ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

এক ছড়িতেই হাজার কলা!

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২৪
এক ছড়িতেই হাজার কলা! হাজারি কলার একটি ছড়ি। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: ঠিক যেন তাই- একটি ছড়িতেই হাজার কলা! আর কলার ছড়িটিও বেশ দীর্ঘ। এত দীর্ঘ যে একজন মানুষের পক্ষে তাকে বহন করা রীতিমতো কষ্টকর।

 

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার এমন কলার ছড়ি কৌতূহল আর বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে। এই কলার নাম হাজারি কলা। আশ্চর্য এই কলা গাছ ও কলার ফল দেখতে আলিনগর ইউনিয়নের মুনিম সিদ্দিকির বাড়িতে আসছেন আশপাশের এলাকার কৌতূহলী মানুষ।

স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এটি থাউজেন্ডস ফিঙ্গার ব্যানানার দুটি কাঁদি। বাংলাদেশে এটি হাজারি কলা নামে পরিচিত হলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এর নাম থাউজেন্ডস ফিঙ্গার ব্যানানা। থাউজেন্ডস ফিঙ্গার ব্যানানা বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা কাঁদির কলা হিসেবে পরিচিত। মানুষ শখের বসে চাষ করেন এটি। এই প্রজাতির কলার আদি নিবাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায়। এ ধরনের কলাগাছে একেকটি কাঁদি ৬ ফুট থেকে ১০ ফুট লম্বা হয়। কাঁদির ওপরের অংশের কলা বড় হলেও নিচের অংশের কলা ছোট থেকে যায়। এ ধরনের কাঁদি গাছের সৌন্দর্য অনেক বাড়িয়ে দেয়।  

কমলগঞ্জ উপজেলার আলিনগর ইউনিয়নের যোগীবিল গ্রামের সৈখিন কৃষি উদ্যোক্তা মুনিম সিদ্দিকী বলেন, কলার ইংরেজি নাম ব্যানানা, শব্দটি আরবি বানান শব্দ থেকে এসেছে। ইংরেজিতে কলার কাদিকে হ্যান্ডস বলে। এক ছড়ি কলাতে অনেকগুলো কাঁদি থাকে। পৃথিবীতে হাজারও জাতের কলা পাওয়া যায়। হাজার আংগুলি কলা সেই হাজারো জাতের কলাদের মধ্যে একটা আলাদা জাতের কলা। বৈজ্ঞানিক নাম ‘মুসা থাউজ্যান্ড ফিঙ্গারস’। পিসাং সেরিবু এবং বাহাসা মেলায়ু নামেও পরিচিত। এই জাতের কলায় ফাইবার, পানি, কার্বোহাইড্রেট, এন্টি অক্সিডেন্ট বেশি পরিমাণ থাকে। এগুলোতে বেশি পরিমাণ চর্বি বা আমিষ থাকে না। সবুজ কলায় বেশি পরিমাণ স্টার্চ থাকে, পেকে গেলে সে স্টার্চ চিনির মতো মিষ্টি হয়ে যায়। রীতিমতো যত্ন আর খাবার দিলে গাছের কলাগুলোর গুণগত মানে উন্নয়ন হয়ে থাকে।  

তিনি আরও বলেন, পাকা কলা যেমন খাওয়া যায় তেমন করে কাঁচা অবস্থায় সালাদ করে খাওয়া যায়। কাঁচা কলাকে বেকড করে তার সাথে ওটস, চকোলেট এবং মৌসুমি ফল, চিনাবাদাম এবং বাটার দিয়ে স্মুদি বানিয়েও খাওয়া যায়। এই কলার আদি নিবাস হচ্ছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইন। এখন ভারতের কেরেলা রাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় পাওয়া যায়। বাংলাদেশে প্রথমে ময়মনসিংহের ভালুকায় চাষ করা হয়েছিল। সেখান থেকে দুটো চারা আমার কাছে আসে। সেই চারা দুটোর বংশধর আমার কাছ থেকে সংগ্রহ করে ছড়িয়ে পড়ছে সারা বাংলাদেশে।

রোববার (২৭ অক্টোবর) কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, এই প্রজাতির কলাকে বিদেশে থাউজেন্ডস ফিঙ্গার ব্যানানা বলে। বাংলাদেশ হাজারি কলা হিসেবে এটি পরিচিত। আমাদের দেশে খুবই বিরল এই কলা। এই কলা আকারে অনেক ছোট হলেও কাঁদিতে কয়েক হাজার হয়। কেউ চাইলে এই কলা খেতে পারবেন।

কেউ কেউ আবার বাড়ির সাজসজ্জার জন্য এই কলার গাছটি লাগিয়ে থাকেন। সঠিক পদ্ধতিতে এই কলা পরিচর্যা করলে ছড়ির আকার বড় হতে পারে বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২৪
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।