ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

বাংলানিউজকে বোমাং রাজকন্যা

প্রথাগত নিয়মেই নারীকে ডমিনেট করা হয়েছে

আসিফ আজিজ ও মীর সানজিদা আলম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:২৮, এপ্রিল ২১, ২০১৩
প্রথাগত নিয়মেই নারীকে ডমিনেট করা হয়েছে

বান্দরবান থেকে ফিরে: ডনাই প্রু নেলী। বোমাং রাজপরিবারের সর্বশেষ (১৬তম) রাজা ক্য সাইন প্রু চৌধুরীর (কেএস প্রু) কন্যা।

সম্প্রতি এই ভাগ্য বিড়ম্বিত রাজকন্যার সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের।

টানা তিন ঘণ্টার কথোপকথনে উঠে আসে বোমাং রাজ পরিবারের তিনশ’ বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতির জানা-অজানা নানা দিক। ফুটে ওঠে এই মানবাধিকার কর্মীর লড়াকু জীবনের অনেক অজানা চিত্র। আসে মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গ, আঞ্চলিক রাজনীতির চালচিত্র। ব্যক্তিগত আবেগ-অনুভূতি আর সমষ্টিগত স্বার্থ চিন্তার অনেক সুচিন্তিত বিশ্লেষণও উঠে আসে রাজকন্যার সহজ-সরল-সাবলীল বক্তব্যে। বাদ যায় না উত্তরাধিকার নিয়ে পারিবারিক জটিলতাজনিত হতাশা-হাহাকার-আক্ষেপ। অপ্রাপ্তি আর ভাগ্য বিড়ম্বনার বেদনা কখনো জলের ধারা হয়ে নামে বোমাং রাজজন্যার চোখে। পরক্ষণেই অশ্রুর বেগজয়ী চোখে ফুটে ওঠে রাজপরিবারের ঐতিহ্য ধরে রাখার দৃঢ় প্রত্যয়। ফাঁকে ফাঁকে রাজপরিবারের জনহিতৈষী কাজের নাতিদীর্ঘ ফিরিশতিও তুলে ধরেন তিনি।

বাংলানিউজের পক্ষে তার সাক্ষাৎকারটি নেন নিউজরুম এডিটর আসিফ আজিজ ও মীর সানজিদা আলম। তাদের সঙ্গে আলোকচিত্রী ছিলেন স্টাফ ফটো করেসপন্ডেন্ট নূর এ আলম

পাঠকদের সুবিধার জন্য দীর্ঘ সাক্ষাৎকারটির তৃতীয় পর্ব প্রকাশ করা হলো রোববার।

বাংলানিউজ: আমরা জানি আপনি মানবাধিকার নিয়ে, বিশেষ করে নারী অধিকার নিয়ে কাজ করেন। নিজের কাজে কতোটুকু সন্তুষ্ট?

নেলী: মানবাধিকার নিয়ে যারা কাজ করে তাদের কেউ গোনে না, কিন্তু আমি খুব প্রাউড ফিল করি যে আমি একজন মানবাধিকার কর্মী। বিগত পাঁচ বছরে প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘুরে বান্দরবানে আমি যে কাজগুলো করেছি সেগুলো সহজে কেউ করতে পারবে না। প্রশাসনকে আমাদের ডাকতেই হয়।

বাংলানিউজ: মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার আগ্রহটা কোথায় কবে কার কাছে পেলেন?

নেলী: আমার সবকিছুতেই অনুপ্রেরণা আমার বাবা। ১৯৯৭ এর দিকে আমার প্রথম মনে হয় মানুষের জন্য কিছু করা দরকার। আমি ঘর থেকে বের হওয়া শুরু করলাম। বাবা-মাকে দেখেছি মানুষের জন্য কিছু করার চিন্তা-চেষ্টা করতেন। বাবা-মায়ের এই মমতা আমার মানসিকতাকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে যায়।

আমি তখন অনেক ছোট। ক্লাস টু কি ফাইভে পড়ি। তখন দেখতাম অনেকের ঘরে গোলাপ ফুল বা নায়ক-নায়িকার ছবি টানানো। আমি একদিন বাবাকে বললাম, বাবা আমাকে তুমি গোলাপ ফুলের ছবি এনে দাও। বাবা বললেন, ঠিক আছে।

