আব্দুল্লাহ আল দৌসারি জীবনের সিংহভাগ কাটিয়েছেন অর্থোপার্জনে। সাধারণ একজন সৌদি নাগরিক হিসেবে মেষপালন আর ভাঙ্গারি কেনা-বেচার ব্যবসা করে তিনি সঞ্চয় করেন ৮লাখ সৌদি রিয়াল।
অশীতিপর আব্দুল্লাহর জন্য সবচেয়ে হতাশাজনক বিষয়টি হল, আদালত রয়েছে তার ছেলেদের পক্ষে। ওয়াদি আল দাওয়াসির কেন্দ্রীয় শহরের আদালত তার সব সহায় সম্পত্তির ওপর পুত্রদের পূর্ণ আইনগত অধিকার নিশ্চিত করে রায় দিয়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে বিচারক এই বিষয়টি ভাবেনি যে, এরকম হলে বয়সের ভারে ন্যুব্জ আব্দুল্লাহকে সন্তানরা চাইলেই পথের ভিখিরিতে পরিণত করতে পারে। এবং দুর্ভাগ্যজনক হলো— বাস্তবে ঘটেছে তাই।
আব্দুল্লাহর প্রাপ্তবয়স্ক ৫পুত্র সম্প্রতি আদালতে দাখিল করা আর্জিতে জানায়, তাদের পিতা বয়সজনিত কারণে উন্মাদে পরিণত হয়েছেন। এ কারণে তিনি তার সমস্ত অর্থ-কড়ি সম্পদ নষ্ট করে ফেলতে পারেন বলে তারা উদ্বেগে আছে।
আদালতের কার্যক্রম চলাকালে আব্দুল্লাহ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং টানা ৪মাস এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে দৌড়াদৌড়িতে কাটে। ওদিকে আদালত পুত্রদের পক্ষে রায় দিয়ে বলেন, তার অর্থকড়ির কর্তৃত্ব সন্তানদের হাতে থাকবে। রায় হওয়ার পর পিতা হিসেবে ভৎর্সনা করে ছেলেদের মতি ফেরাতে চাইতেই উল্টো ফল হয়— ক্রুদ্ধ সন্তানরা বাপকে একেবারে বাড়ির বার করে দেয়।
“তারা আমাকে এই বয়সে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমি জানি না কোথায় যাবো, কোথায় থাকবো আর কী খাবো? আমাকে উন্মাদ প্রচার করে তারা আমার মেষগুলো, ভাঙ্গারি মালামাল আর টাকা লুটে নিয়েছে। এরপর তারা আমাকে আমারই বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে,” অভিমানাহত কণ্ঠে সংবাদ মাধ্যমকে জানান আব্দুল্লাহ দৌসারি।
তিনি আরও বলেন, “আমাকে মানসিকভাবে অসুস্থ দাবি করে ৪মাস ধরে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে টানা-হেঁচড়া করেছে। তারা আমার অসুস্থতা আর অশীতিপর বয়সকে পুঁজি করেছে। আমি সুস্থ অবস্থায় বেঁচে থাকা সত্ত্বেও ছেলেরা আমার সম্পত্তির মালিক হতে চেয়ে এসব করেছে। ”
দৌসারির এখন বেশিরভাগ সময় কাটছে মসজিদে ঘুমিয়ে আর পথে পথে উদ্দেশ্যহীন ঘোরাফেরা করে। তিনি সৌদি সরকারের কাছে ন্যায় বিচারের আকুতি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, ১২ নভেম্বর, ২০১২
একে