ঢাকা: কোনো কারণে মনোভাব বেশ চাঙা। এর মধ্যেই হয়তো ছন্দময় ড্রামের আওয়াজে বেজে উঠলো কেটি পেরির ‘ডোন্ট এভার লুক ব্যাক’ কিংবা সাই’র ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ অথবা মাইকেল জ্যাকসনের ‘থ্রিলার’ অ্যালবামের কোনো গান! আর কি লোভ সামলানো যায়! পরিবেশ অনুকূলে থাকলে অর্থাৎ যেখানে গান বাজছে সেখানে যদি বন্ধু-বান্ধব বা দুষ্টুমি সম্পর্কের কেউ থাকে তাহলেতো একেবারে তাল উঠিয়েই নাচ শুরু করবেন যে কেউ! অবশ্য, দুষ্টুমির সম্পর্কের কেউ না হলেও অনেক সময় উপস্থিত লোকজনের অনুরোধে নাচতে হয়।
মানুষের বিনোদনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম নাচ হলেও সবাইকে সচরাচর এই ভূমিকায় দেখা যায় না। বিশেষ করে বিশ্ব নেতাদেরতো নয়ই! তবু, বিশ্ব নেতারা যদি কখনো নৃত্যশিল্পীর ভূমিকা অবতীর্ণ হয়েই যান, সেটা বন্দি হয়ে যায় শতো শতো আলোকচিত্রীর ক্যামেরায়!
বিভিন্ন উপলক্ষে বিশ্ব নেতাদের নাচ দেখার সৌভাগ্য হয়েছে এমন আলোকচিত্রীর ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট বা তার (কর্মস্থল) সংশ্লিষ্ট সংবাদ মাধ্যম ঘেঁটে দুর্লভ ছবিগুলো উপস্থাপন করছে বাংলানিউজ!

জাতিসংঘের বিশেষ দূত হিসেবে মনোনীত করার পর দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গীতশিল্পী সাই’কে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে আমন্ত্রণ জানান মহাসচিব বান কি-মুন।
সাই’র সঙ্গে সাক্ষাতে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ব্যাপারে আলোচনা যেমন হয়েছে, তেমনি সাই’র কাছে তার বিখ্যাত গ্যাংনাম স্টাইল নাচটি শেখানোর আবদার করে বসেন বান কি-মুন। সাই’ও সুযোগ পেয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিটিকে তার সঙ্গে সঙ্গে ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ নাচে মাতিয়ে তোলেন।

২০১০ সালের নভেম্বরে ভারত সফরে এসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। সঙ্গে এসেছিলেন ফার্স্ট লেডি মিশেলও। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দম্পতি যখন ভারত সফর করছিলেন তখন দেশটিতে দিওয়ালি উৎসব চলছিল।
এই সুযোগটিকেই কাজে লাগান ওবামা ও মিশেল। মুম্বাইয়ে একটি দিওয়ালি উৎসবে একদল শিশুর সঙ্গে প্রাণভরে নেচে ওঠেন তারা।

২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রে ম্যালেরিয়া সচেতনতা দিবস পালন উপলক্ষে হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বুশ।
সেই অনুষ্ঠানে ‘ক্যানকৌরান ওয়েস্ট আফ্রিকান ড্যান্স কোম্পানি’র অনুরোধে আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে প্রাণ খুলে নেচে ওঠেন বুশ।

রাশিয়ার রাজনীতিবিদ বরিস ইয়েলৎসিন ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ১৯৯৬ সালে পুনর্নির্বাচনের প্রচারণার সময় রোস্তভ শহরে স্থানীয় একটি ব্যান্ড দলের সঙ্গে সমর্থকদের অনুপ্রাণিত করতে নাচেন তিনি।

১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৭ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন টনি ব্লেয়ার। ১৯৯৬ সালে ব্ল্যাকপুলের স্যাভয় হোটেলে নিজের দল লেবার পার্টির একটি সম্মেলনে যোগ দেন ব্লেয়ার। এসময় একটি ব্রিটিশ উৎসব উপলক্ষে উপস্থিত পরিচিতদের অনুরোধে স্ত্রী চেরি’র সঙ্গে রোমান্টিক নাচে অংশ নেন তিনি।

ক্ষমতাধর হলেও বিশ্বের সবচেয়ে শান্ত ও নিভৃতচারী প্রেসিডেন্ট বলা হয় রাশিয়ার দিমিত্রি মেদভেদেভকে। তবে, ২০১১ সালের এপ্রিলে ইউটিউবে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায় মেদভেদেভ কতোটা চটপটে আর চঞ্চল।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, ব্লু শার্ট-প্যান্ট পরিহিত মেদভেদেভ গানের তালে তালে দুই হাত এবং দুই পা দুলিয়ে নাচছেন। তার সঙ্গে নাচছেন কার্যালয়ের স্যুট-টাই-বুট পরিহিত সহকর্মীরাও।

১৯৯৪ সাল থেকে মধ্য এশিয়ার দেশ তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন এমোমালি রাহমোন। ২০০৭ সালে পুত্রের বিয়ের সময় দেশীয় ও বিদেশি আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে গান এবং নাচ পরিবেশন করেন রাহমোন। তবে, সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবে প্রকাশ হওয়ার পর সেটি কর্তৃপক্ষকে সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট। তার আগেই অবশ্য বিশ্ব সংবাদ মাধ্যমগুলোর কাছে পৌঁছে যায় রাহমোন’র নাচ-গানের ভিডিও।
বাংলাদেশ সময়: ০৩১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৩
এইচএ/এমজেডআর