বান্দরবান থেকে ফিরে: কানে বাহারি দুল। তাও আবার কানের প্রায় এক ইঞ্চির বেশি জায়গাজুড়ে ছিদ্র করে গাঁথা।
বিবরণ শুনে মনে হবে, যেন র্যাম্পে হাঁটার জন্য প্রস্তুত কোনো মডেল।
তবে, এ বর্ণনার পর যদি নারীটিকে দেখেন জলে, তবে কেমন হবে আপনার অনুভূতি!
সাঙ্গুর স্বচ্ছজলে আমাদের নৌকা তখন এগুচ্ছে মৃদু গতিতে। আচমকা জমকালো গহনায় সজ্জিত কোনো নারীকে ডুবজলে দেখে আমরা বেশ অবাকই হলাম। নৌকার গতি আরও কমাতে বললাম। একটু কাছাকাছি গেলাম কথা বলা ও ছবি তোলার জন্য। কথা হয়তো বলতেন, কিন্তু যেই ক্যামেরা দেখলেন- অমনি শুরু করলেন চিৎকার চেঁচামেচি। কিন্তু ততক্ষণে ক্যামেরার সাটার চালিয়ে দিয়েছেন নূর ভাই।
আপন মনে বেশ তো ছিলেন। কিন্তু ক্যামেরা দেখেই কেন এমন করলেন তা জানতে চাইলাম পাশে বসা গাইড মংকে। মং যা বলল তা শুনে আমাদের তো আক্কেলগুড়ুম । তারা নাকি বলেছে “আমরা এখন জলে। আমাদের সুন্দর লাগছে না। ছবি তুলো না। ”
কোনো এক কবি লিখেছিলেন, ‘জলাঙ্গী জীবনে জলজ অনুবন্ধ অতি গভীর। ’
জলের সঙ্গে পাহাড়ি নারীর এই সখ্য দেখলে কবির কথা সত্য মেনে যাবেন।
যদি যেতে চান বান্দরবান: ঢাকা থেকে বান্দরবানের উদ্দেশে শ্যামলী, হানিফ, ঈগল, সৌদিয়াসহ বেশ কয়েকটি পরিবহনের গাড়ি সকাল ৭টা- ৯টা এবং রাত ১০টা-১২টার মধ্যে কলাবাগান, ফকিরাপুল, সায়েদাবাদ থেকে ছেড়ে যায়। ভাড়া জনপ্রতি ৬২০ টাকা। সময় লাগবে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা। বান্দরবান থেকে থানচি পর্যন্ত গাড়ি ভাড়া জনপ্রতি ২০০ টাকা। সময় লাগবে সাড়ে চার ঘণ্টা।
থানচি থেকে তিন্দু, রেমাক্রি, নাফাকূম, ছোটমোদক, বড় মোদক পর্যন্ত টানা নৌকা ভাড়া পড়বে দুই থেকে নয় হাজার টাকা। সময় লাগবে ৪ থেকে ১০ ঘণ্টা। আর ইঞ্জিন নৌকায় ভাড়া পড়বে ৪ থেকে ১২ হাজার টাকা। সময় লাগবে ২ থেকে ৭ ঘণ্টা। তবে মৌসুম ভেদে নৌকা ভাড়া বাড়ে ও কমে। এছাড়া প্রতিদিন পাঁচশ’ টাকা চুক্তিতে অবশ্যই নিতে হবে একজন গাইড।
বান্দরবানে থাকার পর্যাপ্ত হোটেল রয়েছে। এসব হোটেলে ২০০ থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত রুম ভাড়া পাওয়া যাবে। এছাড়া কটেজ ভাড়া নিয়েও থাকতে পারেন। খাবারেরও সমস্যা নেই। থানচি বাজারের পর যেখানেই যাবেন আপনাকে কারবারি বা কারও বাড়িতে থাকতে ও খেতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনাকে সব সহযোগিতা করবে গাইড।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩৬ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৩
জেডএম/