ঢাকা: লালমনিরহাটের আদিতমারি থানার বাগদির বাজারের একটি নিরীহ বেওয়ারিশ কুকুর। কুকুরটি বাজারেই থাকত, ঘুরে বেড়াত।
কখনো কাউকে কামর দেয়নি বা কাউকে কোনো দিন কোনো ক্ষতিও করেনি। কেউ কেউ বাজারে যাওয়ার সঙ্গে কাছে দৌড়ে যেত। এভাবেই লোকজনের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে কুকুরটির। কেউ কেউ ভালোবেসে রুটি কিনেও খাওয়াতেন।
হঠাৎ একদিন অপ্রত্যাশিতভাবে এক বিভৎস নির্মমতার শিকার হতে হয় কুকুরটিকে। বাজারেরই এক কসাই কুকুরটিকে ছুরি মারেন। কুকুরটির পেটে এফোঁড় ওফোঁড় বিঁধে থাকা ছুরির অসহ্য যন্ত্রণায় সারাদিন কোঁকাতে থাকে।
এ বিভৎস নৃশংসতার ভিডিও ধারণ করে স্থানীয় একজন তার ফেসবুক টাইমলাইনে শেয়ার করেন এবং পশুর প্রতি এ ধরনের নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধে মানুষকে সচেতন করতে সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তারপর ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকের হাজারো অ্যাকাউন্টে।
পুলিশ সূত্র জানায়, এক সময় এ বিষয়টি নজরে আসে বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী এবং পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের সহধর্মিণী জীশান মীর্জার।
নিরীহ কুকুরের প্রতি এমন অমানবিক নিষ্ঠুরতার বিষয়টি তিনি পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবগত করেন। এরপর পুলিশ ঘটনাটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল শনাক্ত করতে এবং ছুরিকাঘাতকারী সেই কসাইকে (মাংস কেটে বিক্রি করেন) খুঁজে বের করতে তৎপরতা শুরু করে।
অবশেষে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে আদিতমারি থানা পুলিশ আনারুল নামে ওই কসাইকে খুঁজে বের করতে সক্ষম হয়। তাকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হয়। একইসঙ্গে আহত কুকুরটির উন্নত চিকিৎসার জন্য 'এনিমেল রেসকিউয়ার অফ বাংলাদেশের' সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
খবর পেয়ে সংগঠনটির প্রধান কেয়া চৌধুরী ও রূকসাৎ হক কুকুরটির উন্নত চিকিৎসার উদ্যোগ নেন। পরে তাদের পাঠানো প্রতিনিধিরা আহত কুকুরটিকে উদ্ধার করে ঢাকার নিয়ে আসেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০২ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২১
পিএম/এসআই