ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

হুমায়ূনের সঙ্গে পরিচয়...

গ্রন্থনা: শেরিফ আল সায়ার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:১৩, জুলাই ২১, ২০১২
হুমায়ূনের সঙ্গে পরিচয়...

হুমায়ূন আহমেদ আর কখনও আমাদের সামনে আসবেন না। হিমু কিংবা মিসির আলীর নতুন কোনো গল্প হাজির হবে না।

আর কখনো বইমেলায় গিয়ে অভিমান নিয়ে বলা হবে না, হুমায়ূন আহমেদের কারণে মেলায় হাঁটা যায় না। তার জন্যে নতুন লেখকরা পাত্তা পায় না। তাকে নিয়ে এসমস্ত সমালোচনা-আলোচনাও আর হবে না। আর বলা হবে না, হুমায়ূনের জন্য নতুন প্রজন্ম বই পড়তে শিখেছে।  

জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক নামটি কেন যেন তাকে বলতে ইচ্ছে হয় না। এতোটা প্রতাপশালী লেখককে বলতে হয় কিংবদন্তি। একটি অধ্যায় হুমায়ূন আহমেদ। বাংলা সাহিত্যের একটা বড় অংশ হুমায়ূন আহমেদের দখলে চলে গেল। তিনি নেই। তার চলে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বেদনাক্রান্ত হয়েছে নতুন প্রজন্ম। কারণ, এ মানুষটির মাধ্যমেই বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে অনেকের পরিচয় হয়েছে। তার লেখার যাদুকরী ভঙ্গি মধ্যবিত্ত সমাজকে আ‍ঁকড়ে ধরেছিল।

হুমায়ূন একজন লেখক। লেখকের সঙ্গে পাঠকের পরিচয় হয় তার লেখার মধ্যে দিয়ে। নতুন প্রজন্মের কয়েকজনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল হুমায়ূনের সঙ্গে পরিচয়টা কীভাবে হলো। সবাই উত্তর দিয়েছেন বেদনাক্রান্ত হয়ে। এতো তাড়াতাড়ি পছন্দের লেখককে হারিয়ে সবাই শোকাহত।    

সালেক খোকন, লেখক ও গবেষক
ভৌতিক গল্প দিয়েই হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে আমার পরিচয়। তখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ি। বাবা-মায়ের চোখের আড়ালে বইটি শেষ করতে না পেরে নিয়ে যাই ক্লাসে। বইয়ের ভেতর বই রেখে পড়ছিলাম ‘নিষাদ’ বইটি।
মনে হচ্ছিল আমার চোখের সামনে সবকিছু ঘটছে। পড়তে পড়তে আনমনা হতেই শিক্ষকদের কাছে ধরাও পড়ে গেলাম। বেত্রাঘাতের পরেও আগ্রহ যায় বেড়ে।

হুমায়ূন আহমেদের মতো সরল গদ্য খুব কম লেখকই লিখতে পেরেছেন। তার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ছিল অসাধারণ। সমাজের একটি সাধারণ চরিত্রকে তিনি চম‍ৎকারভাবে প্রতিফলন ঘটাতেন তার লেখায়। তার লেখার মধ্যে এক ধরণের সম্মহনি ভাব ছিল। যা খুব কম লেখকের থাকে।

সে সময় বন্ধুদের জন্মদিনে হুমায়ূনের বই উপহার দেওয়া ছিল রেওয়াজের মতো। লাইব্রেরিতে খোঁজ রাখতাম কবে হুমায়ূন আহমেদের নতুন বই বের হয়। তার লেখায় সাহিত্যমান আছে কিনা, তা নিয়ে অনেক কথা ওঠে। কিন্তু এটাও স্বীকার করতে হবে খুব সাধারণ একজন মানুষের মধ্যেও পাঠাভ্যাস তৈরি করতে পেরেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ।

সমাজের অনেক অসঙ্গতি ও অন্যায়ের কথা তিনি তার লেখার মাধ্যমে তুলে ধরতেন। পাঠকরা সচেতন হতেন। এটিও ছিল এক ধরণের প্রতিবাদ। তার লেখা নাটকের কথা উঠলেই মনে পড়ে বাকের ভাইয়ের কথা। শেষ পর্বটির আগের দিন বন্ধুরা মিলে ঢাকার কাফরুলে মিছিল করেছিলাম- ‘বাকের ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক তার অসামান্য কিছু লেখা ও চলচ্চিত্র আছে। কিন্তু ব্যথিত হয়েছি তার দেয়াল রচনাকে নিয়ে। তবুও হুমায়ূন আহমেদকে ভালোবাসি। হুমায়ূন আহমেদ তাঁর লেখায় বেঁচে থাকবেন যুগে যুগে।


