ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

‘রঙিন ও টাটকা উপকরণে খাবার লোভনীয় হবে’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪:৩১, জানুয়ারি ৮, ২০১৪
‘রঙিন ও টাটকা উপকরণে খাবার লোভনীয় হবে’

ইডা স্কিভেনেস। একজন ফুড আর্টিস্ট ও ফুড ফটোগ্রাফার।

খাদ্যশিল্প তৈরিতে অসামান্য প্রতিভা, সৃজনশীলতা ও দক্ষতা অল্প সময়েই তাকে জনপ্রিয় করেছে বিশ্বব্যাপী। খাবার দিয়ে সাধারণ শিল্পই শুধু করেন না, বিভিন্ন চিত্রশিল্পীদের চিত্রকর্মও ফুটিয়ে তোলেন টোস্টের ওপর। খাদ্যশিল্প বা ফুড আর্ট নিয়ে নিজের চিন্তা-চেতনা ও স্বপ্নগুলো অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে ফুড আর্টের কলাকৌশল নিয়ে লিখেছেন “Eat Your Art Out: Playful Breakfasts by Idafrosk” নামে একটি বই।

ইনস্টাগ্রামে নিজের তৈরি ফুড আর্টের ছবি নিয়মিত আপলোড করেন ইডা, সেখানে তার রয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজারের বেশি ফলোয়ার। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার উপস্থিতি রয়েছে ইডাফ্রস্ক নামে। নরওয়েজিয়ান এই ফুড আর্টিস্ট বর্তমানে জার্মানির বার্লিনে বসবাস করছেন। ফুড আর্টের বিভিন্ন বিষয়ে তার সঙ্গে ইমেইলের মাধ্যমে কথা বলেছেন বাংলানিউজের নিউজরুম এডিটর মীম নোশিন নাওয়াল খান।
 
বাংলানিউজ: আপনি কতদিন ধরে ফুড আর্ট করছেন?

ইডা: ২০১০ সালের জুন মাস থেকে।

বাংলানিউজ: খাবার দিয়ে শিল্প তৈরি- মানে ফুড আর্ট করার ভাবনা কীভাবে এলো?

ইডা: প্রথমে অনুপ্রেরণা পেয়েছিলাম অনলাইনে অন্যদের করা ফুড আর্ট দেখে। এরপর নিজের মতো করে করতে শুরু করি।

বাংলানিউজ: খাবারের উপর প্রথম কাজটি কী ছিল, মনে আছে? সেটি করার পর কেমন অনুভূতি হয়েছিল?

ইডা:  হ্যাঁ, আমি প্রথমে দুটো টোস্টের উপরে কাজ করেছিলাম। একটাতে করেছিলাম একটা ভাল্লুক, অন্যটায় একটা শিয়াল। খুব স্বাভাবিকভাবেই সেগুলো সেদিন সকালে আমার মুখে হাসি ফুটিয়েছিল।

বাংলানিউজ: আপনি ‘দ্যা আর্ট টোস্ট প্রজেক্ট’ নামে একটি প্রজেক্ট শুরু করেছেন। এটির ব্যাপারে কিছু বলুন।

ইডা: আসলে আর্ট টোস্ট প্রজেক্টের কাজ হচ্ছে টোস্টের উপরে বিভিন্ন শিল্পীদের আঁকা চিত্রকর্মগুলোর আধুনিক এবং খাওয়ার উপযোগী সংস্করণ তৈরি করা। ধারণাটা পেয়েছি ফুড আর্ট কথাটার আভিধানিক অর্থ থেকে। সঙ্গে ছিল খাবারের প্রতি আমার ভালোবাসা। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে খাবার দিয়ে কী কী করা যায়, তা দেখিয়ে দেওয়া, পাশাপাশি একটু শিল্প-শিক্ষা চর্চা।

বাংলানিউজ: এখন পর্যন্ত এ প্রজেক্টের জন্য কতগুলো কাজ করেছেন? কী কী? এর মধ্যে আপনার নিজের সবচেয়ে পছন্দের কোনটি?  

