ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

এন্ড্রু কিশোরের শেষকৃত্যানুষ্ঠান শুরু, চলছে প্রার্থনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২০
এন্ড্রু কিশোরের শেষকৃত্যানুষ্ঠান শুরু, চলছে প্রার্থনা

রাজশাহী: সদ্য প্রয়াত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের শেষকৃত্য অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। বুধবার (১৫ জুলাই) সকাল ৯টায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিমঘর থেকে কফিনে করে গুণী এই শিল্পীর মরদেহ নিয়ে আসা হয় রাজশাহী সিটি চার্চে, এরপর শুরু হয় প্রার্থনা।

শিল্পীর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী বরিশাল থেকে ফাদার বিশপ সৌরভকে নিয়ে আসা হয়েছে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের এই প্রার্থনার জন্য। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে এই প্রার্থনা অনুষ্ঠান।

এরপর কিছুক্ষণের জন্য চার্চের বাইরে তৈরি করা একটি মঞ্চে মরদেহ রাখা হবে সকলের শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। ওই মঞ্চটি স্ত্রী-সন্তানরা নিজ হাতে তৈরী করেছেন এন্ড্রুর শেষ বিদায়ের জন্য।

স্বল্প পরিসরে এন্ড্রু কিশোরের কফিনে স্বজন, ভক্ত অনুরাগী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দুপুর ১টার মধ্যেই মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে বাংলাদেশ চার্চের কবরস্থানে। সেখানেই শিল্পীর পছন্দের স্থানেই সমাহিত করা হবে।

বর্তমানে রাজশাহী সিটি চার্চের প্রার্থনা অনুষ্ঠানে এন্ড্রু কিশোরের সহধর্মিণী লিপিকা এন্ড্রু, তার বড় মেয়ে মিনিম এন্ড্রু সংজ্ঞা, ছেলে জয় এন্ড্রু সপ্তক, বড় বোন ডা. শিখা বিশ্বাস, বড় বোনের স্বামী ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাসসহ অাত্মীয়-স্বজন, বন্ধু, ভক্ত অনুরাগী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা উপস্থিত রয়েছেন।

এর আগে চার্চে দু’ঘণ্টার ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান শেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার এবং রাজশাহী কলেজ শহীদ মিনারে তার মরদেহ রাখার কথা ছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকায় এবং করোনা পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে শিল্পীর মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর অনুষ্ঠান বাতিল করেছে পরিবার।

এদিকে, এন্ড্রু কিশোরকে যে সিমেট্রিতে (কবরস্থান) সমাহিত করা হবে, সেখানে তার বাবা ক্ষীতিশ চন্দ্র বাড়ৈ এবং মা মিনু বাড়ৈকেও সমাহিত করা হয়েছিল। তবে কিশোরের সমাধি হচ্ছে তার দেখিয়ে দেওয়া জায়গায়। যেখান থেকে পরিবারের সদস্যদের সমাধি সামান্য একটু দূরে।

শিল্পীর বড় বোনের স্বামী ডা. পাট্রিক বিপুল বিশ্বাস বলেন, ‘প্রতি বছর ১ নভেম্বর খ্রিস্টানরা সমাধিস্থলে যান এবং প্রয়াত  স্বজনদের আত্মার মুক্তির জন্য স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করেন। ২০১৭ সালের এমন এক দিনে এন্ড্রু কিশোর আমাকে নিয়ে সিমেট্রিতে গিয়েছিল। প্রার্থনা শেষে সিমেট্রিটা ঘুরে দেখেছিল। পরে একটা মনোরম স্থান পছন্দ করে আমাকে বলেছিল- সে যখন মারা যাবে, তখন যেন তাকে সেখানেই সমাহিত করা হয়।  

‘সেই জায়গাতেই তার সমাধির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সিমেট্রিতে ঢুকে হাতের বা পাশেই সেই জায়গা। শেষ ইচ্ছের প্রতি সম্মান জানিয়ে সেখানে সমাধিস্থ করা হবে তাকে। আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বুধবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় একসঙ্গে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হবে। ’

রাজশাহীতে জন্ম নেওয়া এন্ড্রু কিশোর প্রায় ১৫ হাজার গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। ৮ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই শিল্পী ক্যানসারে ভুগছিলেন। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সিঙ্গাপুরেই ছিলেন চিকিৎসার জন্য।

কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি চিকিৎসার পরও দ্বিতীয়দফায় তার দেহে ক্যানসার বাসা বাঁধে। ফলে চিকিৎসকরা হাল ছেড়ে দেন। তাই শিল্পীর ইচ্ছায় তাকে দেশে আনা হয় গত ১১ জুন। এরপর ২০ জুন তিনি রাজশাহীতে বড় বোনের বাসায় গিয়ে ওঠেন। ওই বাড়িটির একটি অংশেই রয়েছে ক্লিনিক। সেখানেই জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সেবা চলছিল এন্ড্রু কিশোরের।

আর গত ৬ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এলাকায় থাকা বড় বোন ডা. শিখা বিশ্বাসের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোর। এরপর তার মরদেহ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়। ছেলে-মেয়ের অপেক্ষায় ১৫ জুলাই এন্ড্রু কিশোরের শেষকৃত্যানুষ্ঠানের দিন নির্ধারণ করে পরিবার।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২০
এসএস/ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।