নওগাঁ: ৩৩ যুগেরও বেশি সময় ধরে নানান ঘটনার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে অচেনা একটি গাছ। গাছটির পাতা ও ফল অন্য সব গাছের তুলনায় একেবারে আলাদা হওয়ায় স্থানীয়দের কাছে এটি অচিন গাছ নামেই পরিচিত।
নওগাঁ সদর উপজেলার চকপ্রসাদ মহল্লায় গাছটির অবস্থান। এত বয়সের পুরোনো গাছ এ জেলায় আর একটিও নেই।
চকপ্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা বিনয় সরকার (৮০) নামে এক বৃদ্ধ বাংলানিউজকে বলেন, বাপ-ঠাকুরের মুখে শুনেছি, অচিন নামে পরিচিত গাছটি কোনো এক বন্যার পানিতে ভেছে এসেছে এখানে। আমাদের অনেক পূর্ব-পুরুষ গাছটি দেখে মারা গেছে। আমাদেরও জীবনের শেষকাল। কিন্তু এখন পযন্ত এই গাছের নাম পাওয়া যায়নি। যে কারণে আমরা এটিকে অচিন গাছ নামেই চিনে থাকি। এখানে আমরা যারা সনাতন ধর্মাবলম্বীর মানুষ রয়েছি, তারা গাছটিকে ঘিরে পূজা করে থাকি। প্রতিবছরে বৈশাখ মাসে এখানে চরকের মেলা হয়। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দু’বছর মেলা হয়নি।
একই গ্রামের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ বলেন, ছোট বেলা থেকেই গাছটিকে ঘিরে নানান আলোচনা-সমালোচনা শুনেছি। কিছুটা বট গাছের মতো দেখতে হলেও এই গাছের পাতা এবং ফল অন্য রকম। এখন পযন্ত এই গাছের ফল থেকে কোনো চারা জন্ম নেইনি। স্থানীয়রা চেষ্টা করেও এর চারা তৈরি করতে পারেনি। ফলে গাছটিকে ঘিরে সবার মধ্যে নানা কৌতুহল রয়েছে।
নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘২০২০ সালের দিকে প্রাণবৈচিত্র্য গবেষণায় গাছটির পাতা ও ডালপালা সংগ্রহ করেছে দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল। তবে তার ফলাফল এখনও জানা যায়নি। এটি সত্যিই দুর্লভ প্রজাতির গাছ। দ্রুত সময়ের জন্য প্রাচীন গাছটির পরিচয় নিরূপণ ও বংশ বিস্তারের ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছি। পাশাপাশি গাছটিকে গ্রামীণ ঐতিহ্য হিসেবে সরকারিভাবে সংরক্ষণ করা উচিত। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২২
এসআরএস