ইডা: এখন পর্যন্ত ২৪টি কাজ করেছি। খাবারে পিকাসো, ভেরমির, ম্যুনখ, তাহলোর মতো শিল্পীদের চিত্রের অনুকরণ তৈরি করেছি। আমার নিজের পছন্দ নরওয়েজিয়ান চিত্রশিল্পী অ্যাডভার্ড ম্যুনখের ‘দ্যা গার্লস অন দ্যা জেটি’র অনুকরণে করা কাজটি।

বাংলানিউজ: কাজ করতে গিয়ে কখনো কী কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন?

ইডা: এই কাজগুলো করতে গিয়ে আমার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ রং ঠিক রাখা, বিশেষত নীল রঙের খাদ্য উপাদান খুঁজে পাওয়াটা সমস্যাই বটে।

বাংলানিউজ: ফুড আর্ট তৈরির উপকরণ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আপনি কী কী বিষয় মাথায় রাখেন?

ইডা: আমি সাধারণত সহজলভ্য উপাদান ব্যবহার করি। আর এটাও খেয়াল রাখি যে খাবারটা তৈরির পর সেখান থেকে যেন পর্যাপ্ত পুষ্টি পাওয়া সম্ভব হয়, যার মধ্যে থাকে শস্য, ফলমূল, শাকসবজি ও প্রোটিন।

বাংলানিউজ: একেকটি কাজ করতে কতক্ষণ সময় লাগে? আপনি কী কোনো নির্দিষ্ট সময়ে এই কাজগুলো করেন?

ইডা: এই আর্ট টোস্ট প্রজেক্টের কাজগুলো করতে বেশি সময় লাগে। ৩০ মিনিটের মতো। আবার কখনো কখনো এক ঘণ্টাও লেগে যায়। কিন্তু আমার সাধারণ ফুড আর্টগুলো করতে ৫-১৫ মিনিট লাগে। আগে সকালে কাজ করতাম। কিন্তু এখন যেহেতু ফুলটাইম ফুড আর্ট করি, তাই দিনের মধ্যভাগে এসব কাজ করা হয়। যখন দিনের আলো সবচেয়ে বেশি থাকে।

বাংলানিউজ: আপনার এসব কাজ নিয়ে কোনো ভবিষ্যত পরিকল্পনা আছে?

ইডা: অন্তত ২০১৪ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত এই কাজগুলো করব। এরপর কী হবে সেটা তখন দেখা যাবে। অ্যাডভার্টাইজিং অ্যাসাইনমেন্ট, কর্মশালা ও বইয়ের প্রমোশনের জন্যও কাজ করছি। পরিকল্পনা আছে এগুলোই চালিয়ে যাওয়ার, তারপর দেখি কী হয়।

বাংলানিউজ: ফুড আর্ট তৈরি বিষয়ক একটি বইও লিখেছেন আপনি- ‘Eat Your Art Out: Playful Breakfasts by Idafrosk .’ পাঠকদের সাড়া কেমন পাচ্ছেন? আরো বই লেখার পরিকল্পনা আছে কী?

ইডা: পাঠকদের  প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক। সবাই বলছেন বইটি তাদের কাছে কার্যকর মনে হয়েছে। আর উপহার হিসেবেও এটি দারুণ। ইতোমধ্যে পাঁচটি দেশে গ্রন্থস্বত্ব দেওয়া হয়েছে, আরও দেশে দেওয়ার কাজ চলছে।

বাংলানিউজ: যারা প্রথম প্রথম ফুড আর্ট শুরু করতে চান, তাদের জন্য কী টিপস দেবেন?

ইডা: সহজ জিনিস দিয়ে কাজ শুরু করা উচিত, যেমন হাসিমুখ; কিংবা প্রাণীর মধ্যে কুকুর বা বিড়াল। রঙিন ও টাটকা উপকরণ ব্যবহার করুন, তাহলে খাবারটা অনেক বেশি লোভনীয় হয়ে উঠবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৪১৪ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৪
সম্পাদনা: আসিফ আজিজ, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।