ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

ফরচুনে সেরা নারী নির্বাহী হোয়াইটম্যান

স্বপ্নযাত্রা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:৩৬, মে ১১, ২০১৩
ফরচুনে সেরা নারী নির্বাহী হোয়াইটম্যান

ফরচুনের চোখে সেরা নারী প্রধান নির্বাহীদের তালিকায় নির্বাচিত হয়েছেন মেগ হোয়াইটম্যান। তিনি তথ্যপ্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিউলেট-প্যাকার্ডের (এইচপি) প্রধান নির্বাহী হিসেবে কর্মরত আছেন।



হোয়াইটম্যানের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৫৪ সালের ৪ আগস্ট। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী হোয়াইটম্যান কোল্ড স্প্রিং হার্বার হাই স্কুলে সবসময় সেরাদের তালিকায় ছিলেন। স্বপ্ন দেখতেন চিকিৎসা পেশায় এসে মানুষের সেবা করবেন।

সে লক্ষ্যেই ছোটবেলা থেকেই গণিত ও বিজ্ঞানের প্রতি তীব্র আগ্রহ অনুভব করতেন। তবে বড় হয়ে চিন্তার গতি বদলে গেলো। তিনি প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে গণিত বিভাগে পড়া শুরু করলেন। কিন্তু এক বছর না যেতেই গণিতের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। চলে গেলেন ইকনোমিক্স বিভাগে। এই বিষয়েই ১৯৭৭ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।

কর্মজীবন শুরু করেন ১৯৭৯ সালে একটি প্রতিষ্ঠানে ব্র্যান্ড ম্যানেজার হিসেবে। নিজের যোগ্যতায় খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ওই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন।

হোয়াইটম্যানের জীবনের মোড় ঘুরে যায় বেচা-কেনার জনপ্রিয় অনলাইন শপ ইবে-তে যোগ দিয়ে। মাত্র ৩০ জনের দল নিয়ে তখন ইবে এগিয়ে যাচ্ছে। ছোট্ট প্রতিষ্ঠান। সে প্রতিষ্ঠানে প্রধান নির্বাহী হিসেবে যোগ দেন হোয়াইম্যান। দশ বছরে এর জনপ্রিয়তা অন্যরকম উচ্চতায় নিয়ে যান। ১৯৯৮ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ইবে’র জনবল হয় ১ হাজার ৫০০ এবং লাভ করে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এ সফলতার কারণ হিসেবে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি এসেই দক্ষ জনবল গড়ে তোলার চেষ্টা করি। নেতৃত্ব বের করে আনার প্রয়াসও ছিল। সে লক্ষ্যেই ৩৫ হাজার সাব-ক্যাটাগরি দল তৈরি করি। প্রত্যেকটি ক্যাটাগরির একজন করে নেতা ছিল। তাদের নেতৃত্বে প্রতিটি দল এগিয়ে যাচ্ছিল। এতে করে প্রতিযোগিতাও তৈরি হয়। প্রতিটি দল নিজেদের যোগ্য প্রমাণের চেষ্টা করে। যার ফলাফল স্বরূপ প্রতিষ্ঠান লাভ করতে শুরু করে।

ইবে’র ভেতরের কোন্দলের জের ধরে ২০০৭ সালেই পদত্যাগ পত্র জমা দেন হোয়াইটম্যান। তবে বোর্ড তার পদত্যাগ পত্র সে বছর গ্রহণ করেনি। শেষ পর্যন্ত ২০০৮ সালে এসে হোয়াইম্যান বলেন, আমি মনে করি একটি প্রতিষ্ঠানে ১০ বছর প্রধানের পদে কাজ করার পর নতুন কিছু করার থাকে না। নতুন কিছু করতে হলে প্রয়োজন নতুন নেতৃত্ব।

তার এ বক্তব্যের পর ২০০৮ সালে পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করা হয়।

হোয়াইটম্যান জনপ্রিয় এইচপি প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন ২০১১ সালে। জানুয়ারির শুরুতে যোগ দিলেও তখনও প্রধান নির্বাহী পদে তিনি ছিলেন না। কয়েকমাস যেতেই সেপ্টেম্বরে হোয়াইম্যানকে হিউলেট-প্যাকার্ডের নতুন প্রধান নির্বাহী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

প্রধানের পদে বসেই এইচপির গবেষণা দলের দিকেই বেশি মনোযোগ দেন হোয়াইটম্যান। তার মতে, প্রতিটি কাজ গবেষণার পরই করা উচিত।

তখন ডেস্কটপ কম্পিউটার বাজার হারাতে শুরু করে। ল্যাপটপ এবং স্মার্টফোনের কাছে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো মার খেতে থাকে। ঠিক সে সময় হোয়াইটম্যান দায়িত্ব পেয়ে কিছুটা হিমশিম খেতে থাকেন। কিন্তু ব্যবসায়ীক বুদ্ধিমত্তায় তিনি এখনও এইচপিকে বাজারে সফলভাবে টিকিয়ে রেখেছেন। ঠান্ডা মাথার হোয়াইটম্যান এখনও বাজারে দাপটের সঙ্গে টিকিয়ে রেখেছেন এইচপিকে।

এইচপি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৩৮ সালে। শুরু থেকেই প্রযুক্তিবাজারে অত্যন্ত প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু মাঝ পথে বিপর্যয়ের শিকার হলেও হোয়াইটম্যানের দক্ষতায় পুরানো দাপট ফিরে পেয়েছে এ প্রতিষ্ঠানটি। এজন্যই প্রভাবশালী ম্যাগাজিন ফরচুনের সেরা নারী নির্বাহীদের তালিকায় উচ্চ অবস্থানে আছেন মেগ হোয়াইটম্যান।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৩
সম্পাদনা: শেরিফ সায়ার, বিভাগীয় সম্পাদক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।