ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

ভবনের ছাদে বটবৃক্ষের বেড়ে ওঠা!

আব্দুল্লাহ আল নোমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:২৬, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৩

সিলেট: বৃক্ষ! বহুবর্ষজীবী কাষ্ঠবহুল উদ্ভিদ। বৃক্ষ মূলত কাষ্ঠবহুল উদ্ভিদ যার মাটি থেকে সুস্পষ্ট শীর্ষ প্রকটতা বিশিষ্ট একটি একক প্রধান কান্ড অথবা গুঁড়ি থেকে বহুধাবিভক্ত অপ্রধান শাখা বিকশিত হয়।



বৃক্ষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কারণ এরা ভূমিক্ষয় রোধ করে। এদের পত্রপল্লবের নিচে আবহাওয়া-সুরক্ষিত বাস্তুসংস্থান তৈরি করে। বৃক্ষ অক্সিজেন তৈরি ও বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড দূরীকরণ এবং ভূমি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সরাসরি কাজ করে।

একে মানুষের বন্ধুও বলা হয়। বৃক্ষের স্থান সর্বদা মাটিতে। অথচ সেই বৃক্ষ জন্ম নিয়েছে ভবনের ছাদে। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া এ গাছগুলো অপরিকল্পিতভাবে বেড়ে উঠায় বন্ধু থেকে শত্রুতে পরিণত হয়েছে।

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজের শত বর্ষের পুরোনো লাইব্রেরি ভবনের ছাদে গজিয়েছে বিভিন্ন ধরনের বৃক্ষ। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা এসব বৃক্ষের মধ্যে আছে বটবৃক্ষ, মেহগনি, জারুল ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৃক্ষগুলোর বয়স কমপক্ষে ৭/৮ বছরের বেশি হবে।

দীর্ঘদিন থেকে বেড়ে ওঠা এ বৃক্ষগুলোর কারণে শতবর্ষী লাইব্রেরি ভবনের ছাদের দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বট বৃক্ষের শিকড় বড় হয়ে দেয়ালে ফাটল ধরাচ্ছে। ফলে ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে লাইব্রেরি ভবনটি।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের শিক্ষক বাংলানিউজকে বলেন, এ গাছগুলোর আকার আকৃতিতে মনে হচ্ছে এর বয়স কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ বছরের বেশি। দ্রুত গাছগুলোকে ধ্বংস না করলে পুরো ভবনের ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে বট বৃক্ষ ভবনের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। এমনকি ভবনের দেয়ালে শিকড় প্রবেশ করার ফলে ফাটল তৈরি করে।

সরেজমিনে লাইব্রেরি ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ছাদের চারপাশে বেড়ে উঠেছে গাছের চারা। এদের মধ্যে বট বৃক্ষের আধিক্য বেশি। কয়েকটি বট বৃক্ষের শিকড় ছাদের ওপরের দেয়ালের ভিতর দিয়ে প্রবেশ করে ফাটল ধরিয়েছে।

এ ছাড়া ছাদের ওপর গজিয়ে উঠা ঘাস জাতিয় উদ্ভিদের কারণে ছাদের স্থায়ীত্ব বিনষ্ট হয়েছে। ফলে বারান্দার ছাদ বেয়ে পানি পড়তে দেখা গেছে।

কলেজ ক্যাম্পাসের একটি সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে কলেজের লাইব্রেরি ভবনের সংস্কার কাজ ও  রঙয়ের প্রলেপ লাগেনি। সংস্কার কাজ আর রঙয়ের প্রলেপ না দেওয়ায় প্রাচীন এ লাইব্রেরি ভবনের দেয়ালে শ্যাওলা জমে পুরো আস্তরণের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ছাদ এবং দেয়ালের স্থায়ীস্ত নষ্ট হচ্ছে।

সূত্র মতে, দীর্ঘ দিন ধরে লাইব্রেরি ভবনের ছাদে জন্ম নেওয়া এসব উদ্ভিদ দেখেও না দেখার ভান করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে যত সময় যাচ্ছে বৃক্ষের আকার বাড়ার সঙ্গে ভবনটি ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।

এদিকে দীর্ঘ ১০ বছর পর কলেজ কর্তৃপক্ষের নজর পড়েছে লাইব্রেরি ভবনের দিকে। অচিরেই ভবেনের সংস্কার কাজ ও গাছের চারাগুলো ধ্বংস করা হবে। কলেজে বেশ কটি পুরাতন এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভবন আছে। কয়েকটি ভবনের সংস্কার কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে লাইব্রেরি ভবনের সংস্কার কাজ শুরু হবে। বাংলানিউজকে এসব কথা জানালেন এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ধীরেশ চন্দ্র সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৮ ঘন্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৩
এএএন/এসএইচ/আরকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।