ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

ঘুরে এলাম জাপান

কাজী মিশু | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:০৪, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৩
ঘুরে এলাম জাপান

জাপানে অনুষ্ঠিত এশিয়ার সামাজিক-ব্যবসা কার্যক্রম বিষয়ক সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশের দল। এ দলে ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সোশ্যাল বিজনেস স্টুডেন্টস ফোরামের প্রেসিডেন্ট কাজী মিশু।

জাপান সফরের স্বপ্নময় কয়টি দিন নিয়ে মিশু লিখেছেন “ঘুরে এলাম জাপান”।

দিনটি ছিল ২৭ জুলাই, সাড়ে সাত ঘণ্টা আকাশে ওড়ার পর আমাদের বিমান কানসাই  ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করলো।   জাপানের মাটিতে পা রেখেছি।   গভীর  সমুদ্রের উপরে গড়ে উঠা কানসাই এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশনের ঝামেলা বিশ মিনিটে শেষ করে বেরিয়ে এলাম । বাহিরে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন অধ্যাপক নাজমুল এবং জাপানের স্বনামধন্য বাঙালি অধ্যাপক ডাঃ আশির আহমেদ । এসময় বাংলার নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. ইউনূসকে বরণের লোভনীয় প্রস্তাব পেলাম  ডাঃ আশিরের থেকে।   মুহূর্তেই ছুটলাম অপর টার্মিনালে । মিনিট ১৫’র মধ্যে অধ্যাপক ইউনূস আসলেন অধ্যাপক ওকাদাকে সঙ্গে নিয়ে।   ইউবিএস ব্যাংকের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ইউনূসকে বরণ করলাম। বিশ্ববরেণ্য এ ব্যক্তিকে এতো কাছাকাছি থেকে দেখলাম প্রথমবার। অত্যন্ত সাদামাটা একজন মানুষ, ব্যক্তিগত দেহ নিরাপত্তাকর্মী ছাড়াই মানুষটা নিতান্তই একা সারা বিশ্বময় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

এরপরে নিজ নিজ গন্তব্যে রওনা হলাম। আমদের গাড়ি সাঁই সাঁই করে ওসাকার দিকে ছুটছে।   রাস্তার শব্দ যাতে লোকালয়ে পৌঁছাতে না পারে এজন্য ওসাকার পথের দুধারে রয়েছে সাউন্ডপ্রুফ গ্লাসের দেয়াল। এতেও যদি কেউ সড়ক প্রশাসনের বিরুদ্ধে শব্দ দূষনের  অভিযোগ তোলেন তবে তাকে প্রমাণ করতে হবে তিনি মানুষ নন, বাঁদুড়।  
ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই জেগে উঠেছে ওসাকা, জানালার গ্লাস সরিয়ে দেখা ঝলমলে সকালটি ছিল জাপানে দেখা আমার প্রথম সকাল। কর্মমুখর মানুষগুলো অনেকটা নিঃশব্দে ছুটে চলেছে।

২.
সোশ্যাল বিজনেস ফোরাম ইন এশিয়ায় যোগ দিতে আমরা তৈরি হয়ে নিলাম। সেখানে আমাকে এবং অধ্যাপক মাসুদকে বক্তব্য রাখতে হবে। সেই ক্ষণটির অপেক্ষায় বসে আছি আর ‘ওয়েস্ট-ইন ওসাকার লবির’ প্রকৃতিরুপী সৌন্দর্য উপভোগ করছি।   কাঁচে ঘেরা পুরো লবিতে কৃত্রিমভাবে শীতের সকালের আবহ তৈরি করা হয়েছে ( যদিও বাহিরের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির কম হবে না)। সূর্যের মিষ্টি আলো এসে পড়ছে গায়ে।   সময় এগিয়ে প্রায় ১০ টা, হলরুমে যেতে বললে পাঁচশত লোকের সমাগম দেখে বিস্মিত হই , এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রফেসর ইউনূসের কথা শুনতে এসেছে তারা। ধারণা ছিল তিনি শুধু ইউরোপ-আমেরিকাতে জনপ্রিয় কিন্তু আশাতীত লোকসমাগম ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করল ।

