পৃথিবীতে কতো রকমের চাকরি আছে তার ইয়ত্তা নেই! যেমন হেলেন সাউথহলের চাকরি হচ্ছে ঘাসের বৃদ্ধি দেখা। তৃণভূমি ও মাঠে ঘাসের সঠিক বৃদ্ধি হচ্ছে তা দেখেই মাস শেষে বিরাট অঙ্কের অর্থ বেতন হিসেবে পান তিনি।

৪৩ বছর বয়সী হেলেনের কাজকে অনেকে কাজের ‘কাতারে’ নাও রাখতে পারেন! আবার কেউ এটিকে ভাবতে পারেন ‘পৃথিবীর সবচেয়ে মজাহীন কাজ’।
কিন্তু কাজটি খুব পছন্দ করেন হেলেন। ঘাষের বীজ বপন থেকে শুরু করে সেগুলোর বৃদ্ধি নিয়ে রিপোর্ট করার কাজটি করতে তিনি আনন্দ পান। পাবেনই তো, তার যে ঘরের চেয়ে মাঠ ভালো লাগে!
সবুজ ঘাস বিশেষজ্ঞ হেলেন লিনকনশায়ারের ব্রিটিশ সীড হাউজে কর্মরত। যতোটা সম্ভব সঠিক পথে ঘাষের বৃদ্ধিতে শ্রম দেওয়াই তার কাজ।
তিনি বলেন, ঘাসের বৃদ্ধি দেখভাল করা আমার চাকরি-বললে লোকজন বিস্মিত হয়। কিন্তু আমি মনে করি, এটি মজার এবং আমি অন্য কোনো কিছু করব না।
এ ব্রিটিশ সবুজপ্রেমী বলেন, আমি বিভিন্ন ধরনের ঘাসের বীজ এবং সেগুলো ঠিকমতো বাড়ছে কিনা পর্যবেক্ষণ করি। চারাগুলো পরিকল্পিত কাজের জন্য উপযুক্ত কিনা সেটিও দেখি।
সঠিকভাবে সবুজ ঘাসের বেড়ে উঠাটাকে নিজের কাজের পুরস্কার হিসেবে দেখেন তিনি। এতে নিজের আত্মতুষ্টিও খোঁজেন তিনি।
তিনি বলেন, অনেক সময় ঘাস খুব্র দ্রুত বেড়ে যায় যা শিকড়কে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আবার কখনও কখনও রোগের কারণে ঘাসের বৃদ্ধি যথেষ্ট ঘটে না। আমার কাজ হচ্ছে, কেন এমনটি ঘটছে তা বের করা।
প্রতিদিন তাকে ৪০০ ঘাসের বীজ গুণতে হয় এবং প্রতি সপ্তাহে ঘাসের চারার প্রতিটি পাতার বৃদ্ধি পরিমাপ করা। তাকে নিশ্চিত করতে হয় যে ঘাষের প্রত্যেকটি বীজ নষ্ট হয়নি বা ভেঙে যায়নি।
তিনি বলেন, ১৪ দিনে ঘাষের ৫ সেন্টিমিটার হওয়া উচিত। কিন্তু আমি যদি দেখি তেমনটি হচ্ছে তখন আমি মনে করি কোনো সমস্যা রয়েছে।
তার মতে, তার কাজের ধরন যেমন একটি একটি করে ঘাষ গোনা ক্লান্তিকর মনে হতে পারে কিন্তু কৃষি মৌসুমের মতো বছরজুড়ে এর পরিবর্তন হয়।
প্রতি সেপ্টেম্বরে ঘাসের চারা রোপন করা হয় এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘাসগুলোকে পর্যবেক্ষণ করা হয়।
তিনি বলেন, প্রতি বছরের আবহাওয়া থাকে ভিন্ন। সেটি বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে এবং ঘাসের বৃদ্ধিতে আনে পরিবর্তন।
অনেক প্রজাতির ঘাসের বীজ পরীক্ষা করতে হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, আপনি সর্বদাই দেখতে পাবেন নতুন ধরনের ঘাস। নতুন কোনো বীজ চোখে পড়লেই আপনি বিস্মিত হবেন।
হেলেনের কাজের প্রতি যারা ভ্রু কুচকান তারা কিন্তু শেষে এসে তারা বিশেষ করে ফুটবল, গলফ, ক্রিটেক প্রেমীরা। কেননা তার পরিশ্রমের ফলে বেড়ে ওঠা ঘাসগুলো লাগানো হয় গলফসহ অন্যান্য খেলার মাঠে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৩
এসএফআই/এসআরএস