ঢাকা: গাইবে বাঙালি, গাইবে বিশ্ব, জানবে বিশ্বের ৬০০ কোটি মানুষ। এমনই এক প্রতিজ্ঞা করা হয়েছে বিজয় দিবস-২০১৩ সামনে রেখে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘বিজয় ২০১৩’ উদযাপন জাতীয় কমিটি ও উপদেষ্টা কমিটির প্রস্তুতি সভা।
এতে সভাপতিত্ব করেন উদযাপন উপদেষ্টা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা মুক্তিযুদ্ধের উপ অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খোন্দকার ও উদযাপন জাতীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক আবুল বারাকাত। অনুষ্ঠানের প্রস্তাবনা তুলে ধরেন উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।
সভায় ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠানমালা প্রস্তাব করা হয়। দেশ বরেণ্য সংগঠনগুলোর পরিবেশনা, মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সহমর্মী আন্তর্জাতিক শিল্পীদের অনুষ্ঠান, দেশ ও বিশ্বব্যাপী লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের গান, জনপ্রিয় ব্যান্ডের সম্মিলিত উপস্থাপনায় সারা পৃথিবীর বাংলাদেশি মানুষ উদযাপন করবেন ‘Concert for Freedom’।
অনুষ্ঠান শুরু হবে সকাল ১০টায়। চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। অনুষ্ঠানের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও তৎসংলগ্ন মানিক মিয়া এভিনিউ।
অনুষ্ঠানে মূল আকর্ষণ হবে তিন লক্ষাধিক মানুষের সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়া। যেটা হবে একটি বিশ্ব রেকর্ড। সেই লক্ষ্যে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কতৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর, ৪টা ৩১ মিনিটে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে উদিত হয় আমাদের স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য।
প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক মাহবুব জামান বলেন, জাতীয় সংগীত গাইবার জন্য এই সময়টিকেই আমরা বেছে নিয়েছি। একই সময়ে দেশের বাইরে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিক বিশ্বের সব বড় শহর থেকে মূল অনুষ্ঠানের সঙ্গে যোগ দেবেন। ইতোমধ্যে দেশের বাইরের বড় ৩০টি শহর তাদের যোগদান নিশ্চিত করেছে। দেশব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ৪৮০টি গণজাগরণ মঞ্চও একযোগে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।
সভায় ইমরান এইচ সরকার তার প্রস্তাবনায় দেশের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার সন্মানীত ও বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিকদের নিয়ে ১০০১ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিষ্ঠিত তরুণ নাগরিকদের নিয়ে ১০০১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন। জাতীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে অধ্যাপক আবুল বারাকাত এবং ড. জাফর ইকবালের নাম ঘোষণা করা হয়।
এ কে খন্দকার কয়েকটি উপ কমিটি ও তাদের আহ্বায়কদের নাম প্রস্তাব করেন, যা সুচিন্তিত মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হবে। তারা হলেন- ডা. সারওয়ার আলী (অর্থ), আবেদ খান (প্রচার), মেজর ওয়াকার হাসান বীরপ্রতিক (শৃংখলা ও নিরাপত্তা), সোহরাব হোসেন (অনুষ্ঠান), খুশি কবির (অভ্যর্থনা), স্বদেশ রায় (প্রকাশনা), মামুনুর রশিদ (মঞ্চ ব্যবস্থাপনা), মাহবুব জামান (প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা), ফারজানা শাকিল (গ্রিন রুম ব্যবস্থাপনা), ডা. কাজল কর্মকার (চিকিৎসা), জাহিদ নেওয়াজ খান জুয়েল (কমিউনিকেশন টিম), আনিসুল হক (সমন্বয়)।
সিনেট হলে বক্তব্য রাখেন ডা. সারওয়ার আলী, আবেদ খান, সৈয়দ শামসুল হক, সুলতানা কামাল, অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, আব্দুল জব্বার খান, খুশি কবির, সোহরাব উদ্দীন, মাহফুজা খানম, মাহাবুব জামান, মোনায়েম সরকার, সৈয়দ গাউসুল আলম শাওন, নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, লিয়াকত আলী লাকি, আতাউর রহমান, অধ্যাপক আবুল বারাকাত প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক মাসুদা ভাট্টি।
এ কে খোন্দকার সমাপনী বক্তব্যে দেশের সব শ্রেণী-পেশার নাগরিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠনকে যার যার অবস্থান থেকে ১৬ ডিসেম্বর ৪টা ৩১ মিনিটে মূল অনুষ্ঠানে একযোগে জাতীয় সংগীত গাইবার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৩