বিশ্ব এখন কাগুজে যুগের শেষ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে ট্যাবলেট, স্মার্টফোন দখল করে নিচ্ছে কাগজের জায়গা।
এ ছাড়া কাগুজ ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিশ্বে বহু মানুষের কর্মসংস্থানও তৈরি হয়েছে। এক হিসাবে দেখা যায়, সারা বিশ্বে কাগজের পরিমাণ মেটাতে গিয়ে প্রতিবছর কাটতে হচ্ছে ৪০০ কোটি গাছ।
হিসাবের দিক থেকে এ অঙ্কটা ভয়াবহ। এ জন্য কাগজনির্ভর সব কিছুই বন্ধ করে দিতে চান পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, এক কাগজ বন্ধ করলে বিশ্বের বহু বন ধ্বংসের হাত থেকে রেহাই পাবে।
এক্ষেত্রে একটু ব্যতিক্রম উডি হ্যারালসন। তিনি হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা। একই সঙ্গে পরিবেশবিদ। তিনি গাছ প্রেমীও বটে। উডি বলেন, আমি বহু বছর ধরে গাছ কাটা রোধে কাজ করে আসছে। এভাবে বনশূন্য করে দিয়ে নিজেরাই নিজের বিপদ ডেকে আনছি।
কাজ করতে দেখি এ বিশ্ব পুরোই রাজনীতিনির্ভর। কিছু বন্ধ করে দিতে গেলেই রাজনীতি এসে অন্যায় কাজকে চালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। ঠিক তখনই আমার মাথায় নতুন বুদ্ধি আসে। ভাবতে থাকি কাগজ তৈরি করার প্রক্রিয়াটাই যদি বদলে দেওয়া যায়! তাহলে কেমন হয়?
এভাবে জনপ্রিয় অভিনেতা উডি ঢুকে পড়েন কাগজ ব্যবসায়। একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করান। নাম প্রেইরি পাল্প পেপার। কানাডানির্ভর এ প্রতিষ্ঠানটি চেষ্টা করছে নতুন পদ্ধতিতে কাগজ তৈরি করার। উডির উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে কাগজ তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয় ৮০ ভাগ হুইট-স্ট্র মন্ড।
যদিও ২০ ভাগ গাছের প্রয়োজন আছে। তবু হিসাব মতে, উডির তৈরি দুই বাক্স কাগজ ব্যবহার করলে একটি গাছ রক্ষা পাবে। খুব সময়ে মধ্যেই কানাডার সিমানা পেরিয়ে উডির কাগজ পৌঁছে গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। উডি এ সম্পর্কে বলেছেন, আমার তৈরি কাগজ ধীরে ধীরে বাজার দখলে নেবে। তখন হাজার হাজার গাছ রক্ষা পেতে শুরু করবে।
আমি গাছপাগল মানুষ। পৃথিবীর বহু বন আমি ঘুরে ঘুরে দেখেছি। আমি দেখেছি কিভাবে একটা বন শুধু কাগজের জন্য খালি হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে দিলে একদিন বনশূন্য হবে পৃথিবী। এটিকে রোধ করা আমাদেরই দায়িত্ব। এ জন্যই ভাবলাম হলিউডের অভিনেতা হওয়ার চেয়ে কাগজ বিক্রেতা হওয়াই ভালো।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০১৩
সম্পাদনা: এসএএস/সাব্বিন হাসান