ময়মনসিংহ: বাংলাদেশে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগ প্রথম দেখা দেয় ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে। এরপর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বিভিন্ন টিম চিকিৎসার মাধ্যমে রোগটিকে নিয়ন্ত্রণ করে।
এ রোগে আক্রান্ত গরু সুস্থ হতে দীর্ঘদিন সময় লাগে। খুরা রোগের চেয়েও অনেক বেশি ভয়ঙ্কর রোগ এটি। সাধারণত বর্ষার শেষে, শরতের শুরুতে বা বসন্তের শুরুতে মশা-মাছির বিস্তারের সময় ব্যাপক আকারে দেখা দেয় রোগটি। গরুর খাবারের মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুতেও ছড়ায় এ রোগ।
এ রোগের লক্ষণ হচ্ছে, গরু প্রথমে একটু একটু জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং খাবার খেতে চায় না, জ্বরের সঙ্গ নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়, পা ফুলে যায়, দুই পায়ে পানি জমে, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চামড়া পিণ্ড আকৃতি ধারণ করে, লোম ওঠে যায়, ক্ষত সৃষ্টি হয়। ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত হতে পারে, শিনা ফুলে যায়, ঠিক মতো হাঁটাচলা করতে পারে না।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার জঙ্গলবাড়ি গ্রামের মো. বেলাল ফরাজি বাংলানিউজকে বলেন, আমার সাতটা গরুর সারা শরীরে গোটা গোটা দেখা যায়। তারপর ঘাঁ হয় এবং ওই স্থান থেকে রক্ত পড়ে। আক্রান্ত স্থান থেকে চামড়া পড়ে যায়। এ অবস্থা দেখে বহুবার পশু ডাক্তারের কাছে যাই। কিন্তু ডাক্তার ঠিক মতো পাওয়া যায় না। পাইলেও বলে, যান পরে লোক পাঠাবো। পরে আর আসে না। অবহেলার কারণে বেশির ভাগ গরু মারা যাচ্ছে।
তিনি জানান, তার গ্রামের একটি বিদেশি গরুর বাচ্ছা কয়েকদিন আগে মারা গেছে এই রোগে।
ময়মনসিংহ উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, করোনাকালীন সময়ে ইউনিয়নগুলোর সব জায়গায় গিয়ে পশুর দেখাশোনা করা সম্ভব হয়নি। এখন আবার খোঁড়া, তরকা ও গটফস্ক এই তিন ধরনের ভ্যাকসিন ও নানা ধরনের রোগের চিকিৎসার জন্য প্রত্যেক ইউনিয়নে একজন উপজেলা সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা প্রতিদিন কাজ করছেন।
তিনি আরও বলেন, এ রোগে গরু মারা যাওয়ার কথা সত্যি না। ইতোমধ্যে আমরা ২শ গরুকে ভ্যাকসিন দিয়েছে। লিস্ট করে এলাকার সব গরুকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনবো।
প্রসঙ্গত, ১৯২৯ সালে সর্বপ্রথম আফ্রিকা মহাদেশের জাম্বিয়াতে এ রোগ দেখা দেয়। তারপর ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে মহাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগটি মূলত মশার মধ্যমেই বেশি ছড়ায়।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২১
জিএমএম/এএটি