ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২০ মে ২০২৫, ২২ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

সিলেটে একের পর এক পর্যটন আকর্ষণ বাড়ছে

কবে হচেছ পর্যটন নগরী?

সাব্বির আহমদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:০৭, অক্টোবর ৩১, ২০১২
কবে হচেছ পর্যটন নগরী?

সিলেট: সিলেটে একের পর এক বাড়ছে পর্যটন আকষর্ণ। অনিন্দ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার হিসেবে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে সিলেটের নতুন নতুন জায়গা।

এরই ধারবাহিকতায় দেশে নতুন করে পরিচিত হয়ে উঠা একমাত্র জলার বন রাতারগুলে ঈদপরবর্তী চারদিনে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছেন।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিনই অসংখ্য পর্যটক ছুটে আসছেন সিলেটে। পর্যটন স্পট ছাড়াও নানা প্রাকৃতিক মনোমুগ্ধকর পরিবেশে অবসর বিনোদন করছেন তারা। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে সিলেটের অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে হযরত শাহজালাল (র.) ও হযরত শাহপরাণের (র.) মাজার, প্রকৃতিকন্যা জাফলং, মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত আর নয়নাভিরাম চা বাগান তো রয়েছেই।

এছাড়াও পর্যটক ছুটছেন জলারবন রাতারগুল, খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান ও মালনীছড়াসহ অর্ধশতাধিক আকর্ষণীয় স্থানে।

তবে এখনো পর্যটন নগরী হিসেবে সিলেটকে ঘোষণা করা হয়নি। দেশে পর্যটন
আকর্ষণে সিলেটের স্থান দ্বিতীয় হলেও পর্যটন নগরী ঘোষণার দাবি দীর্ঘদিন থেকে উপেক্ষিত হচ্ছে। পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রাকৃতিক দিক থেকে সিলেট একটি পর্যটন সমৃদ্ধ জেলা। দিন দিন পর্যটনে এই জেলায় আরো নতুন নতুন সম্ভাবনা জেগে উঠছে।

তবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যথাযথ সংস্কার, তথ্য সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার অভাবে সিলেটের পর্যটন খাত অবহেলার শিকার এমন কথাও জানিয়েছেন তারা।

এবার ঈদুল আজাহায় সিলেট ঘুরতে আসা পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চা বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে গিয়ে পর্যটকদের যথেষ্ট হয়রানিতে পড়তে হচ্ছে। চা বাগানে পর্যটকদের বিশেষ নিরপাত্তা সুবিধা না থাকায় ভেতরে বেশি সময় অবস্থান করা যায় না।

দেশের প্রথম চা বাগান মালনিছড়াসহ সিলেটে রয়েছে ১শ ৩৫টি চা বাগান। কিন্তু এসব চা বাগানের কোনোটিরই নির্ধারিত কোনো গাইড নেই।

এছাড়াও সিলেটের জকিগঞ্জে তিন নদী সুরমা-কুশিয়ারা-বরাক মোহনার নয়নাভিরাম দৃশ্য পৃথিবীতে বিরল। এরকম দৃষ্টি-সুখকর স্থানের প্রচার নেই। সরকারি উদ্যোগের অভাবে পর্যটন স্পট হিসেবে এর প্রসার পিছিয়ে আছে।

হযরত শাহ্ জালাল (র.) ও শাহ পরাণের (র.) মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যেই শুধু প্রতিদিন দেশ-বিদেশের হাজার হাজার পর্যটক সিলেটে আসেন।
 
সিলেট চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমদ মিছবাহ সিলেটকে পর্যটন নগরী ঘোষণার দাবি জানিয়ে বাংলানিউজকে বলেন, “পর্যটন নগরী ঘোষণা করা হলে সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোর যেমন উন্নয়ন হবে তেমনি নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাও প্রদান করা যাবে পর্যটকদের। বিভিন্ন পণ্যে ভ্যাট কমে যাবে। এতে সিলেটের ব্যবসায়ীরা ও সিলেটবাসীসহ দেশ উপকৃত হবে। ”
 
আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হলিডে রিসোর্ট নাজিমগড় রিসোর্টের স্বত্ত্বাধিকারী নাজিম কামরান চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, “যেসব পর্যটন স্পট সিলেটে রয়েছে এগুলোর যথাযথ তত্ত্বাবধান নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ” সরকার বিষয়টি সম্পর্কে এখনো বেখবর বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে, সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির পরিচালক ও সিলেট পর্যটন ফাউন্ডেশনের জয়েন্ট সেক্রেটারি তাহমিন আহমেদ বলেন, “সিলেটের পর্যটন শিল্প দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। পর্যটকদের থাকা-খাওয়া, ঘুরে বেড়ানো, নিরাপত্তাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বেড়েছে। ”
 
পর্যটন সংক্রান্ত্র সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি বাংলানিউজকে বলেন, “সিলেটকে বিশ্বের অন্যতম পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে। এ লক্ষ্যে বিটিভির কারিগরি সহযোগিতায় ও মন্ত্রনাণলয়ের উদ্যোগে সম্প্রতি সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যময় স্থান, এতিহ্য মণ্ডিত স্থানগুলোর ভিডিওচিত্র ধারণ করে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করা হয়েছে। ”

সিলেটে অব্যাহতভাবে পর্যটক বাড়ছে জানিয়ে বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের সদস্য ডা. জাকারিয়া আহমদ বলেন, “পর্যটক বাড়লেও বিদেশি পর্যটক আকষর্ণে যেসব সুবিধা থাকা প্রয়োজন সেগুলো পর্যাপ্ত নয়। “

এরপরও পর্যটন আকষর্ণ বাড়ার সাথে সাথে পর্যটনে বিনিয়োগও বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়:  ১৬৫৬ ঘণ্টা, ৩১ অক্টোবর, ২০১২
এসএ/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।