বাবা একদিন চিটাগাং গেলেন। ফেরার সময় দেখি হাতে কি একটি মোড়ানো। আমার হাতে দিলেন। আমি তো খুব খুশি। কিন্তু খুলে দেখে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম। বললাম এটা কার ছবি এনেছ? বাবা হাসলেন। তারপর ফ্রেস হয়ে আমাকে কোলে বসিয়ে বললেন, ফেলে দিলি ক্যান? আমি বললাম তুমি তো আমার জন্য একটা বুড়ির ছবি এনেছ। এটা কোনো ছবি হলো। আমি তো তোমার কাছে ফুলের ছবি চেয়েছি, সুন্দর মেয়ের ছবি চেয়েছি। তখন বাবা আমার গালটা ধরে বললেন, এই বুড়িটার নাম কি জান, বুড়িটা সুন্দর না? আমি বললাম মোটেও সুন্দর না, ভ্রু কোঁচকানো, সাদা শাড়ি পরা...। তখন আমার বাবা আমাকে চিনিয়ে দিলেন ইনি হচ্ছেন মাদার তেরেসা। মাদার তেরোসাটা কে, উনি কি করেন?  বাবা বুঝিয়ে  বললেন- তুই এর মতো হবি। এরপর  আমি বললাম, এটা ভালো তো।

বাবা তখন একটি উক্তি বলেছিলেন মাদার তেরেসার, ‘আপনি যদি বিশ্বাস করেন, প্রার্থনা করবেন, আপনি যদি প্রার্থনা করেন, ভালোবাসবেন, আর যখন মানুষকে ভালো বাসবেন তখন মানুষকে সেবাও দান করতে পারবেন। ’

সেই ছোট্ট বেলায় বাবা আমাকে শুনিয়েছিলেন। আমি এখনো কিন্তু এই উক্তিটা জপে মানবাধিকার বক্তৃতা শুরু করি। এটা আমার অনুপ্রেরণা। ’৯৭ থেকে যখন আমার মনে হচ্ছিল আমি কিছু করবো, কিন্তু বুঝে উঠতে পারছিলাম না আমি কি করবো। বাবা আমাকে বলেন নি- এটা কর। বাবা বলতেন- তোর মন কি বলে। আমি আস্তে আস্তে কীভাবে যেন জড়িয়ে গেলাম সমাজকর্মে।

আমি অনেক লাকি যে ’৯৯ সালে ঢাকার মানবাধিকার কমিশন কার্যালয় থেকে মহাসচিব আমার নামে একটা চিঠি পাঠালেন। আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম। ভয়ে চিঠিটা খুললাম না, খুললেন বাবা। তারপর বললেন- মা তোকে তো দেখি বান্দরবানের মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বানিয়েছে।

তখন থেকে আমি কাজ করছি। আমাকে কার্যালয় থেকে কোনো ফান্ড দেওয়া হয়নি। কিন্তু এই ১4 বছরে আমি হাজার হাজার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। অন্ত শ’দু’য়েক মানুষের ঘরকে এক জায়গায় করেছি, চার-পাঁচশ’ নারীর জীবন বদলে দিয়েছি।

nellyবাংলানিউজ: আমরা প্রিন্সেস ডায়নাকে দেখেছি কীভাবে সারা বিশ্বের মানুষের জন্য কাজ করেছেন। আমাদের দেশের ছোট একটি সার্কেলের হলেও আপনিও তো প্রিন্সেস। মানুষের জন্য কাজ কতোটা উপভোগ করছেন?

নেলী: আমি যখন নারীদের বিষয়গুলো নিয়ে এমপি বা অন্যদের কাছে যাই, সবাই হাসে। বলে- আপনার এগুলো ছাড়া আর কাজ নেই। আপনি প্রিন্সেস ডায়নার কথা বললেন। বাবা যখন রাজা হলেন তখন আমি হয়ে গেলাম প্রিন্সেস। প্রিন্সেস নেলী। আমি যখন অবরোধ করি তখন ওসি আমাকে বলেন- ম্যাম, রাজকন্যারা রাজপথে বসে থাকে না। তারা থাকে রাজপ্রাসাদে। আমি বললাম- প্রিন্সেস ডায়নাও রাজকন্যা ছিলেন, কিন্তু উনি প্রিন্সেস হয়ে থাকতে চান নি বলেই মানুষের সেবা করতে চেয়েছেন। তাই রাস্তায় নেমেছিলেন। আর আমি তো একালের বাংলাদেশের মেয়ে, তাও আবার বোমাং সারকেলের মেয়ে। আমাদের আবার রাজকন্যা বলে কিছু আছে নাকি!

বাংলানিউজ: পার্বত্য চট্টগ্রামে নারীর অবস্থানটা আসলে কোথায়?

