ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

যে কারণে ইসলামের পথে সানা খান, জানালেন ভিডিওবার্তায়

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২০
যে কারণে ইসলামের পথে সানা খান, জানালেন ভিডিওবার্তায় সানা খান

ভারতীয় অভিনেত্রী ও টিভি শোর জনপ্রিয় মুখ সানা খান বলিউডকে চিরদিনের মতো বিদায় জানিয়েছেন। সম্প্রতি বিয়ে করেছেন মুফতি আনাস সাঈদকে।

সেদিন বলিউডকে বিদায় জানানো এই অভিনেত্রী, কাশ্মীরের গুলমার্গে স্বামীর জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন। ইনস্টগ্রামেও প্রকাশ করেছেন ছবি। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে মুফতির একটি ছবি পোস্ট করে সানা লেখেন, আল্লাহ তোমাকে সবসময় সুস্থ রাখুন এবং তোমার সঙ্গেই যেন জান্নাতে যেতে পারি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার কার্যক্রমের প্রায় সবটুকুই এখন ইসলাম নিয়ে। এরমধ্যে জনপ্রিয় এ তারকা ইনস্টাগ্রামে ভিডিও বার্তায় জানালেন তার মনোবাসনার কথা।

ভিডিও বার্তায় যা বললেন সানা খান

সালাম দিয়ে শুরু করা ভিডিওর শুরুতেই তিনি পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত তেলাওয়াত করেন। তার অর্থ হলো- মুমিনগণ সফলকাম হয়ে গেছে।  
এরপর ধীরে ধীরে তার পুরোনো জীবনের প্রসঙ্গ টেনে আনেন।  

তিনি বলেন, আমার জন্য পুরোনো জীবনে সফলতা বলতে ভিন্ন কিছু ছিল। কাজ করা, অর্থ-সম্পদ অর্জন এবং বেশি ভক্ত সংখ্যাকে সফলতা হিসেবে বুঝতাম তখন।

কিন্তু তরজমাসহ কোরআন তেলাওয়াত ও নামাজ তাকে বদলে দেয়। এ প্রসঙ্গে তার অভিমত হলো, সর্বশেষ সাত বছর ধরে আমি তরজমাসহ কোরআন শরীফ মনযোগ দিয়ে পড়া শুরু করি। এরপর প্রতি মনযোগ দেওয়া শুরু করি নামাজ আদায়ও। যখন তরজমাসহ কোরআন পড়ি তখন আমার মধ্যে কিছু কিছু বিষয়ে বেশ প্রভাব ফেলতো, আমি তা ভেতর থেকে অনুভব করতে পারতাম। তখন আমি বসে চিন্তা করতাম, আসল সাফল্য কি? আমি যতবেশি কোরআন পড়লাম তাতে বুঝেছি, যিনি আল্লাহর দৃষ্টিতে সফল তিনিই প্রকৃতপক্ষে সফল মানুষ।  

কোরআন তাকে জীবন নিয়ে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। সে ভাবনা থেকেই বদলে গেছে তার জীবনের লক্ষ্য। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোরআন পড়তাম আর আমি চিন্তা করতাম, মানুষ বা দুনিয়া যাকে সফলতা হিসেবে দেখে তার বাইরে কী এমন জিনিস আছে যাকে আল্লাহ সফলতা হিসেবে দেখেন। এই যে দুনিয়া, এটা আল্লাহ মানুষের জন্যই তৈরি করেছেন। আর আমাদের তিনি নিজের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তাঁর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আর দুনিয়ায় যেসব জিনিস আমাদের প্রয়োজন তা আমরা নিজেরাই তৈরি করে নিই। যেমন গাড়ি। এর চাহিদা আমরাই তৈরি করেছি। কিন্তু এর বিকল্প যখন চলে আসে তখন পুরোনো জিনিসের মূল্য থাকে না। যখন মানুষ মানুষ দুনিয়াবি জিনিসে বেশি মত্ত হয়ে যায়, যেমন আমিও ছিলাম, তখন তারা ভুলে যায় গাড়ি আমাদের জন্য বানানো হয়েছে, আমরা গাড়ির জন্য নই। মানুষকে সৃষ্টির কারণ ভিন্ন। আমি আল্লাহর চোখে সফল হতে চেয়েছি। দেখুন, আল্লাহ কী বানাননি। পাহাড়, পানি, বাতাস, ফলমূল, সবজি ইত্যাদি। মাঝেমধ্যে মানুষ বলে, আরে, এটা তো মানুষ বানিয়েছে। অবশ্যই মানুষ বানিয়েছে। কিন্তু সেটা বানানোর জন্য মস্তিষ্ক আল্লাহই দিয়েছেন।

‘নামাজ পড়া, তরজমাসহ কোরআন তেলাওয়াত আমার জীবনে অনেক বদল নিয়ে এসেছে। আমি তরজমাসহ ওই সুরার আরও দশটি আয়াত পড়লাম। পড়ার পর আমি স্থির হয়ে বসে পড়লাম। তখন আমি ভাবলাম, সানা তুমি তো তোমাকে অনেক জনপ্রিয় ভাবো। যেখানে যাও সেখানেই লোকে তোমার ছবি তোলে। যেসব কাজ তুমি করো তা পর্দায় দেখা যায় এবং লোকে তোমাকে চেনে। আজ আমার যৌবন আছে সময় আছে তো আমার মূল্য আছে। যখন বয়স হয়ে যায় তখন আর আগের মূল্য থাকে না। প্রতিটি বিষয়েরই একটা সময় থাকে। ’ 

তার কাছে বলিউডে কাজ করাটা সময় নষ্ট মনে হয়েছে। এ ভাবনা আসার পর তিনি আর সময় নষ্ট করতে চাননি।

সানা খানের মতে, আমার কাছে মনে হয়েছে, আমি আসলে এখানে কাজ করে সময় নষ্ট করছি। আমি ভাবছি, আমি কি প্রকৃতপক্ষে সফল? তখন আমি জবাব পেলাম, এটা সফলতা নয়। পণ্যের মূল্য তো মানুষ নির্ধারণ করে। আর মানুষের যে মূল্য তা আল্লাহ নির্ধারণ করেন। আর মানুষের মূল্য যদি আল্লাহর নজরে উঁচু হয় তবে সে-ই প্রকৃতপক্ষে মূল্যবান। এ কারণেই আমি আমার জীবনকে বদলে ফেলার চেষ্টা করি। দুনিয়া তো কোনো না কোনোভাবে পার হয়ে যাবে। আখেরাত আমাদের প্রকৃত ঠিকানা। আমি আল্লাহর চোখে সফল হতে চাই। আর এসব আপনাদের বলার কারণ হলো, আমরা আল্লাহর চোখে সফল হওয়ার চেষ্টা যেন করি। দুনিয়ায় ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করি। যেন মানুষের কাজে আসি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২০
এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।