কিংবদন্তি নায়ক, প্রযোজক ও পরিচালক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা। এখন আর ক্যামেরার সামনে নিয়মিত দেখা যায় না তাকে।
তবে চলচ্চিত্রের প্রতি টান, সহকর্মীদের প্রতি আবেগ আর দেশবাসীর প্রতি দায়িত্ববোধ এখনো অনুভব করেন তিনি। সেই টান থেকেই সহকর্মী ও দেশবাসীর উদ্দেশে ছুঁড়ে দিলেন হৃদয়ছোঁয়া কথা। তিনি বলেন, ‘যদি কোনো ভুল-ত্রুটি কিংবা অন্যায় করে থাকি, আজ এই মুহূর্তে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ’
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিএফডিসিতে প্রয়াত চলচ্চিত্রশিল্পীদের স্মরণে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে হাজির হয়েছিলেন তিনি। নতুন-পুরাতন শিল্পীদের ভিড়ে সেখানে আবেগাপ্লুত হয়ে সোহেল রানা।
এই অভিনেতা বলেন, ‘কে কখন চলে যাব, শিওর না। তাই এই সুযোগে আমার সঙ্গে যারা কাজ করেছেন বা ভবিষ্যতে করবেন, আমি যদি কারও প্রতি কোনো অন্যায় বা ভুল করে থাকি, আমি সবার কাছে ক্ষমা চাইছি। কারণ আমি জানি না, কবে চলে যাব। ’
অভিনেতা সোহেল রানা এখন আর নিয়মিত পর্দায় আসেন না। কিন্তু তার চোখে মুখে, কথায় আর কণ্ঠে স্পষ্ট হয়ে ওঠে জীবনের অনিত্য নিয়ে উপলব্ধি। তিনি বিনীতভাবে বললেন, ‘আমি ভুল করেছি, ভুল অনেক করেছি। তাই সবার কাছে ক্ষমা চাইছি। যেন মৃত্যুর পর মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে নীতি ও আদর্শ নিয়ে দাঁড়াতে পারি। ’
বলে রাখা যায়, সোহেল রানার পারিবারিক নাম মাসুদ পারভেজ। চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ‘সোহেল রানা’ নামে পরিচিত হন তিনি। ১৯৭২ সালে মাসুদ পারভেজ নামে চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন।
বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’ সিনেমার প্রযোজক হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ তার। এটি পরিচালনা করেন চাষী নজরুল ইসলাম।
১৯৭৩ সালে কাজী আনোয়ার হোসেনের বিখ্যাত কাল্পনিক চরিত্র ‘মাসুদ রানা’র একটি গল্প অবলম্বনে ‘মাসুদ রানা’র নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং একই সিনেমার মাধ্যমে তিনি মাসুদ পারভেজ নামে পরিচালক হিসেবেও যাত্রা শুরু করেন। এরপর অসংখ্য সিনেমা তিনি উপহার দিয়েছেন। দীর্ঘ চলচ্চিত্র জীবনে সোহেল রানা তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছেন। এছাড়া, ২০১৯ সালে তাকে আজীবন সম্মাননা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এনএটি