ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

সীতাকুণ্ডের অনিশ্চিত যাত্রা

এ,এস,এম জিয়াউল হক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:৪৭, জানুয়ারি ৩১, ২০১৪
সীতাকুণ্ডের অনিশ্চিত যাত্রা

সীতাকুণ্ড এবং খৈয়াছড়া যাওয়ার সুযোগ খুঁজছিলাম অনেক দিন ধরেই। হঠাৎ করেই প্ল্যান করে ফেললাম।

সঙ্গে সীতাকুণ্ড ও এর আশপাশটাও ঘুরে দেখবো।

যাওয়ার কথা তিন জনের, কিন্তু একজন শেষ পর্যন্ত যেতে পারলো না। শেষে আমি আর বান্না রাত ১১টার বাসে রওনা দিলাম মিরসরাইয়ের উদ্দেশ্যে।

টানা হরতালের শেষে বৃহস্পতিবার রাতে ছিল অনেক ট্র্যাফিক জ্যাম। আমাদের প্ল্যান ছিল, খুব ভোরে খৈয়াছড়া গিয়ে বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে ওখান থেকে ফিরে সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ পাহাড় দেখতে যাবো। সন্ধ্যার মধ্যে চন্দ্রনাথ থেকে নেমে রাতের বাসে ঢাকায় ফিরে আসবো। কিন্তু মানুষ ভাবে এক, আর হয় আরেক!


ধীরগতিতে বাস এগোচ্ছে। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আমরা মিরসসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজারে নামলাম। সেখানে একটি হোটেলে নাস্তা করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে পৌঁছলাম রেলগেট। ৮টার দিকে আমরা পাহাড়ি ঝিরি ধরে হাঁটা শুরু করলাম।

পাথর, নুড়ি আর বালি বিছানো ঝিরিপথ, গ্রামের ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে এগিয়ে গেছে। এর আগে ছিল কিছু ফসলের ক্ষেত। গ্রামের মানুষ ওখানে বরবটি, শাক, কুমড়াসহ বিভিন্ন তরকারির চাষ করেন। কিছু কাঁচা বরবটি মুখে দিয়ে চাবাতে চাবাতে আমরা হাঁটতে থাকলাম।
   
ঝিরি পথ ঝরনার দিকে এগিয়ে গেছে। খুবই সাদাসিধে রাস্তা, হারিয়ে যাওয়ার ভয় নাই, শুধু ঝিরি ধরে এগিয়ে গেলেই হলো। আর শীতকাল বলে এখন ঝিরিতে পানিও কম। কিন্তু এই একই ঝিরি বর্ষার সময় ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। সেকেন্ডের ভেতরে ফ্ল্যাশফ্ল্যাডে সবকিছু চোখের নিমেষে উপড়ে ফেলতে পারে। আমার পরিচিত কয়েকজন পাহাড়ি ঝিরির এই ভয়ঙ্কর রূপ দেখেছেন। অনেকেই জীবন হাতে নিয়ে ফিরেও এসেছেন।

যাই হোক, কিছুক্ষণ পরেই গ্রামের সীমানা শেষ হয়ে গেল। ঝিরির পানি এখানে কিছুটা বেশি, সঙ্গে বড় বড় ঝরনা চোখে পড়লো। এখানে রাস্তা কিছু কিছু জায়গায় ঘুরপথে গেছে।



আমরা ঝিরিপথ, নাকি রাস্তা, কোনটা অনুসরণ করবো ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না। যেহেতু ঝিরি ধরে গেলে একসময় ঝরনায় পৌঁছাবোই, তাই ঝিরি পথই অনুসরণ করতে থাকলাম।

ঘণ্টাখানেক পর আমরা খৈয়াছড়ার মূল ঝরনায় পৌঁছালাম। এর মধ্যেই আমার চামড়ার স্যান্ডেল বেশ কয়েকবার স্লিপ করায় ওটা খুলে ব্যাগের সঙ্গে ঝুলিয়ে খালি পায়ে হাঁটতে থাকলাম। নিচের নুড়ি বিছানো পানিতে পায়ে ব্যাথা লাগছিলো, কিন্তু কিছু করার নেই।
    


