ঢাকা, সোমবার, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ২১ জুলাই ২০২৫, ২৫ মহররম ১৪৪৭

ফিচার

আগ্রহই উদ্যোগের জনক: লিলিস

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:০৪, নভেম্বর ৩, ২০১২
আগ্রহই উদ্যোগের জনক: লিলিস

কেভিন লিলিস। একজন উদ্যোক্তা।

জন্ম ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৮। লিলিস ডেস জ্যাম রেকর্ডিংসের সহ-সভাপতি হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। এখন লিলিস কেডব্লিউএল এন্টারপ্রাইজের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহীর কাজ করছেন। এ প্রতিষ্ঠান মূলত যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ব্র্যান্ড ডেভেলপমেন্টে কাজ করে।

জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে কেভিনের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য এ প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরা হলো।

নেতৃত্বের যোগ্যতা কেমন হওয়া উচিত?

শুরুতেই ব্যর্থতার গল্প বলি। জীবনের শুরুতে হিপহপ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক হওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু এ পেশায় কোনোভাবেই চাকরির সুযোগ হচ্ছিল না। সারাদিন ভাবতাম, চাকরির বাজারে আসলে কি করবো? আমার ভেতরের প্রতিভাকে কিভাবে বাণিজ্যিক করে তুলব এটা নিয়েই ভাবতে শুরু করলাম।

এক সময় সিদ্ধান্ত নিলাম এসব ভেবে লাভ নেই। নিজেকে বাণিজ্যিক করার প্রতিভা আগে অর্জন করতে হবে। এ বিষয়ে শেখা উচিত। আর তা শিখতেও শুরু করলাম। ক্রমেই নিজেকে আলাদা করে ফেল‍ার কৌশল রপ্ত করলাম। অন্যের চেয়ে কিভাবে আলাদা এ বিষয়েও আমি সুস্পষ্ট ধারণা পেলাম। একজন মানুষকে কিভাবে মুগ্ধ করতে হয়, সে প্রতিভা নিজ থেকেই গড়ে উঠল আমার ভেতরে।

মনে করুন, আমি এ প্রতিষ্ঠানে সরাসরি অধিনস্ত হয়ে কাজ করছি। অফিসের একজন প্রধান সম্পর্কে আমার কোন বিষয়গুলো জানতে হবে?  

আপনাকে একটি প্রতিষ্ঠানে নেওয়ার মানে হলো, আপনার স্বভাবের কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে মুগ্ধ হয়েছি বলেই সরাসরি আমার তত্ত্ববধানে আপনি থাকছেন। এ সুযোগের গুরুত্ব আপনাকে বুঝে নিতে হবে। এরপরের দায়িত্ব আপনার।

আমি কি পছন্দ করি, অপছন্দ করি, পছন্দের কাজগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। এগুলো একদিনেই জানতে হবে তা নয়। ধীরে ধীরে জেনে নেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকতে হবে।

হয়ত আপনি আমাকে অপছন্দ করবেন। আমার কাজ আপনার ভালো নাও লাগতে পারে। তাই বলে, আপনার কাজের গুরুত্ব যে আমার কাছে কমে যাবে তা নয়। আমি শেষ পর্যন্ত চাইব আমার প্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ কাজটি আপনিই করবেন।  

কাজের পরিবেশে কোন ধরনের স্বভাবকে আপনি সহ্য করতে পারেন না।

আগ্রহের অভাব বোধটা আমি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। ভুল সহ্য করা যায়। কিন্তু অনাগ্রহ সহ্য করা যায় না। আজ পর্যন্ত যতজনকে চাকরিচ্যুত করেছি; তার একমাত্র কারণ ছিল আগ্রহের অভাব।

কোনো কাজের প্রতি যদি একজন মানুষের ভালোবাসা থাকে, তবে সে কাজের প্রতি অবশ্যই আগ্রহী হবে। আগ্রহের কাজেই ভুল হবে। আমিও চাই সবাই ভুল করুক। ভুল করলেই নতুন কিছু শেখা বা করার পথ তৈরি হয়।

কৌতুহলী বা আগ্রহী স্বভাবের মানুষ কি সহসাই দেখতে পান?

খুব যে দেখতে পাই তা কিন্তু নয়। কিন্তু ধরুন যারা নিজের ব্যবসা দাঁড় করানো চেষ্টা করে, তারা তো আগ্রহ থেকেই শুরু করেছে। সুতরাং সে কাজের প্রতি তার ভালোবাসা আছে, ত্যাগ আছে। সে জন্যই তো নিজেই উদ্যোক্তা। যে মানুষ নিজের অনেক ইচ্ছাকে ত্যাগ করে তারা তো একদিন সফল হবেই। আমি মনে করি, নেশাকে বহু মানুষই পেশা হিসেবে নিয়েছেন।  

আপনি লোক নিয়োগের সময় প্রথম কি দেখেন?

শুরুতেই সিভি দেখি। সিভিতে অনেকেই দূর্বল। সিভির মাধ্যমেই একজন মানুষকে আমি প্রথম দেখি। তাই সিভিতে এমন কিছু থাকতে হবে, যা দেখে মুগ্ধ হয়ে যাবো। তার প্রতি প্রথম বিশ্বাসটা সিভি দেখেই আসে। এরপর কথা বলে বোঝার চেষ্টা করবো তার আগ্রহের বিষয় সম্পর্কে। মোট কথা আমি একজন সচেষ্ট যোদ্ধা চাই। যে প্রতিদিন, প্রতি সেকেন্ড নিজেকে সেরা প্রমাণ করবে। প্রমাণ করতে না পারলেও চেষ্টা করবে। চেষ্টাটাই বড়। সারাদিন ঘুমাবে এমন কাউকেই আমি পছন্দ করি না।

চাকরির ইন্টারভিউয়ে আপনার পছন্দের প্রশ্নগুলো কি?

প্রথম প্রশ্নই করি, তোমার জীবনের উদ্দেশ্য কি? আবার প্রশ্ন করি, তোমার পরিবার সম্পর্কে বলো। সত্যি কথা হলো, আমি বিশ্বাস করি, একজন দায়িত্বশীল বাবাই অসাধারণ কর্মী হওয়ার যোগ্যতা রাখে। একজন অসাধারণ মা একটি প্রতিষ্ঠানের অসাধারণ কর্মী হতে পারবেন। ছুটির দিনে আপনি যদি সমাজের কোনো কাজে না এসে শুধু ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেন, তবে জীবনে স্যাক্রিফাইস বলতে আসলে কিছুই থাকে না।

অনুবাদ: শেরিফ আল সায়ার

বাংলাদেশ সময় ১৬৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১২
সম্পাদনা: সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।