তানভীর আরাফাত ধ্রুব, যন্ত্রকৌশল বিভাগ, বুয়েট

‘কোথাও কেউ নেই’ এর বাকের ভাইয়ের নাম মনে গেঁথে গেলেও ‘আজ রবিবার’ নাটকের মধ্য দিয়েই মনে হয় ব্যক্তি হুমায়ূনের নাম প্রথম জেনেছিলাম। আর সেই ছোট্টবেলাতেই বুঝে গিয়েছিলাম যে হুমায়ূনের নাটক ছাড়া ঈদ অসম্পূর্ণ রয়ে যায়।

আমার স্মৃতি খুব দূর্বল। তারপরেও মনে আছে ‘ছায়াবীথি’ নামে হুমায়ূনের প্রথম বই আমি পড়েছিলাম। ক্লাস ফাইভে থাকতে বোধহয় পড়েছিলাম ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’ - হুমায়ূনের প্রেমের গল্প সমগ্র। তার কাছ থেকেই শিখেছি যে পার্কে বসা একটা মেয়ের বাচ্চাদের আইসক্রিম কিনে খাওয়ানো দেখেও তার প্রেমে পড়া যায়!
বড় হয়ে পড়েছি হিমু আর মিসির আলী। কেন যেন এদের দুজনকেই আমার ছকে বাঁধা মনে হত। এরচেয়ে অনেক অনেক ভাল লাগত তার ভিন্ন ভিন্ন গল্পের ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রগুলোকে। পালিয়ে বিয়ে করার পরের দিন অ্যাকসিডেন্টে মারা যাওয়া নায়ক। এ ঘটনাগুলো আমার ওপর প্রভাব বিস্তার করতো।

আমরা প্রতি মুহূর্তে যেন তাকে স্মরণ করি, অনুভব করি, মিস করি... প্রতিটি আবেগী মুহূর্তে, প্রতিটি উৎসবের আমেজে...


আমরা আপনাকে মিস করব প্রিয় হুমায়ূন...

ফাতেমা আবেদীন নাজলা, সাংবাদিক ও ব্লগার
আমি তখনও স্কুলের চৌকাঠ মাড়াইনি। যাচ্ছি যাব করছি, পড়ালেখা বেশ ভালোই শিখে ফেলেছি, টিভিতে বিজ্ঞাপনের নাম পড়তে পারি, নাটকে অভিনেতাদের নাম পড়তে পারি। ঠিক সে সময় টিভিতে একটা নাটক দেখাত।

নীলু ভাবী নামের এক মহিলার অনেক কষ্ট, তবু সে সয়ে যায়। আমি তখন নীলুভাবীর কষ্ট বোঝার মতো বড় নই বরং টগর মেয়েটাই আমার খুব প্রিয় ছিল। সাদা সাদা সুন্দর ফ্রক পড়ত মেয়েটা। আর একটু বড় হয়ে টিভিতে একটা বিজ্ঞাপন দেখলাম, চম্পার সিনেমা। সেখানে নাটকের সব লোকেরা ঢুকে পড়েছে। পরে জানলাম এটা শঙ্খনীল কারাগার নাটকের লোকের একটা ছবি। তখনও আমার হুমায়ুন আহমেদ পড়া হয়নি।

এরপর বহুব্রিহী দেখলাম, অয়োময়, কোথাও কেউ নেই। তখনও আমি হুমায়ুন আহমেদ পড়িনি। আমি প্রথম হুমায়ুন আহমেদ পড়ি ক্লাস সেভেনে। তার আগে আমি অসংখ্য বই পড়েছি, এমন কি চেখভ, জুলভার্নও আমার পড়া শেষ। গোর্কি পড়া শেষ কিন্তু তার বই পড়িনি।

হুমায়ুন আহমেদের প্রথম পড়া বই ‘অমানুষ’। নানা বাড়িতে সেই বইটি পড়ে হাউমাউ করে কাঁদলাম ছোট্ট অ্যানি আর জামশেদের জন্য। জামশেদের কবরের ওপর লেখা এপিটাফটা সব সময় চোখে জ্বলজ্বল করে। দ্বিতীয় বই পড়লাম ‘শ্যামল ছায়া’। তৃতীয় বই সবাই গেছে বনে।

