ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

ফেনীতে পাখি সংরক্ষণে তরুণদের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২০
ফেনীতে পাখি সংরক্ষণে তরুণদের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

ফেনী: পাখি সংরক্ষণ ও এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন ফেনীর সমুদ্র উপকূলীয় জনপদ সোনাগাজীর কয়েকজন কিশোর ও তরুণ। তাদের সংগঠন স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ফেনীর পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

ছোট ফেনী নদীর তীরে কয়েকজন অসাধু ব্যক্তির পাখি শিকার এবং হত্যার ঘটনার পর সংগঠনটি গাছে গাছে পাখির বাসা তৈরি, সচেতনতা তৈরিসহ নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। পাখি ধরলে ও মারলে তার বিরূপ প্রভাব পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্যের ওপর পড়বে, এটি স্থানীয়দের বোঝানোর জন্য নিয়মিত কাজ করছেন তারা।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখির ভূমিকা বিবেচনা করে পাখি রক্ষার জন্য শুধু কৃত্রিম বাসা নির্মাণই নয়, এ বিষয়ে মানুষের সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষামূলক লিফলেটও বিলি করছেন এ সংগঠনের সদস্যরা।

সংগঠনের সহ-সভাপতি তানজুরুল তুহিন জানান, নিরাপদ আশ্রয় ও প্রয়োজনীয় খাদ্যের অভাবে পশু-পাখির সংখ্যা দিন দিন কমছে। তাই পাখিদের জন্য নিরাপদ অভয়াশ্রম গড়ে তোলা হচ্ছে। এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রাও।

তুহিন জানান, প্রকৃতিতে পাখির কিচিরমিচির শব্দ সবারই মন কাড়ে। পাখিরা বিশেষ করে গাছে আশ্রয় নিয়ে থাকে। গাছেই তারা ডিম পাড়ে ও বাচ্চা ফোটায়। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অর্থাৎ ঝড়-বৃষ্টিতে গাছে আশ্রিত পাখির ক্ষতি হয়ে থাকে। এসব দিকে বিবেচনা করে পাখিগুলোর নিরাপদ অভয়াশ্রম গড়তে উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।

এলাকায় বড় বড় গাছে মাটির পাতিল বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। এসব পাতিলেই বাসা তৈরি করছে পাখিগুলো। সেখানেই ডিম দিচ্ছে এবং বাচ্চা ফুটছে। পাতিলগুলোর ওপরের অংশ খোলা। দু’টি ডালের মধ্যে এমনভাবে কায়দা করে সেগুলো বসানো হয়েছে যেন বৃষ্টির পানি ভেতরে ঢুকতে না পারে। ইতোমধ্যে দোয়েল, ঘুঘু, বাবুই ও বুলবুলিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি পাতিলগুলোতে বাসা বেঁধেছে।

স্থানীয়রা জানায়, পাখিরা মূলত গাছে আশ্রয় নিয়ে থাকে। ঝড়-বৃষ্টি হলে অনেক সময় পাখির ডিম ভেঙে ও বাচ্চা নিচে পড়ে মারা যায়। ঝড়-ঝাপটায় অনেক পাখির ডানা ভেঙে যায়। পাখিগুলো যেন ভালো থাকে তার জন্য গাছে পাতিল টাঙিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন এলাকার কয়েকজন তরুণ, যা নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। ইতোমধ্যে প্রায় শতাধিক পাতিল টাঙানো হয়েছে। নিরাপদ মনে করে পাখিরা সেখানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে।

সংগঠনের সদস্য আর শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুদানে এ কার্যক্রম চলছে। স্থানীয়রাও এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে কিছু পাখি অবমুক্ত করেছেন এবং পাখি রক্ষায় তরুণদের উৎসাহ দিচ্ছেন। ফলে ওই এলাকায় পাখির বিচরণ আগের তুলনায় বেড়েছে।

পাখি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া এ তরুণরা জানান, ভালো সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পুরো জেলায় পাখি রক্ষায় কাজ করবেন তারা। ২০১১ সালের ১৭ জুন থেকে স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ফেনী (সাফ) মানব কল্যাণের পাশাপাশি রক্তদান কর্মসূচি, শিক্ষা কার্যক্রম, পাঠাগার উন্নয়নসহ বিভিন্ন সামাজিক কাজ করে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২০
এসএইচডি/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।