ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

নতুনভাবে নির্মিত হচ্ছে মৃণালের ‘অতলান্তিকে বসতি’

মনোয়ারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২:০৬, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১২
নতুনভাবে নির্মিত হচ্ছে মৃণালের ‘অতলান্তিকে বসতি’

ঢাকা: বনানীর নৌ বাহিনীর সদর দফতরের সামনে নতুন করে নির্মিত হচ্ছে ‘অতলান্তিকে বসতি’। নৌ বাহিনীর ব্যবহৃত একটি যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার, নোঙ্গর, অ্যাংকর, হুইল, সামুদ্রিক উদ্ভিদ, সামুদ্রিক মাছ এবং সাগরের তলদেশের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হবে এতে।

অধিকাংশই সিমেন্ট দিয়ে তৈরি হচ্ছে। তবে ফাইবার গ্লাসের ব্যবহারও থাকছে।

নৌ বাহিনীর সদর দফতরের সামনে গেলে দেখা যায়, ইতোমধ্যে কিছু কাজ হয়েছে। সবার উপরে যে যুদ্ধজাহাজটি থাকবে তার নির্মাণ শেষ তবে রং করা বাকি আছে।

‘অতলান্তিকে বসতি’র নির্মাতা মৃণাল হক। তিনি নৌ বাহিনীর সহযোগিতায় আবার কাজটিতে হাত দিয়েছেন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এ ভাষ্কর্যটির কিছু অংশ ভেঙ্গে ফেলে অজ্ঞাত দুর্ভৃত্তরা। এ ঘটনায় দৃষ্ঠিনন্দন ভাষ্কর্যটি এর স্বাভাবিক সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলে। পরে মৃণাল নিজ উদ্যোগে এটি আবার নির্মাণের আয়োজন করেন। তিনি জানান, ডিজাইন এবং অন্যান্য ব্যাপারে নৌ বাহিনী তাকে সহযোগিতা করেছে। এখন থেকে এটি রক্ষনাবেক্ষণ করবে বাংলাদেশ নৌ বাহিনী।

প্রসঙ্গত, শহর বিউটিফিকেশন কাজের অংশ হিসেবে এখানে সামুদ্রিক মাছের জীবন এবং দৃশ্য ফুটিয়ে তোলেন শিল্পী মৃণাল হক। পুরো কাজটি তিনি নিজের খরচে করেন। মাছগুলো তৈরি করা হয়েছিলো ফাইবার গ্লাসের মাধ্যমে।  

এ ব্যাপারে মৃণাল হক বাংলানিউজকে বলেন, এর পুরো কাজ শেষ হতে আরো কমপক্ষে ১০ দিন লাগবে। আমরা সুযোগমত দিনে বা রাতে কাজ এগিয়ে নিচ্ছি। নৌ বাহিনী আমার দেয়া ডিজাইনে কিছু পরিবর্তন আনে। সেই পরিবর্তিত ডিজাইন অনুযায়ী কাজ চলছে। নৌ বাহিনীর গোয়েন্দা প্রধান কাজের তদারক করছেন।

বাংলানিউজকে মৃণাল হক বলেন, “চার বছর আগে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি নিয়ে ঢাকা মহানগরীর সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য তিনি ভাষ্কর্যটি নির্মাণ করেন। সিটি কর্পোরেশন ভাষ্কর্য নিমার্ণের জন্য আমার নামে স্থানটিও বরাদ্দ দেয়। শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য আমি বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে প্রাপ্ত অর্থ খরচ করে নিজ উদ্যোগে শহরের বিউটিফিকেশন করে শখ মেটাই। এ কাজতো আর কেউ করবে না। ”

কে বা কারা এ ভাস্কর্যটি ভেঙ্গেছিলো এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ভাস্কর্যটি নেভাল হেডকোয়ার্টারের সামনে। সেখানে নেভাল হেডকোয়ার্টারের নিরাপত্তা রক্ষীরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেন। এ ব্যাপারে তারাই ভালো বলতে পারবেন। এছাড়াও, গুলশান থানা পুলিশ নিয়মিত ওই স্থানে তাদের চেকপোস্ট বসায়, তারা জানতে পারে কে বা কারা ভাষ্কর্যটি ভেঙ্গেছে।

প্রসঙ্গত, ‘অতলান্তিকে বসতি’ ছাড়াও মহানগরী ঢাকায় শিল্পী মৃণাল হকের ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে হোটেল রূপসী বাংলার সামনে ‘রাজসিক’ ঘোড়ার গাড়ির ভাস্কর্য, মিন্টু রোডে ‘কোতোয়াল’ ঘোড়ার পিঠে দুজন পুলিশ বসে, সাতরাস্তায় ‘বর্ষা রাণী’ পুরো মডিফাইড ময়ুরের ভাস্কর্য, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে ‘রত্নদ্বীপ’ ভাস্কর্য, মতিঝিলে ‘বলাকা’ নামে বক পাখির ভাস্কর্য, এয়ারপোর্ট গোল চত্বরে ‘দিব্যদর্শী’ ভাস্কর্য অন্যতম।   এর আগে মৃণাল হকের বলাকা ভাস্কর্য ও লালন ভাস্কর্য ভাংচুর করেছিল মৌলবাদীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১২
এমআইআর/সম্পদনা: আহ্‌সান কবীর, আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।