এরপর হুমায়ুন আহমেদের কোন বই পড়িনি বা কোন ছবি দেখিনি এটা আমাকে প্রশ্ন করা বৃথা। অনেক সময় পেরিয়ে গেছে। আমার নিজের একটা বই বের হয়েছে, তেমন কোনো সাহিত্যমান নেই বইটির।
কিন্তু ৮০ ভাগ পাঠক আমাকে প্রশ্ন করেছে, তুমি কি খুব বেশি হুমায়ূন পড়? আমি মনে মনে বলি আমি তাহলে স্বার্থক, তার মতো সহজ করে আমি বলতে চাই কথাগুলো।

একরামুল হক শামীম, সাংবাদিক ও ব্লগার
হুমায়ূন আহমেদ আমার শৈশবের হিরো। শৈশবে স্বাভাবিকভাবেই  ‘আউটবই’ পড়ার ব্যাপারে অভিভাবকদের আপত্তি থাকে, বারণ থাকে। যাবতীয় আপত্তিকে পাশ কাটিয়ে আউটবই পড়া শুরু হয়েছিল হুমায়ূন আহমেদের মাধ্যমে। আত্বীয় স্বজনদের বাসায় বেড়াতে গিয়ে হুমায়ূন আহমেদের বই পেলে ঝটপট তা পড়ে নিতাম।
তার বইয়ের বড় গুনটি হলো, একবার শুরু করলে তা শেষ করে উঠতে হয়। বইয়ের বাক্যগুলো পড়লে মনে হয় এটি তো আমার নিজেরই কথা, আমিও হয়তো এমন করেই যাপিত জীবনের অনুভূতিগুলো ব্যক্ত করতাম। বাঙালি মধ্যবিত্তের হাসি, কান্না, সংগ্রাম, অভিমান আর কে তুলে ধরতে পেরেছে হুমায়ূন আহমেদের মতো। হুমায়ূন আহমেদ আমার শৈশবের দিনগুলোকে অনেক বেশি আনন্দময় করে দিয়েছিলেন।

জ্যোৎস্না বিলাস, বৃষ্টি বিলাস হয়তো হুমায়ূন আহমেদের কাছেই পাওয়া। কতো কতো সময় যে ভাবতাম হিমু হবো! কতো কতোবার চেষ্টা করেছি হুমায়ূন আহমেদের মতো করে লিখতে। লেখক হতে চাওয়ার এতো যে আকাঙ্ক্ষা, তাও হুমায়ূন আহমেদকে দেখে দেখে। যতোগুলো বইমেলায় গিয়েছে অনেকগুলো করে হুমায়ূন আহমেদের বই কিনেছি। বাসায় ফিরে কয়েকদিনের মধ্যেই পড়ে শেষ করে ফেলেছি। সেই যে শৈশবে শুরু হয়েছিল হুমায়ূন পঠন, আজও তা সমানভাবেই চলছে।

এখনও তার নতুন কোনও বই পেলেই সঙ্গে সঙ্গে পড়ে ফেলার চেষ্টা করি। অনেকেই বলে থাকেন সময়ের সাথে সাথে তাদের হুমায়ূন মুগ্ধতা কমেছে, কিন্তু আমার ক্ষেত্রে কমেনি। আগের মতোই মুগ্ধতা নিয়ে তার লেখা পড়ি, আর ভাবি কীভাবে এতো সুন্দর করে তিনি লিখেন, আমি কেন পারি না! টেলিভিশনে হুমায়ূন আহমেদের নাটক দেখে হেসেছি, কেঁদেছি, চলচ্চিত্র দেখে মুগ্ধ হয়েছি।

হুমায়ূন আহমেদ পেরেছিলেন বাঙালির আবেগকে বিশুদ্ধভাবে তুলে ধরতে। মানুষ হুমায়ূন আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন, এখনও কেমন যেন বিশ্বাস হতে চায় না। বইমেলায় প্রিয় লেখকের নতুন কোনও বই প্রকাশিত হবে না, ভাবতেই বিষাদগ্রস্ত হয় মন। নিশ্চিতভাবে জানি, হুমায়ূন আহমেদ বেঁচে থাকবেন তার সৃষ্টিশীল কর্মের মাধ্যমে। বাংলা সাহিত্যের মূল্যায়ন হুমায়ূন আহমেদ ছাড়া সম্ভব নয়।