খৈয়াছড়ার মূল ঝরনাটি ১০টি স্টেপ বা বড় বড় খাঁজে বিভক্ত। পাহাড়ের গা থেকে পানি গড়িয়ে শত শত বছর ধরে এই খাঁজগুলো তৈরি হয়েছে। মূল উৎসটি পাহাড়ের অনেক ওপরে। অনেক ভ্রমণপিপাসু প্রথম স্টেপটি দেখেই ফিরে যান। পাহাড়ের ওপরের দুর্গম পথটিতে আর ওঠেন না। কিন্তু এর আসল সৌন্দর্যটাই হলো ওপরে।

পাহাড় বেয়ে ঝরনার পাশ দিয়ে খাড়া রাস্তা উঠে গেছে ওপরের দিকে। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, একদম শেষ পর্যন্ত উঠবো। জংলি লতা আর শক্ত গাছের শিকড়-বাকড় ধরে টারজানের মতো ওপরে উঠতে লাগলাম।

এর ভেতরে বান্না প্রতিটি স্টেপ কড়ায়-গণ্ডায় বুঝে নিয়ে ছবি তুলে যাচ্ছিল। এক একটা স্টেপে উঠছি আর চিন্তা করছি, বর্ষাকালে এর কি ভয়াবহ রূপ হয়। খুব কম মানুষই বর্ষাকালে খৈয়াছড়ার আসল সৌন্দর্য দেখেছেন। অনেকে ঝিরিপথ থেকেই ফিরে এসেছেন, এতোটাই খরস্রোতা আর ভয়াবহ ছিল এর রূপ।

   
খৈয়াছড়ার শেষ স্টেপটি বেশ সুন্দর। নিরিবিলি পরিবেশ আর চারপাশে যতোদূর চোখ যায়, ঘন অরণ্য। ওপর থেকে ঝরনার নিচে সুন্দর একটা ভিউ পাওয়া যাচ্ছিল। এখানে ঝরনার পানিতে আমরা গোসল করলাম। শেষ ধাপটির পরেও ঝরনার ট্রেইল চলে গেছে পাহাড়ের আরও গভীরে। কিছুদূর পরে হাঁটার আর কোনো রাস্তা নেই, জঙ্গল কেটে এগিয়ে যেতে হবে। সময় স্বল্পতার কারণে ইচ্ছা থাকলেও আমরা আর সেই পথ ধরলাম না। নামার সময় দেখলাম, বেশ কয়েকটা জোঁক আমার পা আঁকড়ে ধরেছে, যেন যেতে দিতে চায় না।
   
রেলগেটে ফিরে এসে সময় নষ্ট না করে আমরা মেইন রোডের দিকে হাঁটা শুরু করলাম। ইতোমধ্যে দুপুর ২টার বেশি বাজে। ওখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে আবার বড়তাকিয়া বাজারে। সেখান থেকে আবার অন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশায় একেবারে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের গোড়ায়। এখান থেকে সিঁড়ি বেয়ে আমাদের ওপরে উঠতে হবে।

চন্দ্রনাথ পাহাড়ের ওপরে অবস্থিত মন্দিরটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান তীর্থস্থান। এটি মূলত শিব মন্দির। প্রায় আটশ’ বছর আগে রাজা বিশ্বম্ভর শুর সমুদ্রপথে চন্দ্রনাথে আসার চেষ্টা করেছিলেন। ধারণা করা হয়, বিষ্ণু যখন দেবী সীতার শরীরকে খণ্ডে খণ্ডে বিভক্ত করে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তখন দেবীর ডান হাতটি এই পাহাড়ে পড়েছিল, তখন থেকেই তীর্থযাত্রীদের জন্য এটি একটি পবিত্র স্থান। শত শত বছর ধরে তীর্থযাত্রীরা অনেক কষ্ট এবং পরিশ্রম করে পাহাড় বেয়ে মন্দিরে উঠতেন পূজা করার উদ্দেশ্যে।

