ঢাকা: শাহবাগের গণজাগরণ চত্বর মধ্যরাতে যেন গণবিছানায় পরিণত হয়। এ সময় সেখানে জেগে থাকেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার মধ্যরাতে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, গণজাগরণ মঞ্চে ২৩ জন, নিচের রাস্তায় বিজ্ঞাপনের কাপড়ে ৩৫ জন এবং আশপাশের এলাকা মিলে প্রায় শতাধিক ভাসমান মানুষ ঘুমিয়ে রয়েছেন। মানুষগুলোর বড় একটি অংশ লুঙ্গি গায়ে জড়িয়ে ঘুমাচ্ছেন।
শুধু তারা কেন? কয়েকটি কুকুরও তাদের কাছ ঘেঁষেই ঘুমাচ্ছেন মঞ্চের কাছেই।
পুলিশ সদস্যরা জানান, প্রায় প্রতিরাতেই এ চিত্র দেখা যায়। সারাদিন এই মানুষগুলো দূরে থাকেন, খাবার সংগ্রহ করেন, রাত যতো বাড়ে ততোই তারা মঞ্চের কাছে চলে আসেন।
অদূরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক’জন শিক্ষার্থীকে দেখা গেল আড্ডা দিতে। পুলিশ সদস্যদের ক’জন মোবাইলে হারানো দিনের গান শুনছেন।
শাহবাগের ফুলের দোকান এই রাতেও খোলা রয়েছে। পরদিনের জন্য মালা ও অন্যান্য ফুল-সামগ্রী বানাতে খোলা রাখা হয়েছে এগুলো।
যে কিশোররা সারাদিন ফুল বিক্রিতে ব্যস্ত সময় কাটায়, মধ্যরাতে রাস্তা ফাঁকা পেয়ে তারাই মেতে উঠেছে ক্রিকেট খেলায়।
সব মিলিয়ে পুরো এলাকায় যেন অদ্ভুত এক মায়াময় পরিবেশ। তাই দেখতে দু’একদিন পরপর মাঝরাতে শাহবাগে চলে আসেন মেরুল বাড্ডার নাসরিন সুলতানা ও তার পরিবার। স্বামী ও একমাত্র ছেলেকে নিয়ে এখানে এসে কিছুক্ষণ সময় কাটাতে ভালো লাগে তার।
“যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া গণজাগরণ চত্বরে যারা স্লোগান শুনেই অভ্যস্ত, তাদের জন্য এ চিত্র একদমই অন্যরকম”- বলেন নাসরিন।
তিনি বলেন, “ক’টি দিনে শাহবাগের রূপ পুরোই বদলে গেছে। গণজাগরণ হওয়ার আগে একরকম, গণজাগরণের শুরুতে ভিন্নরকম, আর এখন আরও ভিন্নরূপ দেখতে পাচ্ছি। ভাবতে ভালো লাগছে, একটা ইতিহাসের সাক্ষী হলাম আমরা। এখন বিচারটা ঠিকঠাক হয়ে গেলেই হয়। ”
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৩
এসকেএস/সম্পাদনা: আবু হাসান শাহীন, নিউজরুম এডিটর