ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আইন সংশোধনের প্রস্তাব দিতে পারে ইসি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৭ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২২
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আইন সংশোধনের প্রস্তাব দিতে পারে ইসি

ঢাকা: নির্বাচনকালীন সরকারের চরিত্র, গঠন কেমন হবে তা নিয়ে সরকারের কাছে সংবিধান কিংবা আইন পরিবর্তনের প্রস্তাব করতে পারে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কেননা, সংবিধান কিংবা আইন পাথরে খোদাই করে লেখা নয়।

সোমবার (১৩ জুন) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে এমন মন্তব্য করেন।

ইসির সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয় তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাই যেটা চাই সবাই চায়, দেশবাসী যেটা চায়- আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক হয়। এ বিষয়গুলো, একটা লেবেল প্লেয়িং ফিল্ডের মাধ্যমে যেন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেই বিষয়ে কতগুলো প্রস্তাব করেছি। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- নির্বাচনকালীন সরকার তার চরিত্র কী হবে, আচরণ কী হবে, গঠন কী রকম হবে, এ ধরণের বিষয়েগুলো সম্পর্কে আমরা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ইসিকে তুলে দেইনি। আমরা বলেছি- যেহেতু সবার প্রত্যাশা বা উদ্বেগের জায়গা, সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নির্বাচন কমিশন যেভাবে মনে করেন যে একটা নির্বাচনকালীন সরকারের আচরণ কী রকম হওয়ার উচিত, তাদের চিন্তা ভাবনা প্রসূত পরামর্শ সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দিতে পারে। প্রয়োজনীয় যাবতীয় আইন সংস্কার করার প্রস্তাব করতে পারে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমরা বলেছি লেভেল প্লেয়িং ফ্লিড নিশ্চিত করতে হবে। এখন যে নিয়ন্ত্রণ, এমপি বা মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করতে পারেন, এতে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হয় বলে অনেকের ধারণা এবং তা বাস্তব সম্মত। কাজেই এটাকে পরিবর্তন করার সুযোগ তারা নেবেন কিনা, প্রস্তাব করবেন কিনা, সেটা বিবেচনা করে দেখতে পারে। তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা যেন সৃষ্টি না হয়, বিশেষ করে নির্বাচনে গণমাধ্যম এবং দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকরা যেন অবাধে ভোটের তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন, সেই কথা বলেছি আমরা। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে আইন সংশোধনের কথাও বলেছি। এছাড়া ভোটের দিন ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেওয়া বা বন্ধ করে দেওয়া যেন না হয় আগের মতো, কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল যেন অনতিবিলম্বে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়, সেই কথা বলেছি।

টিআইবির প্রধান নির্বাহী বলেন, আমরা চাই সার্বিকভাবে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন যাতে হয়। এ লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন যেই প্রক্রিয়া (বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সংলাপ) শুরু করেছেন, তারা সবার সঙ্গে আলোচনা করবেন, দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করবেন। যেহেতু আলোচনা করবেন, আমি বলেছি যে সরকারের আচরণ কি হবে, তা যেন স্থির করতে পারেন।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়েও কথা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ যন্ত্র ব্যবহারের কারিগরি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে কোনো ফল্ট যেন না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া সবার কাছে যেন গ্রহণযোগ্যতা পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

কমিশন সংবিধান বা আইন পরিবর্তনের কোনো প্রস্তাব করতে পারেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা অবশ্যই পারেন। পারবেন না এমন কোনো কথা নেই। সুষ্ঠু নির্বাচনের অর্পিত যে দায়িত্ব, নিজস্ব বিশ্লেষণে যদি তারা মনে করেন, কোথাও কোনো ক্ষেত্রে আইনি সংস্কার প্রয়োজন। কোনো আইন কিন্তু পাথরে খোদাই করে লেখা নয়। সংবিধান কিন্তু পাথবে খোদাই করে লেখা নয়। সংবিধান ও আইন এখন যে অবস্থায় এসেছে সেটা কিন্তু পরিবর্তনের মাধ্যমেই এসেছে।

তিনি আরও বলেন, ইসির যদি মনে হয় সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আইনের পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, তাহলে সেটা তারা করতে পারেন। এখন তারা করবেন কিনা সেটা পরের বিষয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২২
ইইউডি/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।