পরবর্তীতে তীর্থযাত্রীদের সুবিধার্থে পাহাড় কেটে সিঁড়ি তৈরি করা হয়। প্রতি বছর শিবরাত্রির পূজার সময় এখানে উৎসব হয়। এছাড়া আশ্রমগুলোতে সারা বছর ধরে গীতা পাঠ চলতে থাকে।
    
পাহাড়ে ওঠার দু’টি রাস্তা, একটি সিঁড়িপথ, অন্যটি ঘুরপথে মাটির রাস্তা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আনুমানিক ১৩০০ ফিট ওপরে মন্দিরটির অবস্থান।

আমরা সিঁড়িপথ ছেড়ে মাটির রাস্তা ধরলাম। কিন্তু কিছুদূর গিয়ে এই রাস্তাও সিঁড়ির সঙ্গে মিশেছে। অগত্যা সিঁড়ি ধরেই ওঠা শুরু করলাম। কিছুদূর উঠতেই হাপিয়ে গেলাম। সঙ্গে যোগ হয়েছে ভারি ব্যাগ এবং খৈয়াছড়ার পাহাড় বাওয়ার ক্লান্তি।

বান্না বেশ তাড়াতাড়ি উঠতে থাকলো, কিন্তু আমি পিছিয়ে পড়লাম। একটা লাঠি নিয়ে আস্তে আস্তে সিঁড়ি ধরে এগোতে লাগলাম। একটা জায়গায় সিঁড়ির রাস্তা দু’ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। আমি বাঁয়ের রাস্তা ধরলাম। এটা মূলত ঘুরপথ, অন্য একটি পাহাড় ঘুরে চন্দ্রনাথে ফিরতে হয়।

এ পথ ধরে উঠতে উঠতে এক জায়গায় বসে ব্যাগট্যাগ রেখে পানি খেয়ে নিলাম। আরও কিছুদূর উঠতেই একটি ছোট মন্দিরের দেখা পেলাম। এখানে এক বৃদ্ধ সাধু একা একা বসে গীতা পাঠ করছিলেন। আমার সঙ্গে দেখা হতেই বিভিন্ন খোঁজ-খবর নিলেন, চন্দ্রনাথের রাস্তা দেখিয়ে দিলেন।

কথা প্রসঙ্গে জানলাম, এই ৬০ বছর বয়সেও উনি প্রতিদিন ভোরবেলা মন্দিরে উঠে পূজো দেন, আবার সন্ধ্যাবেলা নেমে যান।

তার কথা শুনে নতুন উদ্যম ফিরে পেলাম। সঙ্গে সঙ্গে হাঁটা শুরু করলাম মন্দিরের উদ্দেশ্যে। এখান থেকে সিঁড়ির সংখ্যা কমে এলো।

পাহাড়ের ওপর থেকে অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছিল। তখন প্রায় সূর্যাস্তের সময়। চন্দ্রনাথে পৌঁছে দেখলাম, বিশাল আকাশের পটভূমিতে লাল আস্তগামী সূর্য। এখান থেকে কর্ণফুলী নদীর অনেকটা অংশ দেখা যায়। মন্দিরে কয়েকজন পূজা দিচ্ছিলেন। এর ভেতরে এক তীর্থযাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হলো, লম্বা লম্বা চুল এবং চেহারা সাধু সন্ন্যাসীদের মতো। কথা প্রসঙ্গে জানলাম, উনি বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্দিরে ঘুরে বেড়ান।

চন্দ্রনাথে এসেছেন এক মাসের মতো। এখন ফিরে যাবেন অন্য কোনো মন্দিরের উদ্দেশ্যে। মন্দিরের পাশেই রয়েছে একটি পুলিশ ফাঁড়ি। এখানে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য সব সময় থাকেন। বিশেষ করে রাতে এখানে ছিনতাই এবং ডাকাতির উপদ্রব হয়।
    
