ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

কয়দিন আর বইসা থাকমু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:০৪, ডিসেম্বর ১, ২০১৩
কয়দিন আর বইসা থাকমু

ঢাকা: অবরোধের প্রথম দিন ডরে গাড়ি বের করি নাই। তয় কয়দিন আর বইসা থাকমু? সংসার তো চালান লাগবো।

তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়াই গাড়ি বের করছি।

অবরোধের মধ্যেও গাড়ি চালাচ্ছেন। বাংলানিউজের করা এমন প্রশ্নের জবাবে এভাবেই উত্তর দিচ্ছিলেন ঢাকা-আরিচা রুটে চরাচলকারী যোগাযোগ পরিবহনের একটি বাসের চালক কোরবান আলী।

প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা ৭২ ঘণ্টার অবরোধের প্রথম দিনে গাড়ি তেমন না চললেও রোববার অবরোধের দ্বিতীয় দিন গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে নিয়মিত বিরতিতে ঢাকা-আরিচা রুটে বাস চলাচল করতে দেখা গেছে।

তবে অবরোধের কারণে দূরপাল্লার কোনো বাস গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়নি।

বাংলানিউজকে কোরবান আলী বলেন, অন্যদিন গাবতলী থেকে নবীনগর পর্যন্ত গাড়ি ট্রিপ মারি। তবে আজ আরিচা ঘাটের যাত্রী বেশি থাকায় পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত যাবো। তয় অবরোধের কারণে গাড়ি চালাতে ডর লাগে। তাই যাত্রী ভরলেই গাড়ির গেট লাগাইয়া দেই।

তিরি আরও বলেন, গাড়ি না চালাইলেও রুট পারমিট রক্ষার জন্য বাস মালিক সমিতিকে প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা করে দেওয়া লাগে। তাই সেই টাকা জোগাড় এবং সংসার চালানের লাইগা জীবনের ঝুঁকি নিয়া গাড়ি চালাই।

গাবতলী টার্মিনাল থেকে দেশের উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে চলাচলকারী বাস ছেড়ে যায়। কিন্তু বিরোধী জোটের অবরোধ চলার কারণে জীবনের ঝুঁকি থাকলেও নিজেদের প্রয়োজনের তাগিদে গাবতলী বাস টার্মিনালে নির্দিষ্ট গন্তব্যের বাসের খোঁজে যাত্রীদের ভিড় করতে দেখা যায়।

তবে দূরপাল্লার গাড়ি না ছাড়ায় লোকাল বাসে চড়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে হচ্ছে তাদের।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ফরিদপুরে ভাইয়ের বাসায় যাওয়ার জন্য বাসের অপেক্ষায় গাবতলী বাস টার্মিনালে বসে থাকতে দেখা যায় ব্যবসায়ী মোখলেছুর রহমানকে।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বাসা থেকে যখন বের হই তখন অবরোধের কথা জানতাম না। শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসে শুনি অবরোধ। তবুও রাতে ট্রেনে করে ঢাকায় আসি। কিন্তু এখন আর ঢাকা থেকে ফরিদপুর যাওয়ার কোনো বাস পাচ্ছি না।

গাবতলী টার্মিনালে বাসের জন্য অপেক্ষারত ব্যবসায়ী এম এ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, খুবই জরুরি প্রয়োজনে সাভারে একটি ব্যাংকে যাওয়া প্রয়োজন। তাই গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে আছি। লোকাল বাস চলছে। কিন্তু ভয় পাচ্ছি, পথে কোনো ঝামেলা হয় কিনা।

এদিকে বেলা ১০টা ৫৫ মিনিটে গাবতলী আন্ডারপাসের কাছে র‌্যাব-পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সামনেই পরপর ৩টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। এতে সেখানে অপেক্ষমাণ যাত্রীদেও মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এছাড়া গাবতলী এলাকার সরকারদলীয় এমপি আসলামুল হকের নেতৃত্বে ১০০ মোটরসাইকেল এবং ৩টি মাইক্রোবাস নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং যুবলীগের নেতাকর্মীদের বেশ কয়েকবার মহড়া দিতে দেখা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।