ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

যে কারণে ‘লাঠিটিলা সাফারি পার্ক’ স্থাপন বাতিলের সুপারিশ বিশেষজ্ঞদের

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০২৪
যে কারণে ‘লাঠিটিলা সাফারি পার্ক’ স্থাপন বাতিলের সুপারিশ বিশেষজ্ঞদের ছবি: ড. মোস্তফা ফিরোজ

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় অবস্থিত লাঠিটিলায় সংরক্ষিত পাহাড়ি বন। এখানে সাফারি পার্ক স্থাপন প্রকল্পের অনুমোদন বাতিলের সুপারিশ করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) লাঠিটিলায় সাফারি পার্ক বাতিলের সুপারিশ করার বিষয়ে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তফা ফিরোজ।

ড. মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘৮০ বর্গকিলোমিটারের লাঠিটিলা অত্যন্ত সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক বন। ইন্দো-বার্মা জীববৈচিত্র্য হটস্পটের অংশ এটি। এতো সমৃদ্ধ বন আমাদের দেশে খুবই কম রয়েছে। আমরা মনে করেছি যে কোনো ধরনের হিউম্যান অ্যাক্টিভিটিজ (মানবসৃষ্ট কার্যকলাপ) হলে বনের নিজস্ব জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এখন কথা হচ্ছে- আমাদের এখানে সাফারি পার্ক বলে যেটা করা হয়, সেটা হচ্ছে এক প্রকারের ওপেন জু (খোলা চিড়িয়াখানা)। অন্যান্য দেশের যে সাফারি পার্ক তার সঙ্গে কিন্তু আমাদের দেশের সাফারি পার্কের কোনো তুলনা করা যাবে না। তাই, লাঠিটিলায় সাফারি পার্ক স্থাপন করার হলে বিশেষ করে পাথারিয়া বনের প্রতিবেশ ব্যবস্থা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ‘

আর দ্বিতীয় কারণ হলো-‘পাথারিয়া বনের এই জায়গাটা আমাদের দেশের এলিফেন্ট করিডোর (বন্যহাতি প্রবেশের দ্বার)। এলিফেন্ট ইন্টারনেশনালি (আন্তর্জাতিকভাবে) এদিক দিয়েই যাতায়াত করে থাকে। এছাড়াও এই জায়গাগুলো টাইগার মুভমেন্টের (বাঘ চলাচল) গোপন স্থান হয়ে থাকতে পারে। আমরা ইতোপূর্বে এখানে ক্যামেরা ট্র্যাকিং করে জানতে পেরেছি যে, অনেক বিপন্ন ও বিরল প্রজাতির প্রাণিরা এদিক দিয়ে চলাচল করে।

এসব কারণেই লাঠিটিলায় সাফারি পার্ক স্থাপন কখনোই সমীচীন হবে না বলে জানান ড. মোস্তফা ফিরোজ।

বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, মৌলভীবাজার (প্রথম পর্যায়) প্রকল্পটি একনেক সভায় ৯ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে শর্তসাপেক্ষে অনুমোদিত হয়েছিল।

একনেক সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বর্ণিত প্রকল্পের বিষয়ে সুপারিশমালা প্রণয়নের জন্য জীববৈচিত্র্যের ওপর প্রভাব নিরূপণে ২১ আগস্ট ২০২৪ তারিখে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়। চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অন্যতম সদস্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তফা ফিরোজ। এছাড়াও অন্যান্য সদস্যরা হলেন- আহ্বায়ক সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক ইসতিয়াক উদ্দিন আহমেদ এবং অপর দুই সদস্য হলেন- আরণ্যক ফাউন্ডেশনের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ফরিদ উদ্দিন আহমদ এবং বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০২৪
বিবিবি/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।