দেখতে দেখতে সূর্য অস্ত গেল। অনেকটা ঝুপ করেই যেনো অন্ধকার নেমে এলো। এবার আমাদের নিচে নামার কথা মনে হলো। পূর্ণিমা রাতে এখানকার সৌন্দর্য এবং রাতে তাঁবু ফেলে থাকার কথা ভাবতে ভাবতে আমরা নিচে নামতে শুরু করলাম। আমাদের সঙ্গে ছিলেন পুরোহিত এবং পূজারিদের একটি দল।

হেডল্যাম্প জ্বেলে সাবধানে সিঁড়ি ধরে আমরা নিচে নামতে লাগলাম। নামার রাস্তাটি ভিন্ন। পাহাড়ের সম্পূর্ণ বিপরীত পাশ দিয়ে সিঁড়ি নেমে গেছে। এই পথের সিঁড়িগুলো অপেক্ষাকৃত মজবুত। একটা সময় আমরা পাহাড়ের পাদদেশে পৌঁছে গেলাম। আমাদের সঙ্গের পুরোহিতের দল তখনও নামতে পারেননি।

আমরা নিচে তাদের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। একটা সময় তাদের নিয়ে পৌঁছে গেলাম রাস্তায়। এখানে তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন রামকৃষ্ণ মহারাজ, তিনি এখানকার মন্দিরের একজন পুরোহিত।

আলোচনায় জানলাম, এখানকার তিনটি পাহাড়ে রয়েছে তার নিজস্ব বেশ কয়েকটি ফলের বাগান। আমাদের তিনি রাতে থেকে ভোরবেলা তার বাগানে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানালেন। ইচ্ছা থাকলেও সময় স্বল্পতার কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি।
  পুরোহিতদের বিদায় দিয়ে পাহাড়ের নিচের একটি মন্দিরে আমরা কিচ্ছুক্ষণ পূজাপাঠ দেখলাম। আমরা দুইজনেই তখন ক্লান্ত। সারাদিনে খাবার বলতে কিছু শুকনো বিস্কুট আর মন্দির থেকে কিছু প্রসাদ। তাই ঠিক করলাম, আগে রাতের বাসে ঢাকা ফেরার টিকিট কেটে রাতের খাওয়াটা সেরে ফেলবো। রাত সাড়ে ১১টার বাসের টিকিট কেটে আমরা একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম।

এর মধ্যেই খবর পেলাম, সারা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো না, বিরোধী দল যেকোনো সময় হরতাল এবং অবরোধের ডাক দিতে পারে।

বিষয়টা তখন ততোটা গুরুত্ব দিলাম না, কিন্তু তখন যদি জানতাম এর পর থেকেই দেশের অবস্থা কতোটা খারাপের দিকে মোড় নেবে তাহলে হয়ত অন্যরকম কিছু চিন্তা করতে হতো।
    
যাই হোক, রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমরা বাসের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। ক্লান্তিতে চোখ ঢুলুঢুলু। ঘণ্টাখানেক পরে খবর পেলাম, চট্টগ্রাম থেকে সব বাস ভাটিয়ারি পর্যন্ত এসে আটকে আছে। বলতে বলতে আমাদের সামনের একটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দিলো দুর্বৃত্তরা। ব্যাস, দাবানলের মতো গণ্ডগোল সবজায়গায় ছড়িয়ে পড়ল। কাউন্টার মালিক যাত্রীদের ভেতরে ঢুকিয়ে গেট লাগিয়ে দিলেন।

ভেতর থেকেই আমরা শুনতে পাচ্ছিলাম, ককটেল এবং গুলির আওয়াজ। এর মধ্যেই খবর এল, একটি বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবে। যাত্রীরা সবাই পড়িমরি করে সেদিকে ছুটলেন। আমরাও দৌঁড় দিলাম। কারণ পরদিন ঢাকা যাওয়াটা খুব জরুরি। কিন্তু সেই বাসটিতেও ভাংচুর শুরু হয়ে গেল।

এক পর্যায়ে শহরের অবস্থা দেখে আমরা আর কাউন্টার থেকে বের হওয়ার সাহস করলাম না। যাত্রীদের টিকিটের টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হলো। টিভিতে সীতাকুণ্ডের অবস্থা দেখে দুশ্চিন্তায় সবাই ফোন করতে লাগলেন যে, আমাদের কি অবস্থা।