নেলী: বলতে গেলে তো অনেক কথা বলতে হয়। আসলে অনেক শিকল আছে। প্রথমত বলব, আমাদের প্রথাগত কিছু নিয়ম আছে। আমাদের প্রত্যেকটা জনগোষ্ঠীর প্রথ‍াগত কিছু আইন-নিয়ম আছে সেগুলো ভাঙতে হবে। প্রথাগত নিয়মেই নারীকে ডমিনেট করা হয়েছে। একটা উদাহরণ দিই।

আমার স্বামী মারা গেলে সঙ্গে সঙ্গে আমার চুলটা ছেড়ে ফেলতে হবে। স্বামীর দাহ না হওয়া পর্যন্ত চুলে আমি চিরুনি দিতে পারবো না, চুবাঁধতে পারবো না। আমার বাবা মারা যাওয়ার পর মায়ের বয়স সত্তর, চুলও লম্বা, মা কিন্তু ১৬ দিন চুলে চিরুনি দিতে পারেন নি।

এ ব্যবস্থা কিন্তু গৌতমবুদ্ধ করে যাননি, এটা করেছি আমরা। এরকম প্রথ‍াগত অনেক নিয়ম আছে যেগুলো নারীদের সবসময় ডমিনেট করে। নারীদের কাপড় উপরে নাড়া যাবে না, মিটিং করতে পারবে না। একজন মানুষ মরে গেলে লাশের পেছনে আমাদের নারীরা থাকে। কিন্তু লাশটাকে পোড়ানো হবে, না কবর দেওয়া হবে সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়, ক্ষমতায়নের সময় কিন্তু নারীদের রাখা হয় না। রান্না করবো আমরা, কিন্তু রান্নার উপদান কি হবে সেটা ঠিক করবে পুরুষরা। এই প্রথা ভাঙতে হবে। নারীদের পায়ে এক ধরনের শিকল পরিয়ে রাখা হয়েছে।

তবে আমরা আশাহত না, একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছি। তিন পার্বত্য এলাকার কোথায় নারীরা এখন নেই দেখেন। আমরা প্রশাসনে আছি, এনজিওতে কাজ করছি, নারী উদ্যোক্তা তৈরি করছি। আমি নিজেই নারী উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য একটি রেস্টুরেন্ট দিয়েছি। রাজনীতিতেও নারীরা আছে।
অবরোধের সময় আমার পাশে অনেক নারী ছিলো। ওই অবরোধটা ইতিহাস, তিন পার্বত্য জেলার নারীদের আধাবেলা অবরোধ। আমরা সারা বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ, নির্যাতনের প্রতিবাদে আধাবেলা এ অবরোধ করেছি।

বাংলানিউজ: পাহাড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য কে দায়ী? পাহাড়ি না বাঙালি, নাকি উভয় পক্ষই?

নেলী: আসলে বাঙালি দায়ী এভাবে বলবো না । তাহলে সব বাঙালিকে বুঝানো হয়। এখানে রাজনৈতিক কিছু ইস্যু দায়ী। আসলে দায়ী বহিরাগত, বিশেষ করে সেটেলাররা।

বাংলানিউজ: সেটেলারদের সমস্যাগুলো কি ধরনের?

নেলী: যদি আমাকে বলা হয়, তোমাকে অমুকখানে সেটেলার হিসাবে পাঠানো হবে। আমি তো যাব না। সেটেলার কারা হয়? যাদের কিছু নেই তারা। আমরা তো বলি না যে, এখানে বাঙালি আসবে না, বাঙালি ঢুকতে পারবে না। কিন্তু ভালো মানুষ আসুক। এসে বান্দরবানকে, পার্বত্য চট্টগ্রামকে কিছু দেওয়ার চেষ্টা  করুক, নিজেও কিছু নিক।

আর আমরা মারমারা খুব ইগোইস্টিক। পেছনে লেগে থেকে কোনো কাজ করতে পারি না। চুপ করে থাকি। চাকমারা পারে।   তাদের লিড দেওয়ার মেন্টালিটি আছে। বাট আমাদের কমিউনিটির সেটা নেই।
 
তারওপর আমরা পাহাড়িরাও তো সবাই ভালো মানুষ না। পাড়িদের মধ্যে রেপ ওয়ার্ডটা আগে ছিলো না । এখন কিন্তু পাহাড়িরা রেপ করছে।

বাংলানিউজ: তাহলে পাহাড়ি-বাঙালিতে তফাৎটা কোথায়?

নেলী: আসলে গোটা বাংলাদেশেই নারীদের অবস্থা এক। কিন্তু যারা সংখ্যালঘু তাদের উপর আরও বেশি অত্যাচার হয়। তাদের অবস্থা আরও বেশি নাজুক।

বাংলানিউজ: নারীদের নিয়ে কাজ করেন। কোনো বঞ্চনার শিকার হতে হয় কি?

নেলী: বান্দরবান আমাকে অনেকবার কলঙ্কিনী করেছে। আমার নামে লিফলেট বের করেছে। আমি নাকি নারীদের নিয়ে দেহ ব্যবসা করি। আরও অনেক খারাপ খারাপ কথা বলেছে। ভেবেছে এটা বললে আমি দমে যাব। আমি চিনি, জানি তারা কারা, কিন্তু আমি তাদের কিছু বলি না। তাদের কাজ তারা করে। আর আমার কাজ আমাকে করে যেতে হবে। আমি শক্তি পাই সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। যখন তারা আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে বলে- দিদি আপনি চুপ হয়ে গেলে আমাদের কি হবে?

