ঢাকা: বাস-ট্রাক যাই আহুক, কপালে মরণ থাকলে ঘরের ভেতরেও মরবার পারি। তাই এত চিন্তা কইরা লাভ নাই।
বুধবার রাতে রাজধানীর হাতির ঝিলের তিন রাস্তা মোড়ের ব্রিজের নিচে নিয়মিত রাত্রি যাপন করা মো. আকিমুদ্দিন (৪৫) বাংলানিউজকে একথা বলেন।

কিছু টাকা বাঁচানোর জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি প্রতি রাতে এখানে ঘুমান।
হাতির ঝিলের আইল্যান্ডগুলোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবেই শুয়ে থাকেন শত শত রিকশাওয়ালা।
সেনাবাহিনী সদস্যরা বার বার এসব আইল্যান্ডগুলোতে ঘুমাতে নিষেধ করলেও তাদের আদেশ অমান্য করে রাত্রি যাপন করছেন এসব দিন মজুরেরা।
আকিমুদ্দিন বলেন, আগে পাঁচতলা বাড়ির ছাদে ১৫০ টাকা মাস দিয়া আমরা আড়াই-তিনশজন এক লগে থাকতাম। এখন মাগনায় থাকি। তাহইলে খারাপ কি?
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের অনেকবার নিষেধ করলেও কে শোনে কার কথা।
আরেক রিকশাওয়ালা রাশেদ জামিল বলেন, আর্মি বহুৎবার না কইসে কিন্তু এখন আর কিছু কয় না।
এদিকে, রাতে হাতির ঝিলের রাস্তা খালি পেয়ে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে চলছে ট্রাক। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনায় প্রাণ যেতে পারে অসংখ্য মানুষের।

রাতের হাতির ঝিলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার অত্যন্ত করুন এ দৃশ্য দেখা গেল। পুরো ঝিলে মাত্র একটি পুলিশের গাড়ি। গাড়ির মধ্যে থাকা ৫ সদস্যের সবাই ঘুমাচ্ছেন।
গত দেড় মাসে এখানে তিনটি দুর্ঘটনায় দু’বার গাড়ি আইল্যান্ডে উঠে যাওয়ার ঘটনা ঘটলেও কোনো মহলই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে না।
১৭ আগস্ট সকালে ঢাকা মেট্রো-গ- ১৯-১০৮৪ সিরিয়ালের একটি প্রাইভেট কার বেপরোয়া গতিতে হাতির ঝিল দিয়ে মগবাজারের দিকে ছুটে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আইল্যান্ডে আছড়ে পড়ে। দুর্ঘটনায় গাড়ির আরোহী উত্তরার বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার রিদনসহ দুইজন আহত হন।
এর আগে ১২ আগস্টেও ঘটে একই দুর্ঘটনা। এবারও আইল্যান্ডে উঠে পড়ে গাড়ি।

ইস্কাটন থেকে আসা সাইকেল আরোহী সাদাফ জানান, আগে রাত পর্যন্ত লোকসমাগম দেখা গেলেও বর্তমানে রাতে কেউই হাতির ঝিল উপভোগ করতে আসে না। মানুষকে হাতির ঝিলের সৌন্দর্য উপভোগ করাতে সরকারের উচিত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৩
এডিআর/এএইচএস/আরআইএ