ঘণ্টা দুয়েক পর পরিস্থিতি একটু শান্ত হলে আমরা কাউন্টার থেকে বের হলাম, রাতে মাথা গোঁজার আস্তানার উদ্দেশ্যে।

পুরো শহর যেন থমথম করছিল। দোকান-পাট, বাসা-বাড়ির দরজা-জানলা সবা বন্ধ। একটি আবাসিক হোটেল চোখে পড়ল। সাইনবোর্ডে ফোন নম্বর দেখে ফোন করতেই হোটেল ম্যানেজার এসে গেট খুলে দিলেন। জানা গেল, হোটেল মালিকের বেশ কয়েকটি রেন্ট-এ কারের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। হোটেলের অবস্থাও যাচ্ছেতাই। বোঝা যায়, খুব বেশি মানুষ এসে থাকেন না।

কিন্তু আমরা তখন ক্লান্তির শেষ পর্যায়ে। একটি রুম পছন্দ করে বিছানায় শুতেই ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেলাম। এর আগে ঠিক করে নিয়েছিলাম খুব ভোরে আমরা বের হয়ে যাবো। না হলে কতোদিনের জন্য আটকে যাবো তার কোনো ঠিক নেই।
    
ভোর ৬টার সময় ঘুম থেকে উঠেই রাস্তায় বেরিয়ে পড়লাম। কোথাও কোনো বাস নেই, একটা সিএনজিচালিত অটোরিকশা দেখলাম ফেনীর দিকে যাচ্ছে। ওটাতেই উঠে পড়লাম। পথে র‌্যাবের গাড়ি। যানবাহনগুলোকে পাহারা দিয়ে নিয়ে গেল। ফেনী পৌঁছে একটি লোকাল বাস পেলাম, যেটি ঢাকার দিকে যাচ্ছে। ব্যাস, ওতেই উঠে দুপুরের দিকে ঢাকা পৌঁছে গেলাম।

একদিনের এক ট্রিপের সমাপ্তি ঘটলো অনিশ্চয়তায় ভরা দুই দিনে।
    
কিভাবে যাবেন
যেকোনো দিন রাতের বাসে উঠলে খুব ভোরে আপনি নামতে পারবেন মিরসসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজারে। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে রেলগেট, অতঃপর হেঁটে খৈয়াছড়া। ফেরার সময় আবার সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ পাহাড়ের গোঁড়া পর্যন্ত যেতে পারবেন। মন্দির দেখে সীতাকুণ্ড বাসস্ট্যান্ড থেকেই রাতের বাসে ঢাকা রওনা দিতে পারবেন। সময় পেলে আরও ঘুরতে পারেন, মুহুরি প্রজেক্ট-রাবার ডাম্প, সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক, সুপ্তধারা-সহস্রধারা ঝরনা। সব মিলিয়ে দুইজন গেলে জনপ্রতি ১৫০০-২০০০ টাকার মধ্যে হয়ে যাবে।          

ভ্রমণ যাদের নেশা, বেড়ানোর সুযোগ এলে যারা উড়িয়ে দেন সব বাধা, কাজের অংশ হিসেবে যারা ভ্রমণ করেন কিংবা যাদের কালেভদ্রে সুযোগ হয় ভ্রমণের তারা সবাই হতে পারেন ট্রাভেলার্স নোটবুক’র লেখক। আপনার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন বাংলানিউজের পাঠকদের সঙ্গে। আর মাস শেষে ‘ট্রাভেলার্স নোটবুক’র সেরা লেখকের জন্য তো থাকছেই বিশেষ আকর্ষণ..

আর একটা কথা লেখার সঙ্গে ছবি পাঠাতে ভুলবেন না।  


আপনার ভ্রমণ আনন্দ বিশ্বজুড়ে বাঙালির কাছে ছড়িয়ে দিতে আমাদের ই-মেইল করুন- bntravellers.notebook@gmail.com এই ঠিকানায়।


লেখা ও ছবি: এ,এস,এম জিয়াউল হক - venus4erros@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ০০৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।