অধ্যাপক ইউনূসের ২৫ মিনিটের কথায় ওয়েস্ট-ইন ওসাকার হলরুম যেন থমকে দাঁড়ালো কিন্তু কি কারণে যাদুকরি কথার মায়াজাল! হলরুম জুড়ে পিনপতন নিরবতা ভেসে আসছে শুধু ইউনূসের বাণী, এটা বিস্ময়, এটা ইন্দ্রজাল ।
 
ড. ইউনূসের পর অধ্যাপক মাসুদ ইবনে রহমান এবং আমি বক্তব্য রাখলাম। সবার শেষে মাসুদ স্যার আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। বুঝলাম ঠিকঠাক বলতে পেরেছি। ইউনূসের বক্তব্যের পর আমাদের দুজনকে বক্তব্য দেবার সুযোগ। এটি বাঙালি হিসেবে অনেক সম্মান আর গৌরবের। এ গর্বে ইউনূসও গর্বিত। হয়ত সে জন্যই আমদেরকে তার পাশে বসতে ইশারা করেছিলেন । পরদিন আরেকটি সেমিনারে উপস্থিত হতে হবে। ‘ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস ক্লাব কানসাই’ এর তরুণরা সেমিনারটি আয়োজন করেছে। এজন্য ওইদিন রাতেই কিয়থোর (Kyoto) পথে রওনা হলাম। কিয়থো জাপানের প্রাচীন রাজধানী ।

ঐতিহ্যবাহী এ শহরকে মন্দিরের শহর বললে ভুল হবে না । এই শহরের আনাচে কানাচে প্রাচীন জাপানের আমেজ । সারি সারি কাঠের তৈরি দু’তলা বাড়িগুলো মনে করিয়ে দেয় জাপানের হাজার বছর ধরে লালিত কৃষ্টি , ঐতিহ্যকে।

রাত ১০ টা কিয়থোতে পৌঁছালাম। এখানে রাত দশটা মানে অনেক রাত, এসময়  আমরা জাপানের রাজপথ ধরে হাঁটছি । চারিদিকে শুনশান নীরবতা, মাঝে মাঝে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক কানে লাগছে।

৩.
রাত শেষে সকাল সাড়ে দশটায় আমরা সেমিনারে বক্তব্য রাখলাম। সেমিনার শেষে আমদের সাথে যোগ দিলেন মিস নউমাছি (Mitsuka Noumachi) আর তার স্বামী মি. ওয়াতামাবে (Tomoya Watanbe) । দুজনই জাপানের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেছেন। দুপুরে আমরা তাদের সঙ্গে রেস্তোরাতে খেলাম । রেস্তোরাগুলোর প্রবেশ পথের বৈশিষ্ট্য লম্বা করিডোর অতিথিদের অভ্যর্থনা জানাতে এ ধরনের করিডোর রাখা এখানকার ঐতিহ্য । খাবার আইটেম হলো কাঁচা মাছ , পানিও ,কয়েক প্রকার সূপ , চিটচিটে ভাতের সাথে চিংড়ির লার্ভা ভাঁজি, সালাদ আর শুশি।   জাপানের ঐতিহ্যবাহী খাবার শুশি প্রস্তুত করতে কাঁচা মাছ আর গাঁজানো ভাতের ব্যবহার হয় ।

তবে স্বাদ মনে রাখার মত না হলেও নজরকাড়া পরিবেশন বহুদিন চোখে লেগে থাকবে তাতে সন্দেহ নেই।
 
