ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

মুক্তাগাছায় শামুক দিয়ে ভাগ্য বদল!

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:০৮, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১২
মুক্তাগাছায় শামুক দিয়ে ভাগ্য বদল!

ময়মনসিংহ: নিজের পুকুরে শামুক চাষ করে দেশজুড়ে তাক লাগানোর পাশাপাশি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার আবু রেজা মাহাবুবুল আলম শাহীন।

খাল-বিলে অবহেলা, অনাদরে আর অযত্নে পড়ে থাকা দেশীয় ছোট ছোট শামুক এখন আর ফেলনা নয়।

টানা ৪ বছর ধরে তিনি এ শামুক চাষ করছেন নিজ মৎস্য খামারে; যা মাছের খাবার মিট অ্যান্ড বোনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

জানা গেছে, আবু রেজা মাহাবুবুল আলম শাহীন গত বছর প্রায় ১০ মেট্রিক টন শামুক উৎপাদন করেছেন। শামুক থেকে শামুক উৎপাদন করতে ৪০ থেকে ৬০ দিন সময় লাগে।

পুকুর থেকে হেক্টরপ্রতি বছরে ৪টি ধাপে ৪ থেকে ৬ মেট্রিক টন শামুক উৎপাদন করা সম্ভব বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, এ জন্য পুঁজির বিনিয়োগ কম লাগে। আয় হয় কয়েকগুণ বেশি।

এদিকে, আবু রেজা মাহাবুবুল আলম শাহীন জানান, উৎপাদিত শামুক সংগ্রহ করে পরিমাণমতো কুড়া (ধানের তুষ) মিশিয়ে মেশিনে ভাঙিয়ে মাছের খাদ্য তৈরি করা হচ্ছে। প্রস্তুত করা এ খাদ্য পাঙ্গাস, শিং, মাগুর, কৈ ও তেলাপিয়া মাছের ভীষণ প্রিয়। এ জন্য বাজারে প্রচলিত মাছের খাদ্যের চেয়ে অর্ধেক খরচ কম পড়ায় মাছচাষে বেশি লাভের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

বাজার সৃষ্টি করতে পারলে বাণিজ্যিকভাবে শামুক চাষ করে প্রচুর টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানান তিনি।

তার মতে, মাছ চাষে প্রাণিজ প্রোটিন একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। এ জন্য বিদেশ থেকে মিট অ্যান্ড বোন আমদানি করতে হয়, কিন্তু দেশীয় শামুক ব্যবহার করে মৎস্য খাদ্য তৈরি করলে একদিকে যেমন ব্যয় কমবে, সেই সঙ্গে পুষ্টিগুণও ঠিক থাকবে।

অন্যদিকে, শুঁটকি মাছ ব্যবহার করে মৎস্য খাদ্য তৈরি করলে তা সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ ক্ষতির কারণ হতে পারে। কিন্তু, প্রাকৃতিকভাবে চাষ করা শামুকের তৈরি খাদ্যে এ আশঙ্কা নেই বললেই চলে।

মাহাবুবুল হক শাহীন বলেন, আগে আমার নিজের ১৮টি পুকুরে দৈনিক ১শ কেজি মিডবন প্রয়োজন হতো। বছরে প্রয়োজন হতো দেড়শ টন। এখন দেশীয় চালের কুড়ার সঙ্গে শামুক মিশিয়ে মাছের খাবার তৈরি করছি। সেই শামুকে আমিষ থাকে ২৪ থেকে ২৬ ভাগ। মিডবনও লাগছে কম। এতে করে ১৫ থেকে ২০ টন মিডবন কম লাগছে; যার বাজার মূল্য বছরে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে মুক্তাগাছা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন কবির বলেন, “শাহীনের উদ্ভাবিত এ পদ্ধতিটি ভালো। এটিকে আরও সম্প্রসারণ করা দরকার। মৎস্য অফিস থেকে এ পদ্ধতি আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। ”

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১২
সম্পাদনা: শাফিক নেওয়াজ সোহান, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।