বাংলাদেশের প্রযুক্তি বিষয়ে তরুণ প্রতিভার খোঁজে হয়ে গেল অ্যাপলিকেশন তৈরি প্রতিযোগিতা। এথিকস অ্যাডভ্যান্সড টেকনোলজি লিমিটেডের উদ্যোগে এ আয়োজনে ২০০ প্রকল্প জমা পড়ে।
এ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সমন্বয়ে গঠিত দলটি দ্বিতীয় এবং মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি তৃতীয় স্থান অধিকার করে। বিজয়ী দলগুলো যথাক্রমে ৫ লাখ, ২ লাখ এবং ১ লাখ টাকা জিতে নেয়।
তারুণ্যের এ সৃষ্টিশীল প্রতিযোগিতায় সেরা তিন বিজয়ীদের নিয়েই স্বপ্নযাত্রার এ বিশেষ আয়োজন।
শিক্ষার্থীদের জন্য ‘কোর্স মেট’
দুই বন্ধু সাকিবুল

রাকিব আরও বলেন, এটি শুধু মোবাইলে নয়- কেউ চাইলে তথ্যগুলো অনলাইনেও সংরক্ষণ করতে পারবেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যলয়ের এ দুই বন্ধু পড়ছেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। তাদের চেষ্টা আরও বৃহৎ। তারা বলেন, আমরা ভবিষ্যতে ইউনিভার্সিটি সার্ভারের সঙ্গে অ্যাপটি সংযুক্ত করে দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাহলে ইউনিভার্সিটির সব আপডেট মোবাইলে সংরক্ষণ হয়ে যাবে।
কোর্স মেট অ্যাপটি শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাসের সময়সূচি, অ্যাসাইনমেন্ট সহ নিজেদের দৈনন্দিন সব কাজের পরিকল্পনাও তৈরি করতে পারবেন। শিক্ষার্থীদের নিজেদেরই আপডেট করতে হবে তথ্যগুলো। এ অ্যাপটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করারও অপশান রেখেছে ডালভিক কোডার্স দল।
জরুরী প্রয়োজনে ‘ফাইন্ড ফর মি’

মোফিজুল বাংলানিউজকে জানায়, আমরা মূলত দুটি সার্ভিস দেওয়ার চেষ্টা করেছি। একটি হলো ইমার্জেন্সি এবং দ্বিতীয়টি হলো ট্যুরিস্ট সার্ভিস। ধরুন কেউ বিপদে পড়লো তখন তার ফোন করার মতো অবস্থা নেই। দ্রুতগতিতে তার কোনো ব্যবস্থা নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে এ অ্যাপটি মোবাইলে থাকলে ওয়ান টাচ বাটন দিয়ে সেবা নিতে পারবে। সেই বাটনে চাপ দেওয়া সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ আত্মীয়ের কাছে জরুরী সব মোবাইল নম্বরগুলো ম্যাসেজ আকারে চলে যাবে। তার মধ্যে থাকবে- হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশের। এতে আত্মীয় জানতে পারবে যে আপনি বিপদে পড়েছেন। এজন্য ব্যবহারকারীকে তার আত্মীয়র নম্বর ফোনে সেটিংসে গিয়ে সেইভ করে রাখতে হবে।
এছাড়াও অন্য আরও সেবা আছে এ অ্যাপে। যেমন, কারও হুট করেই টাকার দরকার। সে জানে না আশেপাশে এটিএম বুথ কোথায় আছে। এ অ্যাপটি তখন নিকটস্থ এটিএম বুথ কোথায় তা একদম ম্যাপ করে দেখিয়ে দেবে। আবার কেউ গাড়ি চালাচ্ছেন। হুট করেই প্রয়োজন গ্যাসের। গাড়ি চালক জানে না নিকটস্থ গ্যাস স্টেশন কোথায়। এ অ্যাপ তখন এ তথ্যটিও বলে দিবে। ম্যাপ তো দেখাবেই সঙ্গে কত কিলোমিটার দূরে সেটিও বলে দেবে।
মোফিজুল ইসলাম বলেন, আমাদের অ্যাপটি কমিউনিটি নির্ভর। ব্যবহারকারীদেরই আপডেট করতে হবে। তবে তারা আপডেট দিলে আমাদের মোডারেশন টিম তথ্য যাচাই করে দেখবেন। সঠিক তথ্য হলে সেটা অ্যাপে আপডেট করে দেওয়া হবে।
রক্তের প্রয়োজনে ‘সেইভ লাইফ’

কারও জরুরী ভিত্তিতে রক্তের প্রয়োজন। ঠিক সে মুহূর্তে কাজে দেবে সেইভ লাইফ অ্যাপটি। সার্চ অপশনে গিয়ে রক্তের গ্রুপ লিখে দিলেই লিস্ট বেরিয়ে আসবে। যেখানে রক্তদাতার সবধরনের তথ্য দেখা যাবে। তাদের জরুরী ভিত্তিতে ম্যাসেজ দেওয়ার কাজটিও করবে সেইভ লাইফ। এছাড়াও এ অ্যাপটিতে দেশের সব ব্লাড ব্যাংকগুলোর তথ্য সংরক্ষণ করবে।
ইশতিয়াক বাংলানিউজকে বলেন, ব্লাড ব্যাংক, ব্লাড ডোনার এবং যাদের ব্লাড দরকার তাদের সব তথ্য সংরক্ষণ ও সংগ্রহ করে এ অ্যাপটি কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, ধরা যাক কারো এ পজিটিভ রক্তের প্রয়োজন। তখন যার রক্ত প্রয়োজন তিনি অ্যাপের সার্চ অপশনে গিয়ে এ প্লাস লিখে দিলেই রক্ত দাতাদের সব তথ্য পেয়ে যাবেন। এমনকি তার নিকতস্থ রক্ত দাতার তথ্যও পেয়ে যাবেন। এতে হন্যে হয়ে রক্ত খুঁজতে হচ্ছে না।
সেইভ লাইফ অ্যাপটি সম্পূর্ণ কমিউনিটি নির্ভর অ্যাপ। তবে ইশতিয়াক জানিয়েছেন, এটি এখন আমাদের নিজস্ব কমিউনিটিতে পরিচালিত করছি। ভবিষ্যতে অন্যসব কমিউনিটির জন্য খুলে দেওয়া হবে। এতে অ্যাপের গুরুত্ব ও ব্যবহার দুটিই বেড়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৩