ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

স্মার্ট খবর দিয়েই ইয়াহু জয়

স্বপ্নযাত্রা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৩৩, এপ্রিল ১৮, ২০১৩
স্মার্ট খবর দিয়েই ইয়াহু জয়

গত বছর সামলি অ্যাপ তৈরি করেই প্রযুক্তিবিশ্বে আলোচনায় উঠে আসের ১৭ বছরের তরুণ নিক ডি অ্যালিওসিও। এ অ্যাপ তৈরি করে নিক অনুদান পান ১০ লাখ ডলার।

নতুন করে নিক আলোচনায় এসেছেন ইয়াহুর কারণে।

মাত্র ১৭ বছর বয়সেই আরেক প্রযুক্তিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ইয়াহুতে কাজ করতে যাচ্ছেন নিক। সংবাদ পড়ার অ্যাপলিকেশন সামলি কিনে নিয়েছে ইয়াহু। প্রথমবার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন নিক। নিজের তৈরি সামলি এবং ইয়াহুতে যোগ দেওয়া নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন নিক ডি অ্যালিওসিও।

সামলি কি এবং কেন এটা তৈরির ভাবনা এল?

গত দুবছর ধরে সামলি তৈরিতে সময় নিয়েছি। এটি মূলত নতুন প্রযুক্তি। সহজভাবে বলতে গেলে, সামলি বড় যে কোনো লেখার সারমর্ম।

একটু ব্যাখ্যা করে বললে এমন, ফোনের স্ক্রিনে কিছু পড়বেন। কিন্তু সময় খুব কম। কম সময়ের মধ্যে বড় লেখা পড়া সম্ভব না। ঠিক তখনই সামলি সময় বাঁচিয়ে দিবে।

এ ভাবনাটা গত তিন-চার বছর মাথায় ঘুরছিল। তৈরি করতে গিয়ে দেখি এ জন্য কম্পিউটার প্রোগ্রামিং জানার প্রয়োজন। তখন নিজেই তা শিখে ফেলি। সুতরাং সামলির পেছনে অনেক কষ্ট ও অধ্যাবসায় জড়িয়ে আছে।  

তার মানে স্ব-শিক্ষায় শিক্ষিত?

তা নয়। নিজেই শিখেছি এবং শিখছি। আমি প্রতিনিয়ত নতুন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করি। কাজ শিখি। আর প্রযুক্তি নিয়ে আমার আগ্রহ তৈরি হয় বয়স যখন ১২।

শুরুতে অ্যাপেল অ্যাপ স্টোরে গিয়ে অ্যাপ তৈরির পদ্ধতি জেনে নেই। উত্তর আসে প্রোগ্রাম। কিন্তু আমি তো এগুলো পারি না। এ সময় অনলাইনে থাকা পড়াশোনার বিভিন্ন রিসোর্স আমাকে সাহায্য করে।

অনলাইনে বসেই পড়াশোনা করি। প্রায় ছয় মাস পর প্রথম একটি অ্যাপ তৈরি করি। মজার বিষয় হলো আমার তৈরি প্রথম অ্যাপটি অ্যাপ স্টোরে প্রথম সারির ৩ হাজার অ্যাপের মধ্যে একটি।

এত দ্রুত শেখা সম্ভব?

স্কুলের পড়াশোনায় একটু অনিহা আছে। তারপরও আমি গ্রীষ্মে এ কাজটি করি। আমি চার, পাঁচ সপ্তাহ ব্যয়ে একটি অ্যাপ তৈরি করি। সারারাত বসে শিখতাম, কাজ করতাম। ভোর চারটা পর্যন্তও কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। তখন বাসার সবাই বকা দিত। বলতো, তুমি অনেক ছোট। মাত্র ১৩ বছর বয়স। এতো কম বয়সে এতো রাত জাগ‍া ঠিক নয়।

ইয়াহুর সঙ্গে চুক্তি সম্পর্কে কিছু বলুন।

২০১২ সালের নভেম্বরে সামলি অ্যাপ স্টোরে আসে। প্রথম থেকেই ব্যাপক সাড়া ফেলে সামলি। এ অ্যাপ ১০ লাখবার ডাউনলোড হয়। অ্যাপ স্টোরে ডাউনলোড ভালো দেখে হংকং থেকে ধনকুব লি কু সিং আমাকে ফোন করেন। বলেন, আপনার সঙ্গে মিটিং করতে চাই। সময় দিন। ভালো হয় যদি কাল সকাল ১১টায় মিটিংটি ঠিক করা যায়।

আমি তাদের বললাম, কাল ১১ টায় সম্ভব না। আমার স্কুল আছে। এটি শুনে ফোনের ওপাশ থেকে বিস্ময়কর কণ্ঠ ভেসে আসে। বলল, স্কুল! এটি কি কলেজ নাকি পোস্ট গ্রেড!
আমি বললাম, না স্কুল। হাই স্কুল।

এটি শুনে তারা অবাক হয়ে যায়। ভাবে আমাদের মা-বাবার সঙ্গে দেখা করবেন। কিন্তু পরে মারিসা মায়েরের সঙ্গে দেখা হয়। তার নাম অনেক শুনেছি। তিনি গুগলে ১২ বছর ছিলেন। এখন ইয়াহুর প্রধান নির্বাহী। অসাধারণ মানুষ। তার সঙ্গে আমার তৈরি সামলি থাকবে। এটা ভাবতেই গর্ব হয়।

এখন তো তার সঙ্গেই কাজ করবেন। ইয়াহুতে কি কাজ করবেন?

আমি মূলত ইয়াহুর লন্ডন অফিসে কাজ করব। তারা একটি মোবাইল হাব তৈরি করতে চাচ্ছে। আমার কাজ হলো, সামারাইজ করার এ প্রযুক্তিকে আরও শক্তিশালী করা। দৈনন্দিন জীবনে চলতে গিয়ে যত ধরনের টেক্সট পড়তে হয় সব কিছুর সারমর্ম যাতে সামলি তৈরি করতে পারে এ বিষয়ে কাজ করা।

ইয়াহু এখন স্মার্ট প্রজন্মের জন্য ভাবছে। এ প্রসঙ্গে কিছু বলতে চান?

আমি বিশ্ব বদলে যাওয়া দেখি। প্রকাশকদের দেখেন। তারা শুরু করে প্রিন্ট দিয়ে। এখন হলো অনলাইন। একখণ্ড কাগজের জায়গা দখল করে নিয়েছে কম্পিউটারের ডেস্কটপ স্ক্রিন। ৪০০ বছরের পুরোনো এবং জনপ্রিয় একটি পাঠমাধ্যম কাগজকে টিকে থাকার লড়াইয়ে মুখোমুখি করে বর্ণিল এ স্ক্রিন।

তবে মোবাইলের স্ক্রিন এখন সহজেই বহনযোগ্য। কনটেন্ট এখন কাগুজে বইয়ে নয়, উঠে আসছে স্মার্ট স্ক্রিনে। একেই বলে ‘প্রযুক্তির বিপ্লব’।

অনুবাদ: শেরিফ আল সায়ার

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৩
সম্পাদনা: সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।