ৯৬ ভোট পড়ে। নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী মেয়র পদে জামানত রক্ষায় প্রত্যেকের কমপক্ষে ছয় হাজার ৫৯৮ ভোট পেতে হবে। সেই অনুযায়ী কারও জামানত বাতিল হচ্ছে না।

কাউন্সিলরদের মধ্যে সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের এক নম্বরে ভোট পড়ে ১৬ হাজার ৭৩১। সেই অনুযায়ী, জামানত রক্ষা করতে হলে প্রত্যেক প্রার্থীকে কমপক্ষে দু’হাজার ৯১ ভোট পেতে হবে। কিন্তু, এ ওয়ার্ডে পাঁচজন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী পর্যাপ্ত ভোট পাননি। এ কারণে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। যাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে, তারা হলেন, মোছা. সেলিনা খাতুন (জবা ফুল প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ৪২৪), রুমা আক্তার (অটোরিকশা প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ৯৭৬), রোকেয়া বেগম (টেলিফোন প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ৯৪২), সান-ই-শাকিলা আফরোজ (আনারস প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ১৭৯৭) ও সুফিয়া বেগম (বলপেন প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ১৪০৮)।

কাউন্সিলর পদে দুই নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে মোট ভোট পড়ে চার হাজার ৫০৬। বিধি অনুযায়ী, এ ওয়ার্ডের প্রার্থীদের কমপক্ষে ৫৬৪ ভোট পেতে হবে। কিন্তু চারজন কাউন্সিলর প্রার্থী বিধি অনুযায়ী ভোট না পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। তারা হলেন, অনুব্রত সাহা (ব্রিজ প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ১৫৫), তপন কুমার ঘোষ (টেবিল ল্যাম্প প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ৪৬৭), ওসমানুজ্জামান চৌধুরী (গাজর প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ২৩১) ও জাহিদুল ইসলাম (উটপাখি প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ৪৮০)।

তিন নম্বর ওয়ার্ডে ভোট পড়ে তিন হাজার ৬৭০। এ অনুযায়ী প্রত্যেক প্রার্থীকে কমপক্ষে ৪৫৯ ভোট পেলে জামানত রক্ষা পাওয়ার কথা। দু’জন প্রার্থী সমসংখ্যক ভোট না পাওয়ায় জামানত হারাচ্ছেন। তারা হলেন উম্মে মাকসুদা মাসু (টেবিল ল্যাম্প প্রতীক, ভোট পেয়েছেন ১৮) এবং ওমর ফারুক (ডালিম প্রতীকে ৪৩ ভোট পেয়েছেন)।

চার নম্বর ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ছয় হাজার ১৬৫। বিধি অনুযায়ী, জামানত বাঁচাতে এই ওয়ার্ডের প্রত্যেক প্রার্থীকে কমপক্ষে ৭৭১ ভোট পেতে হবে। কিন্তু মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন উটপাখি প্রতীকে ১২১ ভোট পাওয়ায় জামানত হারাবেন। তবে, মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন নির্বাচনের আগে এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মুস্তাফিজুর রহমান মুস্তাকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে যান।

পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ছয় হাজার ৪৭। এখানকার প্রার্থীরা কমপক্ষে ৭৫৬ ভোট পেলে জামানত রক্ষা পাবেন। চারজন প্রার্থী তা পাননি। এ কারণে জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে তাদের। যাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে তারা হলেন, মোকছেদুর রহমান ভুট্টো (ব্রিজ প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ৫৭৮), মিজানুর রহমান বাবলু (পানির বোতল প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ২৪৩) হাবিবুর রহমান চাকলাদার (টেবিল ল্যাম্প প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ২৯৫) ও শরীফ আব্দুল্লাহ আল মাসউদ (ডালিম প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ৩৮৭)।

ছয় নম্বর ওয়ার্ডে মোট কাস্টিং ভোটের সংখ্যা পাঁচ হাজার ২৫৩। বিধি অনুযায়ী এ ওয়ার্ডের প্রত্যেক প্রার্থীকে কমপক্ষে ৬৫৭ ভোট পেতে হবে। কিন্তু আশরাফুল হাসান (উটপাখি প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ৩৯৪) ও মো. আনিসুজ্জামান (ব্রিজ প্রতীকে মাত্র ৯৫ ভোট পেয়েছেন) পর্যাপ্ত ভোট না পাওয়ায় জামানত হারাচ্ছেন।

সাত নম্বর ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে সাত হাজার সাত। সেই অনুযায়ী জামানত বাঁচাতে প্রত্যেক প্রার্থীর কমপক্ষে ৮৭৬ ভোট করে পাওয়ার কথা। কিন্তু আবু শাহজালাল (ডালিম প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ৫২৮) ও শামসুদ্দিন বাবু (পাঞ্জাবি প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ৩৮৯) তা না পাওয়ায় জামানত হারাচ্ছেন।

আট নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচ হাজার ১৯৮ ভোট পড়ায় প্রার্থীর জামানত বাঁচাতে ভোট পেতে হবে কমপক্ষে ৬৫০। তা না পাওয়ায় জামানত হারাচ্ছে ওবাইদুল ইসলাম রাকিব (টেবিল ল্যাম্প প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ৫৯৭)।

নয় নম্বর ওয়ার্ডে ছয় হাজার ৬৯৫ পড়ায় জামানত বাঁচাতে একজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে কমপক্ষে ৮৩৭ ভোট পেতে হবে। কিন্তু এ ওয়ার্ডে সর্বাধিক ছয়জন প্রার্থী সেই পরিমাণ ভোট পাননি। ফলে, তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। যাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে তারা হলেন- খন্দকার মারুফ হুসাইন (গাজর প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ৫৯৪), আবু বক্কর সিদ্দিক (ব্লাকবোর্ড প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ২৬১), শেখ শহিদ (পাঞ্জাবি প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ১১০), শেখ নাসিম উদ্দিন পলাশ (ডালিম প্রতীক, প্রাপ্ত ভোট ৬১), শেখ ফেরদৌস ওয়াহিদ (টেবিল ল্যাম্প, প্রাপ্ত ভোট ৭৫৮) এবং স্বপন কুমার ধর (উটপাখি, প্রাপ্ত ভোট ১৯৭)।

রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, মেয়র পদে ৩০ হাজার টাকা এবং সংরক্ষিত ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে পাঁচ হাজার টাকা করে জামানত গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচনী ফলাফলের গেজেট প্রকাশের পর রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় ট্রাইব্যুনালে খোঁজ নেবে, কোনো মামলা হয়েছে কিনা। যদি মামলা না হয়ে থাকে তাহলে সেই প্রার্থীর জামানত ফেরত দেওয়া হবে। তবে, জামানত ফেরত দিতে একমাসের মতো সময় লাগতে পারে।

এ ব্যাপারে সহকারী রিটার্নিং অফিসার আব্দুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, গেজেট হওয়ার মাস খানেক পরে বিধি অনুযায়ী জামানতের টাকা ফেরত পেতে পারেন পরাজিত প্রার্থীরা।

বাংলাদেশ সময়: ০৭০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২১
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।