পাহাড়ি জনগোষ্ঠী এত অসচেতন যে তারা নিজেদের অধিকার সম্পর্কেও সচেতন নয়। আমরা বছরের পর বছর শুধু তাদের মধ্যে সচেতনতার বোধ জাগ্রত করেছি।
 
nellyএর সফলতাও আমরা পেয়েছি। যাদের সমিতির ৮ জন নারী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার প্রার্থী ছিল। এর মধ্যে ৬ জন নির্বাচিত হয়ে বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার। এ নারীদের আমি হাউজওয়াইফের রোল থেকে বের করে এনে সমিতি করে দিয়েছি। সঞ্চয় করা শিখিয়েছি। তাদের মানবাধিকার কাকে বলে, নারীর অধিকার কি, পরিবারে তাদের অধিকার কিভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে তা জানিয়েছি। এরপর তাদের ইলেকশনে দাঁড় করিয়েছি। আমার এটা স্বপ্ন যে, আমি নিজে না হলেও অন্য কোনো নারীকে বান্দরবান পৌরসভায় দাঁড় করাবো। টুডে অর টুমরো।

বাংলানিউজ: নারীদের নিয়ে  কাজ কর‍ার নেটওয়ার্ক কেমন?  

নেলী: একটা উদাহরণ দেই, আমার এটা মেয়ে আছে যে হারিয়ে গিয়েছিলো। ওর মা ওকে এক বাসায় কাজ করতে দিয়েছিলো চট্টগ্রামে। পরে ওই মেয়েটাকে আমি উদ্ধার করেছি ফরিদপুর থেকে। আমার শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। আর একটা মেয়ে আছে যাকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিলো পতিতা বানানোর জন্য। আমি তাকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার করেছি বেনাপোল থেকে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া আমার অনেক নেটওয়ার্ক আছে। তাদের মাধ্যমেই আমি এ কাজগুলো করি। আমাদের নারী বিষয়ক নেটওয়ার্ক অনেক স্ট্রং। পার্বত্য চট্টগ্রামে নারীদের নিয়ে কোনো কাজ করলে আমাকে জানাতে হবে। আমি কাউকে ছেড়ে কথা বলি না। তা সে যেই হোন না কেন।

বোমাং ‍রাজপরিবারের ইতিহাস সংক্ষেপ
১৭২৭ সালে বোমাংগ্রী (মহাসেনাপতি) কাংহ্লাপ্রু তার অনুসারীদের নিয়ে সাঙ্গুনদীর তীরবর্তী বান্দরবানে বসতি গড়ে তোলেন। ১৮৭৫ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে শাসন পরিচালনা করেন পাঁচজন বোমাংগ্রী। ১৯০০ সালে বোমাংগ্রী সানাইঞোর আমলে ‘চিটাগাং হিলট্রাক্টস রেগুলেশন ১৯০০’ প্রণয়নের মাধ্যমে ডেপুটি কমিশনারের পাশাপাশি সার্কেল চিফ, মৌজা হেডম্যান, কারবারি, রোয়াজা ইত্যাদি পদ সৃষ্টি করে রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব সার্কেল চিফকে দেওয়া হয়।

বান্দরবান ও রাঙামাটির কিছু অংশ নিয়ে বোমাং সার্কেল,  রাঙামাটিতে চাকমা সার্কেল এবং খাগড়াছড়ি জেলায় মং সার্কেল গঠন করা হয়। তখন থেকে সার্কেল চিফরা রাজা হিসেবে পরিচিত। রাজারা নিজ এলাকার মানুষের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সম্মানিত ব্যক্তি।

২০১৩ সাল পর্যন্ত বোমাং সার্কেলে দায়িত্ব পালন করেছেন ১৬ জন রাজা। সর্বশেষ রাজা ছিলেন সদ্যপ্রয়াত ক্য সাইন প্রু চৌধুরী। রাজা অং শৈ প্রু চৌধুরী মারা যাওয়ার পর ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাজকীয় অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে রাজা ক্য সাইন প্রু চৌধুরী বান্দরবান বোমাং সার্কেলের ১৬তম রাজা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। গত ৬ ফেব্রুয়ারি নিজ বাসভবনে ১৬তম এ রাজা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

বোমাং সার্কেল এখন ১৭তম রাজার অভিষেকের অপেক্ষায়। ১৬তম রাজা ক্য সাইন প্রু চৌধুরীর (কেএস প্রু) কন্যা ডনাই প্রু নেলীর চাচাত ভাই ইঞ্জিনিয়ার উ চ প্রু-র রাজা হিসাবে অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে  আগামী ২৪ এপ্রিল।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৩
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।