ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

ই-কনটেন্ট দিয়েই সেরা!

স্বপ্নযাত্রা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:৪৯, মে ২৫, ২০১৩
ই-কনটেন্ট দিয়েই সেরা!

এক নতুন জগতের নাম ‘অনলাইন’। এ জগতে টিকে থাকতে প্রয়োজন কনটেন্ট।

ই-কনটেন্ট দিয়েই তৈরি হচ্ছে নিত্য-নতুন ওয়েবসাইট। বিশেষ করে সংবাদমাধ্যমগুলো এগিয়ে আসছে দুরন্ত গতিতে। প্রত্যেকেই সংবাদ মুহূর্তেই ছড়িয়ে দিচ্ছে বিশ্বব্যাপী।

এসব উদ্যোগ পৃথিবীকে বদলে দিচ্ছে। যদিও অনলাইন উদ্যোগ টিকিয়ে রাখা খুব কঠিন। বিজ্ঞাপণের জন্য প্রয়োজন ভালো এবং মানসম্পন্ন কনটেন্ট।

সেদিকে নজর দিয়েই সম্প্রতি প্রভাবশালী পত্রিকা ফরচুন লাভজনক অনলাইন পোর্টাল নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। সেখানে প্রথমেই জায়গা করে নিয়েছে হাফিংটনপোস্ট এবং দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছে গসিপ পোর্টাল গকার.কম।

এ দুই সফল উদ্যোগ এবং উদ্যোক্তাদের নিয়েই স্বপ্নযাত্রার এ বিশেষ প্রতিবেদন।
aaa-2201
আরিয়ানার হাফিংটনপোস্ট:  
হাফিংটন পোস্ট বর্তমান সময়ে আলোচিত ওয়েবসাইট। বিশ্বব্যাপী ধীরে ধীরে অত্যন্ত প্রভাবশালী ওয়েবসাইটে পরিণত হচ্ছে। হাফিংটন পোস্টকে অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ব্লগও বলা চলে। যদিও এর সূত্র ব্লগ থেকেই।
আলোচিত এই অনলাইন পোর্টাল ২০০৫ সালের ৯ মে যাত্রা শুরু করে। এর প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন আরিয়ানা হাফিংটন। প্রগতিশীল আরিয়ানার জন্ম গ্রিসে ১৯৫০ সালে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ব্রিটেনে চলে আসেন। সেখানে গার্টন কলেজ থেকে ইকোনোমিক্সে পড়াশোনা শেষ করেন।

পড়াশোনা শেষ করে ১৯৭১ সালের দিকে হুট করেই গানের প্রতি ঝুকে পড়েন। বিশেষ করে সেসময়কার জনপ্রিয় সাংবাদিক বার্নাড লেভিনের সঙ্গ পেয়ে গান লেখার প্রতি তীব্র ঝোঁক তৈরি হয়। লেভিনের নির্দেশনায় সংগীত নিয়েই লেখালিখির হাতিখড়ি হয় আরিয়ানার। একসঙ্গে কাজ করতে করতে লেভিনের প্রেমে পড়ে যান আরিয়ানা হাফিংটন।

প্রেমে পাগল আরিয়ানা সংসার বাঁধারও স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু লেভিন বিয়ের প্রতি তেমন আগ্রহী ছিলেন না। অবশেষে ক্ষোভে দুঃখে লেভিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের ইতি ঘটান আরিয়ানা।

তবে এক সাক্ষাৎকারে লেভিন সম্পর্কে আরিয়ানা বলেন, তিনি শুধু আমার ভালোবাসা না। তিনি আমার শিক্ষক। যার কাছ থেকে লেখালিখির হাতে খড়ি হয়েছে। যিনি আমাকে ভাবতে শিখিয়েছেন। তার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

মাত্র ৩০ বছর বয়সে ব্যর্থ প্রেমিকা আরিয়ানা চলে আসেন নিউইয়র্ক। তখন আশির দশক। বিশ্বব্যাপী চলছে পরিবর্তনের হাওয়া। ঠিক তখনই লেখালিখেতে আরও ভালোমত মনোযোগ দেন আরিয়ানা। পাবলো পিকাসোকে নিয়ে অসাধারণ এক বায়োগ্রাফি ‘পিকাসো: ক্রিয়েটর অ্যান্ড ডিসট্রয়ার’ বই লিখেই আলোচনায় চলে আসেন আরিয়ানা হাফিংটন।

লেখার ধারা বদলে এরপর শুরু করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষণমূলক লেখা। তাকে নিয়ে শুরু হয় আরও তোলপাড়। বিশেষ করে নব্বই দশকের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদদের কাছে আরিয়ানা হাফিংটন হয়ে ওঠেন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। অন্যদিকে রেডিওতে ‘বোথ সাইড নাও’ অনুষ্ঠানটি আরিয়াকে দর্শক জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যায়।

