সিলেট: হরতাল ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে দেশের পর্যটন শিল্প। ঘন ঘন হরতালের কারণে পর্যটক আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।
দেশের পর্যটন উদ্যোক্তা, পর্যটনকর্মী ও পর্যটন বোর্ড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পর্যটন সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি বলেন, দেশের সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে হলে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য থামাতে হবে। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে রাজনৈতিক আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করতে হবে। ধংসাত্মক কর্মসূচি রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটাতে পারে না। উল্টো দেশের পর্যটন স্থানগুলো পর্যটক শুন্য হয়ে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।

নিরাপত্তার অভাবে পর্যটকরা বের হচ্ছেন না বলে অভিযোগ করে সিলেটে অবস্থিত দেশের প্রথম রিট্রিক শুকতার প্রকৃতি নিবাসের স্থপতি জেরিনা হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আগে রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলোতে রাজপথে এতো সহিংসতা হতো না। এখন দেশের সব স্থানের রাজপথে রাজনৈতিক সহিংসতা হচ্ছে। ফলে পর্যটক হারাচ্ছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, পর্যটকরা সহজ যাতায়াত ও নিরাপত্তা চান। এই ব্যবস্থা নিশ্চিত না করতে পারলে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নেবেন।
সিলেটের পর্যটন কর্মী আহম্মেদ সেলিম সারওয়ার বলেন, হরতালে দেশজুড়ে যখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থাকে, তখন পর্যটকরা বের হতে চান না।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্য থেকে সপরিবারে দেশে বেড়াতে এসেছেন জকিগঞ্জের বারহাল এলাকার কোনাগ্রামের আব্দুশ শুকুর চৌধুরী আজাদ। হরতালের কারণে সিলেটের কোথাও বের হতে পারছেন না তিনি।
তিনি বলেন, শুধু হরতাল নয়, যে সড়কপথে যাবো, সেই পথ যে রাজনৈতিক অস্থির পরিবেশে সংঘাতমুক্ত থাকবে তার নিশ্চয়তা কোথায়?
একই কথা বলেন বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের সদস্য ডা. জাকারিয়া হোসেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা পর্যটন খাতকে পেছনে ফেলে দিচ্ছে। সাম্প্রতিককালে প্রবাসীরা দেশে কম আসছেন। তাই পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে তাদের ভিড়ও কম।
তিনি মনে করেন, পর্যটন শিল্প দেশের গার্মেন্টস খাতকে ছাড়িয়ে যাবার যে সম্ভাবনা ছিলো, হরতাল অবরোধ ভাঙচুর কর্মসূচি চললে এ খাতের আর বিকাশ হবে না।

এসব পর্যটন কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, প্রতিদিন কয়েক হাজার পর্যটক বেড়াতে আসেন সিলেটের জাফলং, লালাখাল, মাধবকুণ্ড, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। কিন্তু হরতাল বা রাজনৈতিক কর্মসূচির পর সেগুলো আর আগের পর্যটক ফিরে পাচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৩
এসএ/এমবি/এএসআর/আরআইএস