খাওয়া শেষে কিয়থো পরিদর্শনে বেরুলাম । প্রথম দেখা মন্দিরটির নাম মনে আসছে না তবে এটা জাপানিদের বিদ্যা-দেবতার মন্দির । ধর্ম-কর্মে জাপানিরা তেমন সময় ব্যয় করে না  জাপানীদের কাছে ধর্ম  হয়ত নৈবেত্তিক ব্যপার তাদের আসল ধর্ম সিস্টেম যা তারা শ্রদ্ধার সাথে পালন করে॥ তবে মজার ব্যাপার হলো স্মার্ট হতে জাপানিরা গরুকে পূজা করে ।

কারণ গরু পরিশ্রমী প্রাণী আর বিদ্যাও অর্জন হয় পরিশ্রমে তাই বিদ্যার দেবতা  হিসেবে গরুকে তারা ভক্তি করে। আমদের সঙ্গে থাকা মিস ফারিয়া এবং মিস জেসিকা তাদের ইচ্ছার কথা একটা কাঠের প্লেটে লিখে নির্ধারিত স্থানে ঝুলিয়ে দিলেন। দেবতার কাছে তারা কি আশীর্বাদ চেয়েছিলেন জানি না তবে গত বছর অধ্যাপক ইউনূস একইভাবে দারিদ্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রত্যয় করেছিলেন।

সঙ্গে থাকা মিস নউমাছিকে জাপানি ট্র্যাডিশনাল পোষাকে চমৎকার দেখাচ্ছে অসাধারণ ‌একটা মেয়ে অল্প সময়ে কাউকে আপন করার ক্ষমতা রয়েছে।

ট্র্যাডিশনাল পোষাকের একটা সুবিধা ইতিমধ্যেই দেখতে পেয়েছি এ পোশাক পরায় ট্যাক্সি চালক আমদেরকে বিশেষ ছাড় দিয়েছেন। নিজ ঐতিহ্যর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ দেখে আমি বিস্মিত হই ।

জাপানের একটি প্রাচীন পাবলিক ইউনিভার্সিটি ‘কিয়থো ইউনিভার্সিটি’ ঘুরে দেখার সুযোগ হলো দেশটির ১৬ জন নোবেল বিজয়ীর মধ্যে ৮ জনকেই বিশ্ববিদ্যালয়টি ধারণ করছে যার মধ্যে অন্যতম ২০১২ সালের নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইয়ামানাকা (Yamanaka) । বিশ্ববিদ্যালয়টির স্মোকিং জোনে বিশেষভাবে মুগ্ধ করেছিল। আমি ভেবেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয় ধূমপানমুক্ত জায়গা। তবে  সেখানে ধূমপানের জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে। এ নিয়মটা সকলেই মেনে চলে। বুঝলাম কোন কিছু নিষেধ বা বাতিল করতে চাইলে প্রথমে তার বিকল্প বের করতে হয় তবেই না আইন কার্যকর করা সম্ভব হয় ।

এখান থেকে বেরিয়ে গেলাম ‘কিওমিযু ডেরা’ (Kiumizu Dera) অতি প্রাচীন এ বুদ্ধ মন্দিরের মূল স্থাপনা ৭৯৮ সালে হলেও ১৬৩৩ সালে এর সংস্কার হয় । ঘন সবুজ পাহাড়ে ঘেরা বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় জায়গা করে নেওয়া স্থাপনাটি স্বর্গপূরীর মতো উপরে নীল আকাশ বেশীক্ষণ নীল থাকে না যে কোনো মুহূর্তে মেঘ এসে ভিজিয়ে দিয়ে যায় ডেরাটিকে । বৃষ্টিসিক্ত ডেরা তখন অন্যরুপ নেয়।
 