লেখালিখি, রাজনৈতিক বিশ্লেষণ দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এক অন্যরকম ব্যক্তিত্বে পরিণত হন আরিয়ানা হাফিংটন।
 
দীর্ঘ সময় পর ২০০৫ সালে সাধারণ কলামিস্টদের লেখার প্ল্যাটফর্ম তৈরির উদ্দেশ্যেই শুরু করেন হাফিংটনপোস্ট। মাত্র ১ বছরের মাথায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ব্লগটি। তখন নতুন করে ভাবেন আরিয়ানা। এটিকে সর্বসাধারণের কাছে আরও জনপ্রিয় করতে তিনি বিশ্বব্যাপী প্রদায়ক নিয়োগ করতে স্বচেষ্ট হন।

২৪ ঘণ্টার অনলাইন পোর্টাল করার কথাও ভাবেন। এসময় তার অন্য বন্ধুরাও আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে পাশে এসে দাঁড়ান। যুক্ত হয় ২৪ ঘণ্টা সংবাদ, ভিডিও রিপোটিং, ভিডিও ব্লগিং। মজবুত হয় পাঠক ও লেখক চক্র। যার কারণেই ২০১২ সালে পুলিৎজার পুরস্কার জিতে নেয় এ অনলাইন মাধ্যম।

যার হাত ধরে প্রভাবশালী এ অনলাইন মাধ্যমের যাত্রা শুরু তিনিও হয়ে ওঠেন জনপ্রিয়। বিশ্বমিডিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব আরিয়ানা হাফিংটন। যার হাতে আছে লেখক এবং অসংখ্য পাঠক। যিনি বিশ্বাস করেন, অনলাইন কনটেন্ট দিয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যাওয়া যায়। এজন্যই অনলাইন কনটেন্টের গুরুত্ব বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি।

এ সম্পর্কে আরিয়ানা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, পাঠক যখন লেখক হয়ে ওঠে তখন বিশ্ব বদলাতে বাধ্য। হাফিংটনপোস্ট পাঠককে লেখক হিসেবে কথা বলার সুযোগ করে দেয়। এটি বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতিতে অসাধারণভাবে প্রভাব বিস্তার করে।
aaa-1201
নিকের গকার.কম:
আজকের গসিপ কালকের সংবাদ। এটি বিশ্বাস করে ‘গকার.কম’ গসিপ পোর্টাল। গকার মিডিয়া যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি অনলাইন উদ্যোগ। এটি বলা হয়, ব্লগ নেটওয়ার্ক। একইসঙ্গে বিশ্বের প্রথম সফল ব্লগ যা থেকে ৮টি ব্লগের জন্ম হয়েছে। একটি নেটওয়ার্কের আওতায় এতোগুলো ব্লগ সচরাচর দেখা যায় না। বিশ্বব্যাপী এ অনলাইন পোর্টালের পাঠক সংখ্যা ১৫০ মিলিয়ন।

যাইহোক, গকারের প্রতিষ্ঠাতা এবং সম্পাদক নিক ডেনটন। নিজের ঘরে বসেই নিক শুরু করেন গকার মিডিয়া। সেটাও ২০০২ সালের ঘটনা। ব্রিটিশ সাংবাদিক এবং অনলাইন উদ্যোক্তা হিসেবে যথেষ্ঠ জনপ্রিয়তা রয়েছে ডেনটনের।

তাকে অনেকেই সাহসী অনলাইন উদ্যোক্তা হিসেবেও উল্লেখ করেন। কারণ হলো- শুরু করার পর টানা ১ বছর নিজের ব্যক্তিগত খরচেই চালিয়েছেন গকার.কম। এরপর বিজ্ঞাপণ দিয়ে এগিয়ে যেতে পেরেছেন নিক।
লোকবল নিয়োগ করাও সম্ভব হয়েছে নিকের। এবছর পর্যন্ত গকারের লোকবল সংখ্যা ১৫০জন। বর্তমান সময়ে শুধু বিজ্ঞাপণই নয়, ই-কমার্স নিয়ে কাজ করছে অনলাইন পোর্টালটি।

ভবিষ্যতে জনপ্রিয়তার স্থানটি ধরে রাখতে অবিরামভাবে নিত্য-নতুন সব আইডিয়া কাজ করছে এ পোর্টালটি।
নিক এ সম্পর্কে বলেন, খুব শিগগিরই আমরা ‘কিনজা’ নামে আরও একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে যাচ্ছি। এখানে আলোচনার নতুন মাত্রা যোগ করা হবে। যেখানে সম্পাদক, সাংবাদিক, পাঠক এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ কথা বলবেন। প্রত্যেকেই জবাব দেবেন। নিজের মতামত প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করবেন। এটি হবে অনলাইনের নতুন মাত্রা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৩
সম্পাদনা: শেরিফ সায়ার, বিভাগীয় সম্পাদক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।