ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

সাঁঝবাতির জন্য প্রসেনজিতের চোখে জল

জনি হক, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৬
সাঁঝবাতির জন্য প্রসেনজিতের চোখে জল

ভারতের বাংলা ছবির জনপ্রিয় অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় তখন বাংলাদেশের সাতক্ষীরায়। সেখানে তিনি অনেকদিন কাজ করেছিলেন।

তার অংশের কাজটা একটু আগে শেষ হয়ে গিয়েছিলো। এটা জানতে পেরেছিলেন সাঁঝবাতির মা বুড়ি আলী। তিনি প্রসেনজিতের কাছে জানতে চাইলেন-

‘তুমি কখন যাচ্ছো বুম্বাদা?’

প্রসেনজিৎ বললেন, ‘সকালে যাচ্ছি। ’

‘তুমি পারলে সাঁঝবাতি ঘুম থেকে ওঠার আগে ভোরে চলে যেও। তা না হলে অনেক কান্নাকাটি করবে ও। ’

প্রসেনজিৎ সত্যি সত্যি তা-ই করেছিলেন৷ সাঁঝবাতির সঙ্গে তার সম্পর্কটা এমন হয়ে গিয়েছিলো যে, এ ঘটনা মনে করার সঙ্গে ৫৩ বছর বয়সী এই তারকার হাতের আঙুল চলে গেলো চোখের কোণে। সেখানে জড়ো হওয়া জল মুছলেন তিনি।

গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘শঙ্খচিল’ ছবির সংবাদ সম্মেলনে দেখা গেলো এ দৃশ্য। মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওস্থ চ্যানেল আই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে এসেই সাঁঝবাতিকে জড়িয়ে ধরে আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠেন প্রসেনজিৎ।   বাংলানিউজের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সাঁঝবাতি তাকে বিভিন্ন উপহার দিতেন। উপহারের ওপর ‘বাবাকে দিলাম’ লিখে দিতেন এই কিশোরী৷
 
এ ছবির কাজ করার পর থেকেই প্রসেনজিতের মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে নিজের আরেকটি কন্যা আছে, তার নাম সাঁঝবাতি! তিনি বলেছেন, ‘ও আমাকে একটা সুন্দর পাঞ্জাবি দিয়েছে। আমি ওকে ক্যাডবেরি দিয়েছি। আমি যা যা ভালোবাসি, ও আমাকে দেয়। ওর যা যা ভালো লাগে আমি ওকে দিই। একটা জিনিস ওর মা অনুমতি দিচ্ছে না, সেটা হলো মোবাইল!’

সোমবার (১১ এপ্রিল) কলকাতায় ছবিটির একটি বিশেষ প্রদর্শনী হয়েছে। এখানেই প্রথমবার ছবি সংশ্লিষ্টদের বাইরের লোকজন ‘শঙ্খচিল’ দেখেছেন।


দেখার পর সবার মুখেই প্রসেনজিতকে শুনতে হয়েছে, ‘এটা কি আপনার মেয়ে?’

উত্তরে তিনি আনন্দের সঙ্গেই বললেন, ‘হ্যাঁ, এটা আমার মেয়ে!’

তখন তারা ইতস্তত হয়ে বলেন, ‘কিন্তু নামটা দেখে তো মনে হয় না। ’

প্রসেনজিৎ তখন বললেন, ‘নামটা ভুলে যান, মেয়েটা তো আমার! সাঁঝবাতির সঙ্গে আমার এমনই বোঝাপড়া যে, সেই ইকুয়েশনটাই পর্দায় ফুটে উঠেছে৷’
 
‘শঙ্খচিল’-এ বাবা-মেয়ের সম্পর্কটা খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ স্কুলশিক্ষক বাদল চরিত্রে প্রসেনজিৎ আর তার মেয়ের ভূমিকায় দেখা যাবে সাঁঝবাতিকে। বাদলের স্ত্রীর চরিত্র রূপদান করেছেন অভিনেত্রী কুসুম সিকদার। তিনি প্রসেনজিৎকে বুম্বাদা নামেই সম্বোধন করেন। সংবাদ সম্মেলনে অনুভূতি জানাতে গিয়ে সাঁঝবাতিও প্রসেনজিতকে ‘বুম্বাদা’ নামে ডেকেছেন। তখন আগ বাড়িয়ে মাইক্রোফোন নিয়ে প্রসেনজিৎ তাকে বললেন, ‘তোর মা-ও বুম্বাদা বলে, তুই বুম্বাদা বললি!’


সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন নজরুলসংগীত শিল্পী ফেরদৌস আরা। ছবিটিতে অভিনেতা মামুনুর রশীদ অভিনয় করেছেন স্কুলের হেডমাস্টার চরিত্রে। ৬৮ বছর বয়সী এই গুণী শিল্পীর জন্ম লিপ ইয়ারে। সে হিসেবে ২০১৬ সালে মাত্র ১৭তম জন্মদিন পালন করেছেন তিনি। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বাবার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে তার পুত্র বলেন, ‘আমরা ঘটনাক্রমে তার সন্তান! আসল সন্তান হচ্ছে, যাদের সঙ্গে তিনি কাজ করেন। ’ এ উদাহরণ টেনে মামুনুর রশীদ বলেন, ‘শিল্পীর জীবনে শুধু তার পরিবারের সঙ্গেই তার সম্পৃক্ততা থাকে না, অনেক বড় পরিবার হয়ে যায়। এটাই শিল্পীর জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ’

আগামী ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষে দুই বাংলায় একসঙ্গে মুক্তি পাচ্ছে ‘শঙ্খচিল’। গত বছরের ডিসেম্বরে সেন্সর ছাড়পত্র পেয়ে যাওয়ার সুবাদে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা বাংলা ছবি হয়েছে এটি। তার আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সে এর বিশেষ প্রদর্শনী হবে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য।

বাংলাদেশ সময় : ১৭০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৬
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।