উঠে পড়লাম পাহাড়ে কিছুদূর উঠতেই নামল বৃষ্টি আমাদের গাড়িচালক ছুটে গেলেন ছাতা আনতে ভদ্রতা দেখে আমি বিমুগ্ধ। শুধু এটাই নয়, যতক্ষণ ডেরাই ছিলাম উনি ছাতা নিয়ে আমাদের পিছু পিছু ঘুরলো । কর্তব্যবোধ মানুষকে বড় করে যেটা জাপানিদের মধ্যে নিবিষ্ট প্রমাণ বেশ কবারই পেলাম। আমার যেটা মনে হয়েছে যার যার জায়গা থেকে তারা অত্যন্ত দায়িত্ব আর আনন্দের সঙ্গে সে কাজ করে।   জাপান ব্যয়বহুল শহর। সবকিছুর দাম আকাশছোঁয়া হলেও মানুষের মূল্য আরও বেশি । এখানে একজন শ্রমিক যা উপার্জন করে তা দিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপনের ক্ষমতা রাখে। এ কারণেই সমাজে তাদের যথেষ্ঠ মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ।

৪.
অধ্যাপক সিগিরু’র (Shigeru Imasato) বাসায় রাতের দাওয়াতে গেলাম কাঠের তৈরি বাড়িটিতে সব ধরনের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার হলেও ঐতিহ্যও ঠিকভাবে ধরে রেখে মধ্যখানে রাখা আছে ছোট উঠান। উঠানের স্বচ্ছ পানির জলাধারাতে বাহারি রঙের মাছ খেলা করছে । বাড়ির আরেকটি বৈশিষ্ট্য-কোন সদর দরজা নেই পরিবর্তে আছে মোটা পর্দা। জুতা বাহিরে থাকায় চুরির ভয় ছিল। পরে জানলাম চুরির মত ঘটনা এখানে অস্বাভাবিক । ধর্ম পালন না করেও  এরা ধার্মিক । ৭০ ঊর্ধ্ব বয়সী সিগিরু’র উদ্যম দেখে আমি হতভম্ব যা আমার অজানা ছিল।
তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে একটা ইউনিভার্সিটি পরিচালনা করছেন অদ্ভুত হলেও সত্য দিনে এটা ইউনিভার্সিটি রাতে রেস্তোরা। নিজেদের উৎপাদিত শাকসবজি  রান্নায় ব্যবহার করে থাকে।

অধ্যাপক সিগিরু তার জার্মান এবং জাপানি ছাত্রদের নিয়ে আমাদের আপ্যায়ন করালো।

কিয়থো থেকে ফুকুওকার (Fukuoka) দূরত্ব ৫১৭ কি.মি. ঠিক করেছি সেখানেও যাবো। পরদিন সকালে স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষা করছি। ভাড়া ১৫০০০ ইয়েন। কিয়থোকে বিদায় জানিয়ে ট্রেনে চড়লাম ঘণ্টায় ২০০ কিমি. গতিতে চলছে আড়াই ঘণ্টা পর হাকাতা (Hakata) স্টেশনে পৌছলাম ।  

অধ্যাপক ওকাদা (Masaharu Okada) এসেছেন আমাদের রিসিভ করতে। সঙ্গে এসেছেন অধ্যাপক ওসুজি (Osuji) এবং অধ্যাপক আশির ।   সাগর আর পাহাড়ে ঘেরা ফুকুওকা জাপানের বন্দর নগরী বিশ্বের ১৬ টি বসবাসযোগ্য শহরের মধ্যে এটা ১২ তম । এদিকে বাঙালি খাবারের জন্য আমরা ব্যাকুল নেপালি একটি রেস্টুরেন্টে নেওয়া হলে খাবারে নারকেল তেল থাকায় বেশ সুবিধা করতে পারলাম না।

খাওয়া শেষে গেলাম ‘কিউশু ইউনিভার্সিটি’, পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে উঠা এর নতুন ক্যাম্পাসটি অসাধারণ। এসময় দলের সহকর্মী বিখ্যাত ফটোগ্রাফার নাসির আলি মামুন জাপান সাগর দেখার বায়না ধরছেন । ৬০ বছর বয়সী লোকটির শিশুশুলভ আবদার মেটাতে চললাম সাগারের দিকে।

গাড়ী যাচ্ছে বিচের দিকে সাগর-পাড়ে সারি সারি কটেজ প্রত্যেক কটেজের সামনে বাহারি বনসাই। দেখা মিলল পাখির জাপানে পাখির দেখা এ প্রথম তবে কবুতরের দেখা মিলেছে।

