ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

কারচুপির অভিযোগে জান্নাতুলের ভোট বর্জন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২১
কারচুপির অভিযোগে জান্নাতুলের ভোট বর্জন কথা বলছেন জান্নাতুল ফেরদাউস। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌরসভার উপ-নির্বাচনের মেয়র পদে কারচুপির অভিযোগে এনে ভোট বর্জন করলেন পৌরসভার প্রয়াত মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবুর সহধর্মিনী জান্নাতুল ফেরদাউস।  

তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ‘নারিকেল গাছ’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন।

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে এই পৌরসভা উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়।

এরপরই অনেক কেন্দ্র থেকে নৌকা প্রতীক বাদে অন্য সব প্রার্থীদের এজেন্টকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে জান্নাতুল ফেরদাউস ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।  

এ  সময় তিনি সরকারি দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট লুটপাটেরও অভিযোগও করেন।

তিনি জানান, ভোট সুষ্ঠ হচ্ছে না, এক তরফা ভোট হচ্ছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকে তিনি হয়রানির শিকার হচ্ছেন। প্রতীক পাওয়ার পরে প্রতিটি ওয়ার্ডে ব্যানার, পোস্টার টানিয়ে ছিলেন। কিন্তু সেগুলো দিনের বেলা থাকলেও রাতে ছিড়ে ফেলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাসের ক্যাডার বাহিনী তার এসব ব্যানার পোস্টার ও ফেস্টুন রাতের আঁধারে ছিঁড়ে নদীতে ফেলে দিয়েছে।

তিনি বলেন, এই বিষয়গুলো নিয়ে পুলিশ, নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তারা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানাতে বলেন। এমনভাবে আমি হয়রানির মুখে পড়ি। কেউই সহাযোগিতা করেনি। মাইকে তার নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে বাধা দেওয়া হয়েছে। তার লোকজনকে মারধর করা হয়েছে এবং তাকে সপরিবারে মেরে ফেরার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাকে প্রতিটি কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে। গতরাতে কর্মীদের বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি করেছে।

জান্নাতুল ফেরদৌস আরও অভিযোগ করে বলেন, আজ সকালেই তার কর্মীরা প্রতিটি কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। প্রতিটি ওয়ার্ডের কেন্দ্রেই এজেন্ট পাঠিয়েছিলেন। ১ থেকে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ১৬টি কেন্দ্র। এসব কেন্দ্র কিন্তু তার কোনো এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরে তিনি সশরীরেও গেছেন। এ সময় ওখানকার স্থানীয় আওয়ামী লীগের ক্যাডার শাহিন, জামরুল, কমিশনারের লোকজন হামলা চালিয়েছেন। তার এজেন্টকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, সব জায়গায়ই ঘুরে দেখেছি। কিন্তু কোথাও ভোট সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে না, এক তরফা ভোট হচ্ছে। এই ভোট আমি মানি না, মানবো না। আমি এর বিচার চাই। আমি এই ভোট বয়কট করছি'।

তবে, এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন সহকারী রিটার্নিং অফিসার মশিউর রহমান।

তিনি বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে সব প্রার্থীরই এজেন্ট ছিল। তার কাছে কোনো অভিযোগ নেই। ভোট সুষ্ঠুভাবেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখন কেউ ভোট বর্জন করলে এটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।

এর আগে আজ সকাল ৮টায় গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। পৌরসভার ১৬টি কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ চলছে। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ৩২ হাজার ৯০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৬ হাজার ৭৫৬ ও নারী ভোটার ১৬ হাজার ১৪৯ জন।

গোদাগাড়ী পৌরসভা উপ-নির্বাচনে মোট চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই পৌরসভার মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামীলীগ মনোনীত অয়েজ উদ্দীন বিশ্বাস (নৌকা), সাবেক মেয়র জামায়াত নেতা আমিনুল ইসলাম (জগ), পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া রুলু (মোবাইল) ও প্রয়াত মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবুর স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদাউস (নারিকেল গাছ)।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২১
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।