ফারজানা জামান রুম্পা, বিজ্ঞাপন কর্মী

কিছুদিন আগে আবিষ্কার করলাম, পড়ার অভ্যাস শূন্যের কোঠায় নেমে আসছে। ব্যাগের ভেতর একটি বই রেখে দিলাম। অফিসে অবসর সময়ে আড্ডাবাজি ছেড়ে বইটা খুলে বসলাম। খুক খুক করে হাসার শব্দে আশেপাশের সহকর্মীরা বারবার তাকাচ্ছে। একজন এসে জানতে চাইলে কোনমতে হাসি থামিয়ে বললাম, বহুব্রীহি পড়ি। লেখক হুমায়ূন আহমেদ।

একসময়ের জনপ্রিয় ধারাবাহিকের ছাপা অক্ষরের এই বইটি সেদিন আমাকে নতুন করে হুমায়ূন প্রেমে ফেলে দিয়েছিল। না, এ আমার প্রথম পরিচয় নয় লেখকের সাথে। হুমায়ূন আহমেদের সাথে আমার পরিচয় সেই ছোটবেলায়। প্রথমে নাট্যকার হিসেবে আমার চেতনায় তার অনুপ্রবেশ। ‘হঠাৎ একদিন’ নাটকটি কারো মনে আছে কিনা জানিনা। কিন্তু সেই ছোট্ট অভির মতো ছোট্ট আমার মনে ঠিকই বাসনা জেগেছিল একদিন চিড়িয়াখানা থেকে একা একা বাসায় আসার। কঙ্কাল দেখে ভয়ে হাউমাউ করে উঠার দৃশ্যগুলো আজো মনে আছে। জানি না কি করে! কারণ তখন আমি নিতান্তই শিশু।

এরপর হুমায়ূন সাহেব আবার আমার ছোট্ট মাথার কোষগুলোতে স্থান করে নিলেন বহুব্রীহির বোকা আনিস, মামা, কাদের-এর নানা সংলাপ দিয়ে। শেষ পর্যন্ত ‘তুই রাজাকার’-এর মতো আলোড়ন তোলা উক্তি দিয়ে। স্কুলে কাউকে পছন্দ না হলে বলতাম, তুই রাজাকার! সাথে সাথে তার মুখ অন্ধকার হয়ে যেতো। ধরে নেয়া যেতে পারে, বাংলাদেশের টিভি নাটকে হাস্যোজ্জ্বল নাটকীয়তার স্রষ্টা হুমায়ূন আহমেদের সাথে এভাবেই আমার প্রথম পরিচয়।
এরপর বড় হওয়ার পথে ভিন্ন আরেক হুমায়ূন আহমেদের সাথে পরিচয় ঘটলো ‘কোথাও কেউ নেই’ দিয়ে। কলোনিতে বড় হয়েছি। এক একটি নাটকের এপিসোড দেখে ভেবেছি, সত্যিইতো আশেপাশে কতই না বাকের ভাই! টিন এজ বয়সটাতে আবেগী মোড়-অলি-গলি চিনিয়ে দেয় হুমায়ূন আহমেদকে, সেইবার চিনলাম নতুন করে।

এরপর ধীরে ধীরে আমার মাঝে যখন জন্ম নিচ্ছে একজন পাঠক, তখন সবার আগে হাতে নিলাম নন্দিত নরকে। ধীরে ধীরে হিমু, মিসির আলী, শুভ্র, রূপা বন্ধু হলো। পরিচয় হলো দুর্দান্ত লেখক হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে।   যখন কবি পড়লাম তখন পরীদের জন্য এক ধরণের চাপা কষ্ট জমাট বাঁধতে লাগলো বুকের মাঝে।

যার প্রতিটা লেখা, সৃষ্টি, ভাবনা নতুন করে মানুষকে পরিচয় করিয়ে দেয় নতুন এক অনুভূতির সঙ্গে, তার সাথে ‘প্রথম পরিচয়’ পর্বটা সহজে শেষ হয়নি। বরং, প্রতিবার তাকে চিনেছি, ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে- নতুনের মতো করে। একজন লেখক তার প্রতিটি চরিত্রের মাঝে যখন রক্ত মাংসের মানুষকে বেঁধে ফেলতে পারে, তখন তিনি সামনে আসেন নিত্য নতুন রূপে। একেকটি রূপের সাথে একেকবার পরিচয়- প্রথম পরিচয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১২

সম্পাদনা: আহ্‌সান কবীর, আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।