ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

ডাক দিয়ে যায় কাসিদার দল

শাহজাহান মোল্লা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:১৪, জুলাই ২৩, ২০১৩
ডাক দিয়ে যায় কাসিদার দল

ঢাকা: রাত জাগা কোকিলের মত শেষরাতে কোরাস গানের মধ্য দিয়ে রোজাদারদের ডেকে যাচ্ছে একদল যুবক। ঐতিহ্যবাহী কোরাস গান ‘কাসিদা’ গেয়ে তারা রোজাদারদের জানান দিচ্ছেন, সেহরির সময় হয়েছে।



“আবতো বো ভিদো ইয়া খাবো ঘিড়া আব রাজগুজারনে ওয়ালি হে। ”
“পবিত্র রমজান মোমিনদের তরে এলোরে আবার দুনিয়ায়। ”

অথবা,

“এই রমজান এই সেহরি ভুলে যেওনা সকলে….
খাইতে হবে খাইতে হবে গরজ করো সকলে। ”

সাবেকি আমলে পুরান ঢাকা সহ রাজধানীর অনেক স্থানেই রমজ‍ান মাসে শেষ রাতে এরকম কাসিদার দলের দেখা মিলতো। অবশ্য ডিজিটাল এ যুগে সেই কাসিদা আর কাসিদার দলগুলোকে এখন খুব একটা চোখে পড়ে না।

তবে হঠাৎ করেই রাজধানীর মগবাজার ওয়্যারলেস গেটে এলাকাতে দেখা  মিললো এক কাসিদা দলের।

মঙ্গলবার প্রথম প্রহরে রাত ২টা ৪৫ মিনিটে মগবাজার ওয়্যারলেস গেটে অপেক্ষা করতে থাকি কাসিদা বাহিনীর জন্য। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর দেখা মিললো তাদের।

কাসিদা বাহিনীর সদস্য রনি বাংলানিউজকে বলেন, “এটা আমাদের বাব‍া-দাদাদের ঐতিহ্য। তারই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আমরা প্রতি বছর রমজানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রোজাদারদের ডেকে তোলার কাজ করি। ”

এজন্য কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া হয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা স্বেচ্ছায় এ কাজ করছি। টাকার জন্য নয়। তবে যদি কেউ খুশি হয়ে কিছু দেয় তাহলে সেটা আমরা গ্রহণ করি। ”

কাসিদা বাহিনীর পোশাকের ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা আছে। এ বাহিনীর সদস্যদের পড়নে থাকে পাঞ্জাবি। ১০ থেকে ১৫ জনে মিলে তৈরি হয় এক একটি দল। প্রতি দলে একজন থাকে কোরাসে সুর তোলার জন্য।

আগে যখন মসজিদে মসজিদে এতো মাইক ছিলো না তখন কাসিদার সুর করা গজলেই নগরীর রোজাদাররা বুঝতে পারতেন সেহরির সময় হয়েছে। রান্না করতে ঘুম থেকে উঠে যেতেন মা-বোনেরাও।   সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতাতেই নতুন প্রজন্মের কাসিদা গায়করা এখনও গলিতে গলিতে  ডাক দিয়ে যায় রোজাদারদের।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৩
এসএম/ সম্পাদনা: কবির হোসেন ও রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।