পল্লীগীতি, মুর্শিদি, ভাটিয়ালি, দেহতত্ত্ব, ইসলামি ইত্যাদি গানের শিল্পী হিসেবে আজও অপ্রতিদ্বন্দ্বী তিনি। বাংলা লোকসংগীতকে যারা সার্বজনীনভাবে প্রতিষ্ঠিত করে তুলেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম তিনি।
রোববার (২৭ জুলাই) প্রয়াত এই শিল্পীর ৯৪ তম জন্মদিন আজ। দেশের লোকসঙ্গীতের এই প্রাণ পুরুষ ১৯৩১ সালের আজকের এই দিনে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার তালিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
জানা গেছে, আবদুল আলীমের জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা ও সংগীত সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৬টায় এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এর আয়োজক আবদুল আলীম ফাউন্ডেশন।
বাল্যকাল থেকেই সঙ্গীত অনুরাগী ছিলেন আবদুল আলীম। মাত্র তেরো বছর বয়সে আবদুল আলীমের প্রথম গানের রেকর্ড হয়। পরবর্তীতে আবদুল আলীম কলকাতায় আব্বাসউদ্দিন ও কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়ে গান করেছেন। দেশ ভাগের পর ঢাকায় চলে আসেন তিনি।
টেলিভিশন সেন্টার চালু হলে সেখানে তিনি নিয়মিত সঙ্গীত পরিবেশন করতেন। পেশাগত জীবনে ঢাকা সঙ্গীত কলেজের লোকগীতি বিভাগের অধ্যাপকও ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’সহ চলচ্চিত্রেও গান করেছেন আবদুল আলীম। তার গান করা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো ‘লালন ফকির’।
আবদুল আলীমের গানের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। এ ছাড়া স্টুডিও রেকর্ডেও রয়েছে অনেক গান। এর উল্লেখযোগ্য- ‘সর্বনাশা পদ্মা নদী’, ‘হলুদিয়া পাখী’, ‘যার আপন খবর আপনার হয় না’, ‘নাইয়া রে নায়ের বাদাম তুইলা’, ‘মেঘনার কুলে ঘর বাঁধিলাম’, ‘এই যে দুনিয়া’, ‘দোল দোল দুলনি’, ‘দুয়ারে আইসাছে পালকি’, ‘কেনবা তারে সঁপে দিলাম দেহ মন প্রাণ’, ‘মনে বড় আশা ছিল যাবো মদিনায়’, ‘কেহ করে বেচা কেনা কেহ কান্দে’, ‘সব সখিরে পার করিতে নেব আনা আনা’ ইত্যাদি।
সঙ্গীতে বিশেষ অবদানের জন্য আবদুল আলীম বেশ কয়েকটি জাতীয় পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার সম্মাননা পেয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- একুশে পদক, পূর্বাণী চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং বাচসাস পুরস্কার, পাকিস্তান মিউজিক কনফারেন্সে পাঁচটি স্বর্ণ পদক।
১৯৭৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান গুণী এ শিল্পী। আজ আবদুল আলীম নেই কিন্তু চির উজ্জ্বল হয়ে আছে তার কণ্ঠসৃত অসংখ্য জনপ্রিয় গান। এসব গানের মাঝে তিনি সঙ্গীতপ্রেমী মানুষের মাঝে বেঁচে থাকবেন যুগ যুগান্তর।
এনএটি