পাহাড়ে ঘেরা নীল সাগর তীরে এলে সবার মাঝের  ঘুমন্ত শিশুটি জেগে উঠল । কেউ ছবি তুলছে , কেউ বালি নিয়ে খেলছে কেউ বা পানিতে ঝাপ দেবার আয়োজন করছে । অধ্যাপক আশির এবং অধ্যাপক মাসুদ দুরন্ত কিশোরের মত বিশেষ দোলনায় ঝুলছে। অধ্যাপক নাজমুল সাগরে নামবেনা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ নিজেকে স্থির রাখতে পারলো না, যোগ দিল আমাদের সাথে।   আরেকবার প্রমাণ হয়ে গেল সাগরের বিশালতা মানুষকেও বিশাল করে ।

৫.

বিকালে ‘সোশ্যাল বিজনেস রিসার্চ সেন্টার’ আমাদের সম্মানে বিশেষ আয়োজন করেছে । তার আগে মিস ইকো কাই (Eiko Kai) এবং অধ্যাপক ওসুজি ফুকুওকা শহর  ঘুরে দেখালেন । ফুকুওকা টাওয়ার , জাপান ডোম এবং সাগর-ঘেঁষে চলা দ্বিতল রাস্তা যেটি আমদের নজর কাড়ল। স্বয়ংক্রিয়ভাবে উড়াল সড়ক, সেতুর  টোল আদায়ে প্রতিটি গাড়িতে রক্ষিত রয়েছে ক্রেডিট কার্ড।

সোশ্যাল বিজনেস রিসার্চ সেন্টারে যেতে যেতে সূর্য নিভু নিভু অবস্থায়। সামাজিক ব্যবসার ধারণা প্রচার-প্রসারের লক্ষ্যে ২০১০ সালে কিউশু ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে এশিয়ার প্রথম সোশ্যাল বিজনেস রিসার্চ সেন্টারটি প্রতিষ্ঠা হয়।

রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ওকাদা স্বাগত জানালেন। দীর্ঘ দিনের বন্ধু আনানের সাথে দেখা হয়ে গেল ওর সাথে এটা প্রথম সাক্ষাৎ। অনুষ্ঠানে একঝাঁক জাপানি তরুণ যোগ দিয়েছেন। তারা ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস ক্লাবের সদস্য। বাঙালিও বাদ যায়নি।

অধ্যাপক ওকাদাকে চমক দিয়ে তার ৬০ তম জন্মদিন উদযাপনও হলো। গান, আড্ডা, জাপানিদের হাতে তৈরি বাংলাদেশি খাবারে এভাবে অনুষ্ঠান চলল এগিয়ে ।

অনুষ্ঠান শেষে রওনা হলাম হোটেলের দিকে। সাগরের শীতল বাতাস এসে পড়ছে গায়ে। রাতের ঝলমলে আবহে সাগরের বুকে জেগে উঠা কৃত্রিম দ্বীপ সেসব দ্বিপের উপর গড়ে তোলা নতুন নতুন শহর দেখতে দেখতে গাড়ী এগিয়ে চলল ।

রাত পোহালেই জাপান ছাড়তে হবে সকাল দশটায় ফ্লাইট। আমরা এখন ফুকুওকা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে  পাহাড়ের পাদদেশে বিমানবন্দরটি গড়ে তোলা হয়েছে । মিস ইনুয়ি (Ryoko Inoue) যিনি সর্বক্ষণের সঙ্গী বিদায় জানাতে এসেছেন ।

মনে হচ্ছিল বিমানবন্দরেও  ঝিঁঝিঁ পোকারা সুরের লাহিড়ী তুলেছে তবে তাদের গানে আজ বিদায়ের সুর ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৩
সম্পাদনা: সিজারাজ জাহান মিমি/ শেরিফ সায়ার/জেসিকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।