ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

‘অভিজাতপাড়ায় অপরাধ কম, আছে গাড়ি চুরি’

সাজেদা সুইটি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬:১৯, জুন ৬, ২০১৩
‘অভিজাতপাড়ায় অপরাধ কম, আছে গাড়ি চুরি’

ঢাকা: ‘রাজধানীর অভিজাত পাড়াগুলোতে অপরাধ অনেক কমেছে। এখনো কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে।

তবে সেটাও খুব বেশি নয়’- এই দাবি পুলিশের। অবশ্য তাদের বক্তব্যেই এসেছে, গাড়ি ও মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা সম্প্রতি বেড়েছে।
 
বুধবার রাতে রাজধানীর কয়েকটি থানায় সরেজমিনে গিযে এ তথ্য পাওয়া যায়। রাতের ডিঊটিতে ব্যস্ত প‍ুলিশ সদস্যরা বাংলানিউজকে সবাই প্রায় একই রকম বক্তব্য দেন।
 
এ সময় ভাটারা থানায় দায়িত্বে ছিলেন এস আই সিরাজুল ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে জানান, বিগত কিছুদিন থেকেই তেমন কোনো বড় কেস (ঘটনা) পাওয়া যায়নি। কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে মোটর সাইকেল বা গাড়ি চুরির। তাও খুব বেশি নয়।
 
তিনি বলেন, ‘‘ইদানিং গাড়ি বা মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা বেশি দেখছি। ’’
 
গুলশান থানায় দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা এস আই খন্দকার নাইম ও মাহবুব হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই তেমন কোনো কেস পাননি তারা।
 
নাইম বলেন, ‘‘ইদানিং কাজের চাপ কম। বড় কোনো অঘটন ঘটেনি। তবে টুকটাক গাড়ি চুরি, মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা রয়েছে। ’’
 
তিনি বলেন, ‘‘এই সমস্যাটি দেখতে গোয়েন্দা বিভাগের নির্ধারিত ইউনিট রয়েছে। প্রয়োজনে তাদের এই ‘গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সাহায্য আমরা নিয়ে থাকি। ’’
 
বনানী থানায় রাতে কর্তব্যরত এএসআই অলিউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘ অপরাধ কমে গেছে। এই মাসে একটি মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা পেয়েছি, তাও উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ’’
 
অপরাধ কম হওয়ার পেছনে এসব কর্মকর্তা সার্বিক সুব্যবস্থাপনার কথা জানান। তারা জানান, অভিজাত পাড়া বলে পরিচিত এই এলাকাগুলোয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমসময় জোরদার থাকে বলেই অপরাধের সুযোগ কম।
 
অলিউল্লাহ বনানী এলাকা সম্পর্কে বলেন, ‘‘এখানে ‍অনেকগুলো রাস্তা থাকে বন্ধ। জায়গায় জায়গায় চেকপোস্ট থাকে। প্রতিরাতে গড়ে ৪টা টিম কাজ করে। তাই অপরাধের মাত্রা এতো কম। ’’
 
নাইম বলেন, ‘‘গুলশান কূটনৈতিক পাড়া। স্বাভাবিকভাবেই এখানে নিরাপত্তাও বেশি। চেকপোস্টসহ গড়ে ১৬-১৭টি টিম কাজ করে। তাই অপরাধ কম। ’’
 
মাহবুব বলেন, ‘‘গুলশান এলাকায় ১০টি মোবাইল টিম ও ১১টি চেকপোস্ট কাজ করে। এর মধ্যে ২-৩টি হয়তো কখনো বন্ধ থাকে। তবে সব মিলিয়ে এলাকার নিরাপত্তা ঠিক থাকে। ’’
 
সিরাজুল বলেন, ‘‘এখানে ৪টি মোবাইল টিম রাতে কাজ করে। এজন্য অপরাধের সংখ্যা যথেষ্ট কমেছে। ’’
 
থানাগুলোতে টাঙানো অপরাধীদের ছবি লক্ষ্য করলেও দেখা যায়, এর মধ্যে ‘গাড়ি চোর’ পরিচয়ের অপরাধীর সংখ্যা বেশি। সঙ্গে আছে মাদক-অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের ছবিও।
 
গুলশান থানায় ২৫-২৬ বছর বয়সী কয়েকজন যুবকের আনাগোনার কারণ জানতে চাইলে নাইম জানান, তাদেরকে (যুবক) অনেকগুলো বিয়ারসহ ধরা হয়েছে। তারা এগুলোর রশিদ বা প্রয়োজনীয় কাগজ দেখাতে পারছে না। তাদের বক্তব্যও সুস্পষ্ট নয়।
 
এমন ঘটনাকে তারা ততোটা গুরুত্ব দেন না বলে জানান উপস্থিত আরেক পুলিশ সদস্য(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)।
 
তিনি বলেন, ‘‘টুকটাক এমন ঘটনা পাওয়া যায়। বড়লোকের ছেলেপিলে এরা, ক’জন বন্ধু এক হলে মাথায় দুষ্টুমি চাপে। আমরা তখন ডিস্টার্ব করি। তবে হুটহাট মামলা করে দেই না। এতে তাদের অপরাধী হিসেবে ট্রিট করবে মানুষ। সেটা আরও খারাপ হবে। ’’
 
এভাবে প্রতিটি থানায় নিরাপত্তা জোরদার রাখলে অপরাধ বন্ধ করা সম্ভব বলে এই কর্মকর্তাদের বিশ্বাস। তবে জনসচেতনতা ও সাবধানতা এক্ষেত্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন তারা।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫০০ ঘন্টা, জুন ০৬, ২০১৩
এসকেএস/ সম্পাদনা: সুকুমার সরকার

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।