ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

হাতিয়ার হরনী ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্র রামগতির চরগাজীতে!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫১ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২২
হাতিয়ার হরনী ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্র রামগতির চরগাজীতে! চরগাজীর টাংকি বাজার পুলিশ ক্যাম্প

লক্ষ্মীপুর: নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার হরনী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নে। আগামী ১৫ জুন হরনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে৷ এজন্য চরগাজী ইউনিয়নে চারটি ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা হয়।

 

কেন্দ্রগুলো হলো- চরগাজী ইউনিয়নের টাংকি বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর তেগাছিয়া বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফরেস্ট সেন্টার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মোল্লা গ্রাম নূরানী মাদরাসা।  

তবে লক্ষ্মীপুর আদালতে চরগাজী এবং হরনী ইউনিয়নের সীমানা জটিলতার মামলা থাকায় চরগাজীতে থাকা ভোট কেন্দ্রগুলো সরিয়ে নিতে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাওহীদুল ইসলাম সুমন গত ১৭ মে নির্বাচন কমিশনের সচিবের কাছে লিখিত আবেদন করেন।  

চেয়ারম্যান তাওহীদুল ইসলাম রোবাবর (২৯ মে) দুপুরে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, চরগাজী ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র স্থাপন করায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাই যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে ভোট কেন্দ্রগুলো সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।  

তিনি বলেন, আমার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর পরিপেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৬ মে) নোয়াখালী নির্বাচন কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন সরেজমিন ভোট কেন্দ্র এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তবে চরগাজীতে স্থাপিত কেন্দ্রের আশেপাশে হরনী ইউনিয়নের কোনো ভোটার নেই। নির্বাচন কর্মকর্তা সরেজমিন পরিদর্শনে সে বিষয়টি দেখে গেছেন।  

এছাড়া যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভোট কেন্দ্র দেওয়া হয়েছে, সেগুলো বেসরকারিভাবে রামগতি থেকে পরিচালিত হয় বলে জানান চেয়ারম্যান তাওহীদুল ইসলাম।  

চেয়ারম্যান তাওহীদুল ইসলামের করা আবেদন ও চরগাজী ইউনিয়নের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের রামগতির উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের তিনটি মৌজা নিয়ে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সঙ্গে সীমানা বিরোধ রয়েছে। এনিয়ে লক্ষ্মীপুর সাব জজ আদালতে মামলা (৭৩৯/২১) চলমান। মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালত বিরোধীয় এলাকায় স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত চরগাজী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ওই এলাকার ভোট গ্রহণের জন্য অস্থায়ী তাবু টাঙিয়ে কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। কিন্তু আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠেয় হাতিয়ার হরনী ইউনিয়নের নির্বাচনের জন্য বিরোধীয় এলাকায় চারটি ভোট কেন্দ্র স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।  

চরগাজী ইউনিয়নের বাসিন্দারা বলেন, মোহাম্মদপুর তেগাছিয়া বাজার ও টাংকি বাজারে দু’টি পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। এগুলো লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। কিন্তু লক্ষ্মীপুরের আওতাধীন এ দু’টি পুলিশ ক্যাম্পের প্রায় ২০০ গজের পাশেই নোয়াখালীর হরনী ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্র দেওয়া হয়েছে৷ তারা কেন্দ্রগুলো সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান।  

চেয়ারম্যান তাওহীদুল ইসলান তার আবেদনে উল্লেখ করেন, গেজেট অনুযায়ী বিরোধীয় চরলক্ষী, চরদরবেশ, দক্ষিণ টুমচর মৌজার অধিকাংশই ডিয়ারা এমআরআর ও হাল রিভিশনে রামগতির চরগাজীতে রেকর্ডভুক্ত। এসব এলাকার ৯৯ শতাংশ ভোটার চরগাজী ইউনিয়নের বাসিন্দা। এক সময় সিডিএসপি জমি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে রামগতির কিছু সংখ্যক লোককে হরনী ইউনিয়নের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু পরে তারা রামগতি উপজেলা নির্বাচন অফিসে এসে চরগাজীর ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। বর্তমানে প্রায় সাত-আটশ’ নারী-পুরুষ চরগাজীর ভোটার হতে নির্বাচন অফিসে আবেদন করেছেন।  

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শান্তুনু চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, দুই জেলার সীমানা জটিলতার মামলা চলমান রয়েছে। নোয়াখালীর হরনী ভোট কেন্দ্র স্থাপন নিয়ে রামগতির চরগাজী ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছেন বলে শুনেছি। বিষয়টি তিনি আমাকেও জানিয়েছেন। নোয়াখালী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এলাকাটি পরিদর্শন করেছেন। তাদের পরিদর্শন রিপোর্টের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন পদক্ষেপ নেবেন।  

এ ব্যাপারে নোয়াখালী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, ভোট কেন্দ্রগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়েছে। ওই কেন্দ্রগুলো নিয়ে সরকারি গেজেট রয়েছে। চরগাজী থেকে হরনীর ভোট কেন্দ্র সরবে কি না- তা এখনো বলা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৯ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২২
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।