ঢাকা: খালি রিকশা নিয়েই আনমনে রাস্তা দিয়ে চলছেন এর চালক মো: শাহীন। যেন কোনো তাড়া নেই।
অবরোধের কারণে আজ তার আয় খুবই সামান্য। আয় হবেই বা কেমন করে রাস্তায় তো যাত্রীই নেই! অন্য দিন সকাল ৯টায় রিকশা নিয়ে বের হয়ে তার যেখানে দুপুর নাগাদ ৩০০ টাকা আয় হয়, আজ আয় হয়েছে মাত্র ১০০ টাকা।
বুধবার দুপুরে গাবতলী বাস টার্মিনালের বিপরীত দিকের রাস্তায় অবরোধে আয় না হওয়ায় মনের দু:খ ও কষ্টের কথাগুলো এভাবে ব্যক্ত করেন এই রিকশাচালক।
মো: শাহীন বলেন, ‘হরতাল-অবরোধ বড় লোকগো লাইগা, আমগো লাইগা এইগুলা না। ’ এর পেছনে তার মোক্ষম ব্যাখ্যাও আছে। তিনি বলেন, একদিন রিকশা না চালালে তার পেটে ভাত হবে না। সন্তান-স্ত্রীকে নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। আর বড় লোক মানষের লাইগা এইডা কোনো সমস্যা না। ৬ মাস হরতাল-অবরোধ হইলেও তাগো না খাইয়া থাকোন লাগবো না। ’
শাহীন বলেন, ‘এক বেলার জন্য মালিকের ভাড়া ৭০ টাকা। আইজ ব্যালা প্রায় শ্যাষ। অহন পর্যন্ত ১০০ টাকা কামাইলাম। মালিকের ভাড়া দেওনের পর কি খামু। ’
ছয় বছর ধরে ঢাকায় রিকশা চালান শাহীন। থাকেন মিরপুর-১ নম্বর ভেড়িবাধে। যে আয় হয় তা দিয়ে এক সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তার চলে যায়। কিন্তু হরতাল-অবরোধ এলেই তার আর কিছুই ভালো লাগে না। সারাক্ষণ টেনশন করেন কিভাবে দু’বেলা ভাতের ব্যবস্থা করবেন। এতসব টেনশন দিয়েই কোনো সমাধান পান না শাহীন। তার কাছে আসলেই তো কোনো সমাধান নেই।
একটা সমাধান অবশ্য রয়েছে বলে মনে হয় তার: ‘দুই নেত্রী যদি সমঝোতা কইরা দ্যাশ চালান, তাইলে আর কোনো হরতাল-অবরোধ লাগবো না। আমারও চিন্তা কইরা জীবনডারে শ্যাষ করতে অইব না। ’
বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘন্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৩