ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

ঈদের আনন্দ-বেদনা

ওয়ালিউল্লাহ, জাবি প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:২১, অক্টোবর ২৬, ২০১২
ঈদের আনন্দ-বেদনা

ঢাকা : ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। সেই হাসি খুশি ও আনন্দের ঈদ আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন আর বুক ভরা ভালবাসা নিয়ে আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে।

শনিবার  বিশ্বের সকল মুসলমান মিলিত হবে ঈদের আনন্দ উৎসবে।

সারা বিশ্বের মানুষ একসঙ্গে হেসে উঠবেন সাম্য মৈত্রী আর ভালবাসার বন্ধনে। এ উৎসবে থাকবে না কোন ভেদাভেদ। থাকবে না ধনী-দরিদ্র, শ্রমিক-মালিক, রাজা-প্রজার ব্যবধান। কিছু সময়ের জন্য হলেও এই ব্যবধান বিলীন হয়ে যাবে সকল মুসলমানদের কাছ থেকে। ইট পাথরের গড়া যান্ত্রিক নগরী ঢাকা ক্ষণিকের জন্য হলেও থমকে দাঁড়াবে।

ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে ঢাকার মানুষ নাড়ির টানে ছুটে চলেছে গ্রামে। ইতোমধ্যেই ঘরমুখো মানুষদের সঠিক গন্তব্যে নিতে সড়ক, নৌ ও রেলপথের যানবাহন হিমশিম খাচ্ছে। ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পয়েন্টে পয়েন্টে বসানো হয়েছে চেক পোষ্ট।

অপরদিকে মানুষের ঈদ আনন্দে পূর্ণমাত্রা যোগ করতে নতুন নতুন পন্যে সাজিয়ে তুলেছে রাজধানীর বিপণী বিতাণগুলো। ঈদ নিজের মতো করতে উদযাপন করতে ক্রেতারা ভিড় করছে রাজধানীর এসব অভিজাত মার্কেটগুলোতে।

সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নিজেকে নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে। বিপণী বিতানগুলোরও বিকিকিনি চলছে পুরোদমে। ক্রেতারা নিজের পছন্দমতো পোশাক কিনতে এক বিপণী বিতান থেকে অপর বিপণী বিতান চষে বেড়াচ্ছেন। আবার কেউ কেউ যাচ্ছেন ফ্যাশন হাউস গুলোতে।

এবারের ঈদের অন্যতম আকর্ষন কোরবানীর পশু কেনা। আর এ জন্য ক্রেতারা ভিড় করছেন গরুর হাটগুলোতে। কে কতো বেশী টাকা দিয়ে পশু কিনতে পারবে এ নিয়ে ধনীদের মধ্যে জমে উঠেছে প্রতিযোগীতা।

ঈদ উপলক্ষে সরকারী-বেসরকারী অফিস আদালত বন্ধ ঘোষণা করা হবে। দেশের কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে ঈদ করতে অনেকেই বাড়ি গিয়েছেন যাদের বাড়ী ঢাকা থেকে একটু দূরে তাদের ঈদের আনন্দটা একটু অন্যরকম।

একটু কষ্টকর আবার একটু সুখেরও বটে। অনেকদিন পর তারা মিলিত হবে পরিবারের সদস্যদের সাথে। তাদের জন্য ঈদটা কষ্টকর এই অর্থে যে- বাড়ি যাওয়ার আগে তাদের জন্য রয়েছে অনেক প্রতিকূলতা। আর তার অন্যতম হলো টিকিট পাওয়ার সমস্যা। যারা ইতোমধ্যেই টিকিট করে রেখেছেন- তারাই একমাত্র নিশ্চয়তা দিতে পারে পরিবারের সদস্যদের সাথে আনন্দ উপভোগ করার।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিবারের মত এবারো ঈদ করব পরিবারের সদস্যদের সাথে। ঈদের শপিং কিছু করা হয়েছে কিছু বাদ আছে। শপিং করা শেষ হলেই ভালভাবে ঈদটা উদযাপন করতে পারবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী সৈকত বলেন, বাড়ী যাওয়ার জন্য অনেক কষ্ট করে টিকিট পেয়েছি। এখন ভালমত ফিরতে পারলেই হয়। আশা করি পরিবারের সদস্যদের সাথে এইবারের ঈদ করতে পারব।

ঈদের বন্ধের কারণে ক্যাম্পাসগুলোর উপর নির্ভরশীল রিক্সা, দোকানদার ও চা বিক্রেতাদের ঈদ আনন্দ অনেকটা কমে এসেছে। অনেকদিন আগেই ক্যাম্পাসে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের উর্পাজন নেই।  

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আফম কামাল উদ্দিন হলের সামনে চায়ের দোকানদার নাহিদ জানান, ঈদের কারণে ছাত্ররা বাড়ি চলে যাওয়ায় বেচাবিক্রি নাই বলেই চলে। কিন্তু ক্যাম্পাসে কয়েকজন ছাত্র থাকায় দোকান খোলা রাখতে হচ্ছে।

বাড়ি যাওয়ার টিকিট না পাওয়া- এক শিক্ষার্থী বলেন, টিকিট না পাওয়ায় এবার মনে হয় বাড়ি যাওয়া হবে না। এক ভাইকে টিকিট ব্যবস্থা করতে বলেছিলাম কিন্তু তিনি করতে পারেননি। তাই ইচ্ছে থাকলেও বাড়ি যেতে পারছি না। আর বাড়ি দূরে হওয়ায় আরো বেশি সমস্যা। কাছে হলে লোকাল বাসে যেতে পারতাম। কিন্তু বাড়ি দিনাজপুরে হওয়ায় সেখানে লোকাল বাসের প্রশ্ন আসে না।

ঈদ আমাদের সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল শান্তি। ধনী-দরিদ্র ব্যাবধান কিছু সময়ের জন্য হলেও আমাদের মাঝ থেকে বিলীন হয়ে যাক। সকল হিংসা বিদ্বেষ অতিক্রম করে ঈদ হোক শান্তিময় ও সুখকর এই প্রত্যাশায় সবার।

বাংলাদেশ সময় : ১০৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১২
এআর/সম্পাদনা : সুকুমার সরকার, কো-অর্ডিনেশন এডিটর
Kumar.sarkerbd@gmail.com

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।