ঢাকা: চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সংস্থা (ওপিসিডব্লিউ)। ২২তম সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই সম্মাননা লাভ করলো সিরিয়ার প্রাণঘাতী রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসে কার্যরত সংস্থাটি।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বা অঞ্চলে বিশ্ব মানবতার জন্য কল্যাণকর কোনো বিষয়ে অবদান রাখার জন্য ব্যক্তির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানকেও নোবেল শান্তি পুরস্কার দিয়ে আসছে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি।
১৯০১ সালে নোবেল পুরস্কার চালু হওয়ার পর সর্বমোট ২৫ বার ২২টি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ব মানবতার কল্যাণে অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে ১৯০৪ সালে প্রথম নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে বেলজিয়ামভিত্তিক সংস্থা ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ল’। বৈজ্ঞানিক সমাজ গঠনে অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার জেতে সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা আন্দোলনের জন্য ১৯১০ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার জেতে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা পারমানেন্ট ইন্টারন্যাশনাল পিস ব্যুরো।
১৯১৭ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার জেতে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রস।
দীর্ঘ বিরতির পর ১৯৩৮ সালে ফের নোবেল শান্তি পুরস্কার যায় কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের ঘরে। সেবার এই সম্মানজনক পুরস্কারটি লাভ করে শরণার্থী অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক সংস্থা নানসেন ইন্টারন্যাশনাল অফিস ফর রিফিউজি।
১৯৪৪ সালে দ্বিতীয়বারের মতো নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রস।
১৯৪৭ সালে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার জেতে আমেরিকান দু’টি সামাজিক সংস্থা ফ্রেন্ডস সার্ভিস কাউন্সিল ও আমেরিকান ফ্রেন্ডস সার্ভিস কমিটি।
১৯৫৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
১৯৬৩ সালে তৃতীয় বারের মতো নোবেল পুরস্কার জেতে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রস।
১৯৬৫ সালে জাতিসংঘের শিশু তহবিল সংস্থা ইউনিসেফ জেতে সে বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার।
৪ বছর পর ১৯৬৯ সালে এ সম্মাননা লাভ করে আন্তর্জাতিক শ্রমিক অধিকার সংগঠন আইএলও।
১৯৭৭ সালে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে কর্তৃপক্ষ।
১৯৮১ সালে দ্বিতীয় বারের মতো নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
১৯৮৫ সালে নোবেল শান্তি সম্মাননা লাভ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের সংগঠন আইপিপিএনডব্লিউ।
১৯৮৮ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী।
১৯৯৫ সালে নোবেল শান্তি সম্মাননা লাভ করে কানাডাভিত্তিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ বিষয়ক সংস্থা পুগওয়াশ।
১৯৯৭ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অস্ত্রবিরোধী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু ব্যান ল্যান্ডমাইনস (আইসিবিএল)।
১৯৯৯ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জন করে যুদ্ধের ময়দানে চিকিৎসা সেবা দানের জন্য প্রসিদ্ধ মানবাধিকার সংগঠন ডক্টরস উইদাট বর্ডারস।
আর অনেক অপেক্ষার পর ২০০১ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার জেতে জাতিসংঘ।
২০০৫ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয় ভিয়েনাভিত্তিক সামরিক খাতে পরমাণু পদার্থ ব্যবহারবিরোধী আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি বিষয়ক সংগঠন আইএইএ।
এরপর ২০০৬ সালে ঐতিহাসিকভাবে শান্তি পুরস্কার লাভ করে বাংলাদেশের গ্রামীণ ব্যাংক। ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ সংগঠনটিকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
২০০৭ সালে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক এই পুরস্কারটি লাভ করে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব বিষয়ে বিশ্ববাসীকে সচেতন করার লক্ষ্যে কাজ করা ইন্টারন্যাশনাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি)
সর্বশেষ গত বছর ইউরোপ অঞ্চলের সংহতি ও শান্তি বিধানের লক্ষ্যে কাজ করার স্বীকৃতি স্বরূপ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইউ)।
হিসেব মতে, বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক এই পুরস্কারটি দুই বার লাভ করে ইউএনএইচসিআর। আর তিনবার এই পুরস্কারটি রেড ক্রসের কার্যালয়ে ওঠে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৩
এইচএ/আরআইএস