ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ইভিএমের মাস্টার ট্রেইনার হবেন কারিগরি স্কুল-কলেজের শিক্ষক  

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেপসন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২১
ইভিএমের মাস্টার ট্রেইনার হবেন কারিগরি স্কুল-কলেজের শিক্ষক  

ঢাকা: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে ভোটযন্ত্রটি পরিচালনায় দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে কারিগরি স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।


 
সূত্রগুলো জানায়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইসি সচিব স্বাক্ষরিত ওই বৈঠকের কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ও স্কুল-কলেজের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে দক্ষ শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার মধ্যেমে মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে প্রস্তুত করা হবে।
 
২০২০ সালের জুনেও কিছু শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেয় নির্বাচন কমিশন। তবে সেখানে কারিগরি শিক্ষকরা ছিলেন না। স্কুল-কলেজের আইসিটি শিক্ষকদের মধ্যে যারা দক্ষ, প্রতি উপজেলায় এমন ১০ জন করে মোট ৫ হাজার ১৯০ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।
 
ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, সে সময় যেটা হয়েছিল, সেটা খুব সীমিত আকারে। এছাড়া সেটাতে কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন শিক্ষকরাও ছিলেন না। বর্তমানে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সেটা ব্যাপক আকারে করা হবে।
 
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানান, সংসদ নির্বাচনের ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্রে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজারের মতো ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। ইভিএমে ভোট নিতে হলে যাদের প্রশিক্ষণ অবধারিতভাবে দিতে হবে। এক্ষেত্রে ইসির কর্মকর্তাদের দ্বারা এতো ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব নয়। তাই দেশের প্রতিটি অঞ্চলের পলিটেকনিক্যাল, ভোকেশনালের শিক্ষক এবং আইসিটি জ্ঞানসম্পন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে মাস্টার প্রশিক্ষক হিসেবে তৈরি করা হবে। তারাই পরবর্তীসময়ে অন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের স্থানীয়ভাবে প্রশিক্ষণ দেবেন।
 
২০১০ সালে দেশে যন্ত্রের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের প্রচলন শুরু করে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন কমিশন। সে সময় তারা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা করে প্রায় সাড়ে ১২শ ইভিএম তৈরি করে নেয়। ওই কমিশন এই যন্ত্রে ভোট নিয়ে সফলও হয়।
 
পরবর্তীকালে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিশন রাজশাহী সিটি নির্বাচনে ২০১৫ সালে ভোট নিতে গেলে একটি মেশিন বিকল হয়ে পড়ে। সে মেশিনটি পরে আর ঠিক করতে পারেনি কমিশন। এমনকী বিকল হওয়ার কারণও উদ্ধার করা যায়নি। ফলে ওই মেশিনগুলো নষ্ট করে নতুন করে আরও উন্নত প্রযুক্তি ইভিএম তৈরির করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় তারা।
 
কেএম নূরুল হুদার বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় ২ লাখ ২০ হাজার করে ইভিএম তৈরি করে নিচ্ছে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি থেকে। এজন্য হাতে নেওয়া হয়েছে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় নির্বাচন কমিশন প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার ইভিএম কিনেছে। চলতি বছর আরো ৩৪ হাজার মেশিন কেনার কথা রয়েছে।
 
ইভিএমের ভোটে আপাতদৃষ্টিতে ব্যালট ছিনতাই কিংবা সিলের সুযোগ না থাকলেও যন্ত্রটির প্রতি বিরোধীদলগুলোর আস্থা আনতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। যদিও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বারবার বলছেন, এটি আগের ইভিএমের চেয়ে অনেক উন্নতমানের। এই মেশিন হ্যাক করা যায় না। ভবিষ্যতে সব নির্বাচনেই ইভিএমের ব্যবহার বাড়ানো হবে।
 
নতুন ইভিএম মেশিনে ছয়টি সংসদীয় আসনের সাধারণ নির্বাচন, কয়েকটি উপ-নির্বাচন, বেশকিছু উপজেলা নির্বাচন ও কয়েকশ পৌরসভা নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের প্রায় হাজারখানেক নির্বাচন সম্পন্ন করেছে ইসি। বর্তমানে এটির ব্যবহার আরো বাড়িয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পুরোটাই ইভিএমে সম্পন্ন করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে সংস্থাটি।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২১
ইইউডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।