ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

মানুষের খেয়ালে প্রকৃতি বিষময়

ফটো: আতিকুর রহমান জনি, স্টাফ ফটো করেসপন্ডেন্ট<br> ক্যাপশন স্টোরি: হুসাইন আজাদ, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:৪৪, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৩
মানুষের খেয়ালে প্রকৃতি বিষময়

ঢাকা: খুব ছোট বেলায় একটা গল্প শুনেছিলাম। এক গ্রামের এক প্রান্তে এক বটগাছ ছিলো।

হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত পথিক বটগাছের শীতল ছায়ায় তার শরীর জুড়াতো। বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতো। আর অকৃতজ্ঞ পথিক যাওয়ার সময় বটগাছের পাতা-ডাল ভেঙে দিয়ে যেতো কিংবা খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে বটগাছের কষ বের করতো।     

মানুষ যে কত বড় অকৃতজ্ঞ এটা বোধ করি প্রকৃতি ছাড়া আর কেউ ততটা উপলব্ধি করেনি! তাই কি প্রকৃতির এতো প্রতিশোধ!!


রাজধানীর বুড়িগঙ্গা পেরিয়ে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ। এ এলাকার তেঘরিয়া ইউনিয়নের আলুকান্দা চরে গেলে মানুষের এ নির্মমতার খানিকটা উদাহরণ পাওয়া যাবে।

মাঠের পর মাঠ সরিষা ক্ষেত। আশপাশের সবকিছুকে উপেক্ষা করে আমরা যদি কেবলই সরিষা ক্ষেতের দিকে তাকাই তাহলে মনে হবে পৃথিবী কত সুন্দর, কত নির্মল, কত সরল, কত সতেজ!


খানিকটা মাথা তুললেই বোধে আসবে, শ্বাস নেওয়া এতো কঠিন হয়ে উঠছে কেনো এই পৃথিবীতে!

এখানকার সরিষা ক্ষেতের স্নিগ্ধতার মতোই প্রকৃতি অক্সিজেন দিয়ে মানুষকে বাঁচিয়ে রাখছে, ফল দিয়ে (দানা) মানুষের আহার কিংবা ব্যবহার্য যোগাচ্ছে, তার প্রতিদানে সরিষা ক্ষেতের অদূরে দৃশ্যমান ইটভাটার মতো অসংখ্য কারখানার কালো ধোঁয়া দিয়ে প্রকৃতির শরীরকে মানুষ করে তুলেছে বিষময়!


ইটভাটার ধোঁয়ার পাশেই রক্তিম আকাশে দৃশ্যমান অস্তাচলগামী সূর্য। সূর্যের সোনালী আভাও যেনো ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় ম্লান হয়ে গেছে। এ মলিনতা কি আমাদের ভবিষ্যতের সিডর, আইলা, ভূমিকম্প অথবা সুনামি’র মতো কিংবা আরও ভংঙ্কর কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দেয় না!


কিন্তু এই সতর্কবাণী কি মানুষকে একটুও ভাবিয়ে তোলে? তোলে না! তোলে না বলেই তেঘরিয়ার ইটভাটার মতো রাজধানী কিংবা রাজধানীর বাইরে অথবা সারা বিশ্বে কারখানার ধোঁয়া উড়িয়ে, বর্জ্য নিঃসরণ করে দূষিত করে চলেছে পরিবেশ! অনিবার্য করে চলেছে পৃথিবীর ধ্বংস!

হায় সুকান্ত! তোমার দেখা স্বপ্ন ‘শিশুর বাসযোগ্য পৃথিবী’ গড়া হচ্ছে না!

বাংলাদেশ সময়: ১০২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৩
সম্পাদনা: মীর সানজিদা আলম, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।