ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

মনে হয় অলরেডি আমি রিটায়ার্ড করেছি : এন্ড্রু কিশোর

সোমেশ্বর অলি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৬
মনে হয় অলরেডি আমি রিটায়ার্ড করেছি : এন্ড্রু কিশোর এন্ড্রু কিশোর

চার দশকের বছরের দীর্ঘ সংগীতজীবন। এ সময়ের মধ্যে উপহার দিয়েছেন কালজয়ী অসংখ্য গান।

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর মনে করেন এখন তার গান গাওয়ার সময় ফুরিয়েছে। সত্যি কী তাই? বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এ নিয়ে অনেক কথাই বললেন তিনি। পড়ুন তার সাক্ষাৎকার- 

বাংলানিউজ: আপনি তো সাধারণত টিভি অনুষ্ঠানে গান করেন না। ঈদে ‘উইন্ড অব চেঞ্জ প্রি সিজন টু’তে আপনার পরিবেশনা থাকছে।
এন্ড্রু কিশোর:
গানবাংলার এ আয়োজন আমার ভালো লেগেছে। ভালোলাগার জায়গা থেকেই ‘হায়রে মানুষ’ গানটি নতুন করে গেয়েছি। সত্যি বলতে, হানিফ সংকেত আমার বন্ধু মানুষ। তার কথা ফেলতে পারি না। এ কারণে ‘ইত্যাদি’তে আমাকে পাওয়া যায়। এটা বাদ দিলে তেমন কোনো টিভি অনুষ্ঠানে যাইনি। আমার মনে হয় এসব আয়োজনে যত্নেরও অভাব থেকে যায়। আর এটা আমার ভালো লাগে না, কারণ আমি নিজেকে আপাদমস্তক চলচ্চিত্রের কণ্ঠশিল্পী মনে করি। এসব কারণেই টিভি অনুষ্ঠানের প্রতি আমার যতো অনীহা।  

বাংলানিউজ: এক সময় তো প্রচুর গান করেছেন। এখন?
এন্ড্রু কিশোর:
আমার মনে হয়, অলরেডি আমি রিটায়ার্ড করেছি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিনই ভেবেছিলাম একদিন এর শেষ আছে। এখন সেই সময় এসে গেছে। অবশ্য এর জন্য প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিলাম।

বাংলানিউজ: আপনার কী আর কিছুই দেওয়ার নেই?
এন্ড্রু কিশোর:
তেমন ডাক পাই না। এখন মাসে দু’ তিনটি গান গাইছি। বাকি সময় বাসাতেই কাটে। আমার পরিবারের সদস্যরা সকালের একটা সময় আমাকে একা থাকতে দেয়। দরজা বন্ধ করে রেওয়াজ করি, গানের সঙ্গে আছিই।    

বাংলানিউজ: কাজ কমে যাওয়ার কারণ কী? এ নিয়ে কোনো আক্ষেপ আছে?
এন্ড্রু কিশোর:
এখনকার গানের স্বাদ বদলে গেছে। চলচ্চিত্রে সবসময় নতুন কণ্ঠের চাহিদা থাকে। এখন সময় বদলেছে। নতুন ছেলেমেয়েরা এসেছে। তাছাড়া গানের সম্মানীও কমে এসেছে। আমাকে যথার্থ সম্মানী দিয়ে গান গাওয়াবে, এমনও লোকও কমে গেছে। যদিও এসব নিয়ে আক্ষেপ থাকার কিছু নেই।  

বাংলানিউজ: কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখন তো গান তৈরির বাজেটও বেড়েছে।  
এন্ড্রু কিশোর:
সেটাও বলছি। এখন বাইরের লোকেরা ছবি করছে বেশি। মানে, এফডিসির বাইরের লোকেরা। আগে তো সব পরিচালক, প্রযোজক বা সংগীত পরিচালককে চিনতাম। এখন সেটা হয় না।  

বাংলানিউজ: প্রস্তুতি নিয়ে রাখার কথা বলছিলেন, সেটা কেমন?
এন্ড্রু কিশোর:
জানতাম একসময় আমার গানের কাজ কমে যাবে। তাই ব্যবসার দিকে সময় দেবো বলে সেভাবে তৈরি হয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে ব্যর্থ হয়েছি। ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। তাতে অবশ্য আমার কোনো আফসোস নেই। এভাবেই জীবনের অংক মিলিয়ে নিয়েছি।   

বাংলানিউজ: এখনকার গান কেমন হচ্ছে বলে মনে করেন? 
এন্ড্রু কিশোর:
ভালো। ভালোই তো হচ্ছে। তবে এখনকার গানে যেন একটা অভাব টের পাওয়া যায়। আমার মনে হয়, এখনকার গানের স্থায়ীত্ব থাকছে না। এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে।    

বাংলানিউজ: নতুন প্রজন্মের জন্য নিজের গান নতুন করে গাওয়ার ইচ্ছে আছে?
এন্ড্রু কিশোর:
না, নেই। সারাজীবন গেয়েছি, ভুলে গিয়েছি কী গেয়েছিলাম। নিজে উদ্যোগী হয়ে কিছু করা হয়ে ওঠে না। ডাক পেলে গান গেয়ে দিয়ে চলে আসি, ব্যস। আমার কিছু গান মানুষের ভালো লেগেছে। এই ভালো লাগাটাই থাক।  

বাংলানিউজ: আপনার তো বর্ণাঢ্য সংগীতজীবন। আত্মজীবনী লেখার ইচ্ছে আছে?
এন্ড্রু কিশোর:
প্রশ্নই আসে না। আমি তেমন কেউ নই। আত্মজীবনী লেখা আমার জন্য বিলাসিতা ছাড়া আর কিছু হবে না। তাছাড়া আমি নিজেকে বিরাট কিছু মনে করি না।  

বাংলানিউজ: আপনার সম্পর্কে জানার জন্য…
এন্ড্রু কিশোর:
আমার গান মানুষের মনে যদি একটু জায়গা করে থাকে, সেটাই ঠিক আছে। আর কী চাই!

বাংলানিউজ: এখন আপনার সময় কাটে কীভাবে?
এন্ড্রু কিশোর:
বাজার করা আমার প্রিয় শখ। এটা উপভোগ করি। সকালে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। আর পরিবারকে সময় দিচ্ছি। রেওয়াজ করছি। এই তো!

* এন্ড্রু কিশোরের কণ্ঠে নতুন করে ‘হায়রে মানুষ’

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৬
এসও/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।